ETV Bharat / state

সুজাপুরের ঘটনায় CID তদন্তে আস্থা নেই বাম-কংগ্রেসের

author img

By

Published : Jan 10, 2020, 11:56 PM IST

সুজাপুরের পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় CID তদন্তে ভরসা নেই বলে জানাল বাম-কংগ্রেস ৷

image
cid তদন্তে না বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের

মালদা, 10 জানুয়ারি : সুজাপুরের পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় CID তদন্ত নিয়ে মন্তব্য করলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম৷ তিনি বলেন " CID কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের উপর আমাদের বিশ্বাস নেই৷ কারণ, তাঁদের এখানে পাওয়া যাবে না ৷ তাছাড়া এই ধরনের তদন্তে রাজ্য সরকার প্রভাবিত করতে পারে ৷ সুজাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তাঁর তদন্ত এমন কিছু বড় ঘটনা নয়৷ আমরা বর্তমান পুলিশ সুপারের অধীনেই তদন্ত দাবি করছি৷ "

সুজাপুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন দেয় বাম-কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল ৷ সেই দলে মোস্তাক আলম ছাড়াও ছিলেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, বাম নেতা বিশ্বনাথ ঘোষ, সর্বানন্দ পাণ্ডে, জামিল ফিরদৌস, সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরি, মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম সহ আরও অনেকে ৷ সেখানে অম্বরবাবু দাবি করেন, তাঁদের হাতে ওই দিনের ঘটনার আরেকটি ভিডিয়ো ফুটেজ এসেছে ৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া পুলিশেরই একটি গাড়ি থেকে পেট্রলের বোতল ও তলোয়ার উদ্ধার হয়েছে ৷ তবে ওই গাড়িটি কার, কীভাবে সেই গাড়িতে পেট্রল কিংবা ডিজ়েলের বোতল এবং তরোয়াল এল, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে হবে ৷ তাঁর আরও দাবি, পুলিশ ডিসিপ্লিনড্‌ বাহিনী ৷ কার নির্দেশে পুলিশকর্মীরা সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করল তার তদন্তও করতে হবে ৷ এরসঙ্গে ওই বেসরকারি গাড়িগুলি ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিপূরণও দাবি করছে প্রতিনিধি দল ৷

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, " সুজাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তার দায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ৷ সেদিন বেলা সাড়ে ১২ নাগাদ বনধের সমর্থনে থাকা বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা কালিয়াচক থানার IC-র কথায় দলীয় পতাকা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় ৷ কিন্তু কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা সেখান থেকে সরতে অস্বীকার করে ৷ আমরা দেখেছি, CAA আইন প্রণয়নের পর ১৪ ডিসেম্বর যেভাবে RSS-এর লোকজন মুর্শিদাবাদে ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল আর তার দায় মুসলমানদের উপর দায় চাপিয়েছিল, একইভাবে সুজাপুরেও সেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে ৷ আজ আমরা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি, এই ঘটনায় যদি কোনও রাজনৈতিক দলের লোকজন জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷ কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে যে মিথ্যে FIR করা হয়েছে তাতে বাম ও কংগ্রেসের অনেকের নাম দেওয়া হয়েছে ৷ যদি বন্‌ধ ডাকা অপরাধ হয়ে থাকে তবে আমরা সেই অপরাধ করেছি৷ কিন্তু বন্‌ধে যদি আমরা কিছু না করে থাকি, তবে কেন FIR আমাদের নাম দেওয়া হল? পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলা হচ্ছে৷ আমরা ভিডিয়ো ফুটেজে গাড়িতে থাকা বোতল আর তলোয়ারও দেখলাম ৷ যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা তার নিন্দা করছি ৷ তবে এই ঘটনায় যাতে কোনও নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে না দেওয়া হয় তার জন্যও আবেদন জানাচ্ছি ৷ আমাদের দাবি, জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এই ঘটনা যথাযথ তদন্ত করা হোক ৷ আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার মুখোমুখি হতেও আমরা তৈরি ৷ কিন্তু আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এই ঘটনায় বামফ্রন্ট কিংবা কংগ্রেসের কোনও নেতা জড়িত নয় ৷ তবে CID কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের উপর আমাদের আস্থা নেই ৷ কারণ, রাজ্যসরকার সেই তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে ৷ পুলিশের যথার্থ পরিকল্পনার অভাবেই সেদিন এই ঘটনা ঘটেছে ৷ আমরা সুজাপুরে শান্তি চাই ৷ কিন্তু সেখানে অশান্তি ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে ৷ যারা এই চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত, আমরা তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি ৷”

উল্লেখ্য, CID সূত্রে খবর, সুজাপুরের ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করবে জেলা পুলিশ ৷ তবে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত করবে CID ৷ আজ সুজাপুরের ঘটনা নিয়ে পুলিশ সুপার ও দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন মালদার দায়িত্বপ্রাপ্ত SS CID (নর্থ) ডেভিড ইভান লেপচা ৷ গতকাল রাতেই তিনি সুজাপুরে ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন৷ তবে রাতে তাঁর এলাকা পরিদর্শন নিয়ে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ৷

গত বুধবার বাম-কংগ্রেসের ডাকা ভারত বন্‌ধের দিন পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সুজাপুর ৷ উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ৷ পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি৷ আগুনে পুড়ে যায় মোট ৯টি গাড়ি৷ সেদিন ভিডিয়ো ফুটেজে ধরা পড়ে, কয়েকজন পুলিশকর্মী সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করছে৷ মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিয়ো ৷ এরপরেই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় CID-র হাতে৷ দায়িত্ব পেয়ে গতকাল বিকেলেই মালদায় চলে আসেন এই জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত SS CID (নর্থ) ডেভিড ইভান লেপচা ৷ প্রথমে জানা গিয়েছিল, আজ সকালে তিনি সুজাপুর নয়মৌজা সংলগ্ন মাঠ এবং ওই এলাকা পরিদর্শনে যাবেন ৷ কিন্তু বেলা ১২টা পর্যন্ত তাঁর দেখা মেলেনি৷ শেষ পর্যন্ত ফোন করা হলে তিনি ETV ভারতকে জানান, গতকাল রাতেই তিনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ ঘটনাস্থলের তদন্ত শেষ৷ তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে CID র কেউ এলাকার কাউকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি৷ CID আধিকারিকরা কখন এলাকায় এসেছিলেন, তাও কারও জানা নেই ৷

এদিকে আজ বেলা ১২.১০ নাগাদ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডেভিড ইভান লেপচা ৷ দীর্ঘ বৈঠকের মধ্যে ডাক পড়ে দুই DSP সহ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের ৷ এরপর পুলিশ সুপারের ঘর থেকে বেরিয়ে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ঘরে ঢুকে পড়েন৷ সেখানে দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তিনি৷ বেলা ৩টে নাগাদ শেষ হয় বৈঠক৷ সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি হননি৷ তবে CID সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজাপুরের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত জেলা পুলিশের উপরেই দেওয়া হয়েছে ৷ CID শুধু পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত করবে ৷ আজ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি ৷ তবে জানা গিয়েছে, সুজাপুর কাণ্ডে গতকাল রাতে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ আজ তাদের জেলা আদালতে তোলা হয়েছে৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ তার মধ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামও রয়েছে৷ তবে অভিযুক্তদের তালিকায় নামের সংখ্যা আরও বাড়বে৷ এদিকে বুধবারের ঘটনার রেশ কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সুজাপুর৷ আজ সেখানে জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক৷

মালদা, 10 জানুয়ারি : সুজাপুরের পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় CID তদন্ত নিয়ে মন্তব্য করলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম৷ তিনি বলেন " CID কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের উপর আমাদের বিশ্বাস নেই৷ কারণ, তাঁদের এখানে পাওয়া যাবে না ৷ তাছাড়া এই ধরনের তদন্তে রাজ্য সরকার প্রভাবিত করতে পারে ৷ সুজাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তাঁর তদন্ত এমন কিছু বড় ঘটনা নয়৷ আমরা বর্তমান পুলিশ সুপারের অধীনেই তদন্ত দাবি করছি৷ "

সুজাপুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন দেয় বাম-কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল ৷ সেই দলে মোস্তাক আলম ছাড়াও ছিলেন CPI(M)-র জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, বাম নেতা বিশ্বনাথ ঘোষ, সর্বানন্দ পাণ্ডে, জামিল ফিরদৌস, সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরি, মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম সহ আরও অনেকে ৷ সেখানে অম্বরবাবু দাবি করেন, তাঁদের হাতে ওই দিনের ঘটনার আরেকটি ভিডিয়ো ফুটেজ এসেছে ৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া পুলিশেরই একটি গাড়ি থেকে পেট্রলের বোতল ও তলোয়ার উদ্ধার হয়েছে ৷ তবে ওই গাড়িটি কার, কীভাবে সেই গাড়িতে পেট্রল কিংবা ডিজ়েলের বোতল এবং তরোয়াল এল, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে হবে ৷ তাঁর আরও দাবি, পুলিশ ডিসিপ্লিনড্‌ বাহিনী ৷ কার নির্দেশে পুলিশকর্মীরা সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করল তার তদন্তও করতে হবে ৷ এরসঙ্গে ওই বেসরকারি গাড়িগুলি ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিপূরণও দাবি করছে প্রতিনিধি দল ৷

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, " সুজাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তার দায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে ৷ সেদিন বেলা সাড়ে ১২ নাগাদ বনধের সমর্থনে থাকা বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা কালিয়াচক থানার IC-র কথায় দলীয় পতাকা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায় ৷ কিন্তু কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা সেখান থেকে সরতে অস্বীকার করে ৷ আমরা দেখেছি, CAA আইন প্রণয়নের পর ১৪ ডিসেম্বর যেভাবে RSS-এর লোকজন মুর্শিদাবাদে ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল আর তার দায় মুসলমানদের উপর দায় চাপিয়েছিল, একইভাবে সুজাপুরেও সেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে ৷ আজ আমরা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি, এই ঘটনায় যদি কোনও রাজনৈতিক দলের লোকজন জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷ কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে যে মিথ্যে FIR করা হয়েছে তাতে বাম ও কংগ্রেসের অনেকের নাম দেওয়া হয়েছে ৷ যদি বন্‌ধ ডাকা অপরাধ হয়ে থাকে তবে আমরা সেই অপরাধ করেছি৷ কিন্তু বন্‌ধে যদি আমরা কিছু না করে থাকি, তবে কেন FIR আমাদের নাম দেওয়া হল? পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলা হচ্ছে৷ আমরা ভিডিয়ো ফুটেজে গাড়িতে থাকা বোতল আর তলোয়ারও দেখলাম ৷ যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা তার নিন্দা করছি ৷ তবে এই ঘটনায় যাতে কোনও নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে না দেওয়া হয় তার জন্যও আবেদন জানাচ্ছি ৷ আমাদের দাবি, জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এই ঘটনা যথাযথ তদন্ত করা হোক ৷ আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার মুখোমুখি হতেও আমরা তৈরি ৷ কিন্তু আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এই ঘটনায় বামফ্রন্ট কিংবা কংগ্রেসের কোনও নেতা জড়িত নয় ৷ তবে CID কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের উপর আমাদের আস্থা নেই ৷ কারণ, রাজ্যসরকার সেই তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে ৷ পুলিশের যথার্থ পরিকল্পনার অভাবেই সেদিন এই ঘটনা ঘটেছে ৷ আমরা সুজাপুরে শান্তি চাই ৷ কিন্তু সেখানে অশান্তি ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে ৷ যারা এই চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত, আমরা তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি ৷”

উল্লেখ্য, CID সূত্রে খবর, সুজাপুরের ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করবে জেলা পুলিশ ৷ তবে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত করবে CID ৷ আজ সুজাপুরের ঘটনা নিয়ে পুলিশ সুপার ও দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন মালদার দায়িত্বপ্রাপ্ত SS CID (নর্থ) ডেভিড ইভান লেপচা ৷ গতকাল রাতেই তিনি সুজাপুরে ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন৷ তবে রাতে তাঁর এলাকা পরিদর্শন নিয়ে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ৷

গত বুধবার বাম-কংগ্রেসের ডাকা ভারত বন্‌ধের দিন পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সুজাপুর ৷ উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকে৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ৷ পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি৷ আগুনে পুড়ে যায় মোট ৯টি গাড়ি৷ সেদিন ভিডিয়ো ফুটেজে ধরা পড়ে, কয়েকজন পুলিশকর্মী সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করছে৷ মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় সেই ভিডিয়ো ৷ এরপরেই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় CID-র হাতে৷ দায়িত্ব পেয়ে গতকাল বিকেলেই মালদায় চলে আসেন এই জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত SS CID (নর্থ) ডেভিড ইভান লেপচা ৷ প্রথমে জানা গিয়েছিল, আজ সকালে তিনি সুজাপুর নয়মৌজা সংলগ্ন মাঠ এবং ওই এলাকা পরিদর্শনে যাবেন ৷ কিন্তু বেলা ১২টা পর্যন্ত তাঁর দেখা মেলেনি৷ শেষ পর্যন্ত ফোন করা হলে তিনি ETV ভারতকে জানান, গতকাল রাতেই তিনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন৷ ঘটনাস্থলের তদন্ত শেষ৷ তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে CID র কেউ এলাকার কাউকে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি৷ CID আধিকারিকরা কখন এলাকায় এসেছিলেন, তাও কারও জানা নেই ৷

এদিকে আজ বেলা ১২.১০ নাগাদ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডেভিড ইভান লেপচা ৷ দীর্ঘ বৈঠকের মধ্যে ডাক পড়ে দুই DSP সহ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিকের ৷ এরপর পুলিশ সুপারের ঘর থেকে বেরিয়ে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ঘরে ঢুকে পড়েন৷ সেখানে দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গেও দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন তিনি৷ বেলা ৩টে নাগাদ শেষ হয় বৈঠক৷ সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজি হননি৷ তবে CID সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজাপুরের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত জেলা পুলিশের উপরেই দেওয়া হয়েছে ৷ CID শুধু পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত করবে ৷ আজ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি ৷ তবে জানা গিয়েছে, সুজাপুর কাণ্ডে গতকাল রাতে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ আজ তাদের জেলা আদালতে তোলা হয়েছে৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ৷ তার মধ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামও রয়েছে৷ তবে অভিযুক্তদের তালিকায় নামের সংখ্যা আরও বাড়বে৷ এদিকে বুধবারের ঘটনার রেশ কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে সুজাপুর৷ আজ সেখানে জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক৷

Intro:মালদা, ১০ জানুয়ারি : “সিআইডি কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের উপর আমাদের বিশ্বাস নেই৷ কারণ, তাদের এখানে পাওয়া যাবে না৷ তাছাড়া এই ধরনের তদন্তে রাজ্য সরকার প্রভাবিত করতে পারে৷ সুজাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত এমন কিছু বড়ো ঘটনা নয়৷ আমরা বর্তমান পুলিশ সুপারের অধীনেই তদন্ত দাবি করছি৷” আজ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে এই মন্তব্য করলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম৷ Body:         সুজাপুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন দেয় বাম-কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল৷ সেই দলে মোস্তাক সাহেব ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, বাম নেতা বিশ্বনাথ ঘোষ, সর্বানন্দ পাণ্ডে, জামিল ফিরদৌস, সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ইশা খান চৌধুরি, মানিকচকের বিধায়ক মোত্তাকিন আলম সহ আরও অনেকে৷ সেখানে অম্বরবাবু দাবি করেন, তাঁদের হাতে সেদিনের ঘটনার আরেকটি ভিডিয়ো ফুটেজ এসেছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া পুলিশেরই একটি গাড়ি থেকে পেট্রোলের বোতল ও তলোয়ার উদ্ধার হয়েছে৷ ওই গাড়িটি কার, কীভাবে সেই গাড়িতে পেট্রোল কিংবা ডিজেলের বোতল এবং তলোয়ার এল, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে হবে৷ তাঁর আরও দাবি, পুলিশ ডিসিপ্লিনড্‌ বাহিনী৷ কার নির্দেশে পুলিশকর্মীরা সাধারণ মানুষের গাড়ি ভাঙচুর করল তাও তদন্ত করে দেখতে হবে৷ তাঁরা ওই বেসরকারি গাড়িগুলি ভাঙচুরের ঘটনায় ক্ষতিপূরণও দাবি করছেন৷ Conclusion:         প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা জেলা কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “সুজাপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তার দায় বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷ সেদিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বনধের সমর্থনে থাকা বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা কালিয়াচক থানার আইসির কথায় দলীয় ঝান্ডা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়৷ কিছু সাধারণ মানুষ সেখান থেকে সরতে অস্বীকার করে৷ আমরা দেখেছি, সিএএ আইন প্রণয়নের পর গত ১৪ ডিসেম্বর যেভাবে আরএসএস-এর লোকজন মুর্শিদাবাদে ট্রেনে আগুন দিচ্ছিল আর মুসলমানদের উপর দায় চাপাচ্ছিল, একইভাবে সুজাপুরেও সেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে৷ আজ আমরা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি, এই ঘটনায় যদি কোনও রাজনৈতিক দলের লোকজন জড়িত থাকে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক৷ কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে যে মিথ্যে এফআইআর করা হয়েছে তাতে বাম ও কংগ্রেসের অনেকের নাম দেওয়া হয়েছে৷ যদি বন্‌ধ ডাকা অপরাধ হয়ে থাকে তবে আমরা সেই অপরাধ করেছি৷ কিন্তু বন্‌ধে যদি আমরা কিছু না করে থাকি, তবে কেন এফআইআরে আমাদের নাম দেওয়া হল? পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে বলা হচ্ছে৷ আমরা ভিডিয়ো ফুটেজে গাড়িতে থাকা বোতল আর তলোয়ারও দেখলাম৷ যে বা যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আমরা তার নিন্দা করছি৷ তবে এই ঘটনায় যাতে কোনও নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে না দেওয়া হয় তার জন্য আবেদন জানাচ্ছি৷ আমাদের দাবি, জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এই ঘটনা যথাযথ তদন্ত করা হোক৷ আমাদের কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তার মুখোমুখি হতে আমরা তৈরি৷ কিন্তু আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, এই ঘটনায় বামফ্রন্ট কিংবা কংগ্রেসের কোনও নেতা জড়িত নয়৷ তবে সিআইডি কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের উপর আমাদের আস্থা নেই৷ কারণ, রাজ্য সরকার সেই তদন্ত প্রভাবিত করতে পারে৷ পুলিশের যথার্থ পরিকল্পনার অভাবেই সেদিন এই ঘটনা ঘটেছে৷ আমরা সুজাপুরে শান্তি চাই৷ কিন্তু সেখানে অশান্তি ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে৷ যারা এই চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত, আমরা তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি৷”
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.