মালদা, 5 অক্টোবর : লোডশেডিং হলে মোমবাতি অথবা মোবাইল ফোনের আলো একমাত্র ভরসা ৷ সেই আলোতেই চলছে রোগীদের চিকিৎসা ৷ করানো হচ্ছে প্রসবও ৷ এই ছবি হরিশ্চন্দ্রপুর 2 ব্লকের ভালুকাবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ৷ দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ইনভার্টার ৷ ফলে সমস্যায় পড়তে হয় রোগী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ৷ এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জেনারেটর বসানোর দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা ৷ কিন্তু যেখানে বিকল ইনভার্টারই ঠিক হয় না, সেখানে জেনারেটর বসবে কি? প্রশ্ন রয়েছে সবার মনেই ৷ এনিয়ে কোনও উত্তর দিতে পারেননি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও ৷ তবে তিনি বিকল ইনভার্টার দ্রুত সারাই করার আশ্বাস দিয়েছেন ৷
চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয়, তালবাংরুয়া গ্রামের সামশুল হক বলেন, “স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লোডশেডিং হলে আমাদের খুব অসুবিধা হয় ৷ গতরাতে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না ৷ গরমে রোগীর অবস্থা কাহিল হয়ে গিয়েছিল ৷ আমরা মোবাইলের মাধ্যমে ওয়ার্ডে আলোর ব্যবস্থা করেছিলাম ৷ প্রতিদিনই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে লোডশেডিং হয় ৷ আর একবার লোডশেডিং হলে বিদ্যুৎ সংযোগ আসতে অনেক সময় লেগে যায় ৷ প্রতিদিনই রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে ৷ শুধু এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নয়, চাঁচলের মশালদহ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও একই দশা ৷ কোথাও বিকল্প বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা নেই ৷ আমরা চাই, প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেন বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা রাখা হয়৷”
আরেক রোগীর আত্মীয় সনাতন দাস বলেন, “আমরা যখন রোগীকে এখানে নিয়ে আসি তখন প্রায় 40 মিনিট ধরে লোডশেডিং চলছিল ৷ রোগীর সেলাই কাটার প্রয়োজন ছিল ৷ টর্চের আলোয় সেই সেলাই কাটা হয়েছে৷ তার জন্য আমাদেরই বাড়ি থেকে টর্চ আনতে হয়েছে৷” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, “প্রায় দু’বছর ধরে এখানে এই সমস্যা চলছে ৷ কোনও কারণে লোডশেডিং হলে এখানে বিকল্প কোনও ব্যবস্থা নেই ৷ ফলে রোগীদের সঙ্গে আমাদেরও সমস্যা হয়৷ মোমবাতিই তখন ভরসা ৷ এই পরিস্থিতিতে কোনও প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব করানোর সময় যদি লোডশেডিং হয়ে যায় তবে সমস্যা আরও বেড়ে যায় ৷ তখনও মোমবাতি জ্বালিয়েই কাজ করতে হয় ৷ অন্ধকারে সেই কাজ করা বিপজ্জনক ৷ প্রসূতিদেরও সমস্যা হয় ৷ আমরাও চাই, এখানে বিদ্যুতের বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা হোক ৷”
এপ্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক সাগর বসাক জানিয়েছেন, “ভালুকাবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জেনারেটর নেই ৷ সেখানে ইনভার্টারে কিছু সমস্যা রয়েছে ৷ আমরা খুব তাড়াতাড়ি ইনভার্টারটি ঠিক করে দেব ৷ এছাড়া বিদ্যুতের অন্য কোনও সমস্যা থাকলে সেটাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷”