মালদা, 17 জুন : রাস্তার মাঝে ফোয়ারা হওয়ার কথা ৷ তবে কবে হবে, তা জানা নেই ৷ কিন্তু রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূলেরই দুই নেতার মধ্যে ৷ একদিকে চাঁচল 1 নম্বর ব্লকের জেলা পরিষদ সদস্য মহম্মদ সামিউল ইসলাম এবং অন্যদিকে চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ দুজনের মধ্যেই ফোয়ারা তৈরি নিয়ে হয়েছে বিবাদ ৷ এই লড়াই উপভোগ করছেন চাঁচলবাসী ৷ তাঁরা বুঝে ফেলেছেন, যিনিই তৈরি করুন না কেন, চাঁচলে এবার ফোয়ারা হচ্ছেই ৷
সামিউল ইসলামের বক্তব্য, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মসূচি জেলা পরিষদের মাধ্যমে আমরা এই ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছি ৷ এবার আমার কাজ, চাঁচলে একটি বড় ফোয়ারা নির্মাণ ৷ ইতিমধ্যে আমি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে এর জন্য দু’কোটি টাকার প্রকল্প পাঠিয়েছি ৷ খুব তাড়াতাড়ি কাজটা হয়ে যাবে ৷ চাঁচল বাস স্ট্যান্ডে সেই ফোয়ারা তৈরি হবে ৷ বিধায়ক তো বছরে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পান ৷ সেই টাকায় তিনি কাজ করবেন ৷ তিনি তাঁর মতো কাজ করবেন, আমি আমার মতো করব ৷ সবই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কাজ ৷"
তিনি আরও বলেন, "যাঁর প্রকল্প আগে অনুমোদন পাবে, তিনিই কাজ করবেন ৷ প্রয়োজনে চাঁচলে দুটো ফোয়ারা হতে পারে ৷ বিধায়ক অন্য জায়গায় ফোয়ারা বানাতে পারেন ৷ আমি যতটা পারব, এলাকার উন্নয়নের কাজ করে যাব ৷ বিধায়ক যে ফোয়ারা বানাবেন, আমার জানা ছিল না ৷ আমি আগেই সেই প্রস্তাব পাঠিয়েছি ৷ বিধায়ক কী বলেছেন জানি না ৷ আমার কাউকে প্রমাণ দেওয়ার দরকার নেই ৷ চাঁচল বাস স্ট্যান্ডে ফোয়ারা নির্মাণ আমার টার্গেট ৷ আশা করি, চার থেকে পাঁচমাসের মধ্যে আমি সেই ফোয়ারা তৈরি করতে পারব ৷”
এদিকে বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেছেন, “চাঁচলে ফোয়ারা বানানোর জন্য ইতিমধ্যে স্কুলের পাশে থাকা একটি জলাশয়কে আমি চিহ্নিত করেছি ৷ তাঁর জন্য দু’দিন আগেই আমি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদে প্রস্তাব পাঠিয়েছি ৷ তার নথি আমার কাছে আছে ৷ বাজেটের বিষয় জড়িয়ে থাকায় এতে একটু সময় লাগতে পারে ৷ জেলা পরিষদের কে কী বলল, তা আমি বলতে পারব না ৷ মাসখানেক আগে আমি বিধায়ক হয়েছি ৷ আর জেলা পরিষদের বয়স প্রায় তিন বছর ৷ এতদিন কেন কারও ফোয়ারা বানানোর কথা মনে পড়ল না?
এরপর বিধায়ক বলেন, "তবে তিনি ফোয়ারা বানালে চাঁচলবাসীর আরও ভাল হবে ৷ মানুষ দুটি ফোয়ারা পাবেন ৷ যেমন ইংরেজবাজারে আমি দুটি ফোয়ারা করেছি ৷ মানুষ একটু অবসর সময় কাটানোর জন্য এসব জিনিসকে বেছে নেন ৷ তাই কে কী বলেছে আমার জানা নেই ৷ আমি ইতিমধ্যে চাঁচলের সৌন্দর্যায়নের জন্য চারটি প্রস্তাব পাঠিয়েছি ৷”
আরও পড়ুন : জমি বিবাদের জের, মালদায় প্রতিবেশীদের হাতে যুবক খুন
চাঁচলের বাসিন্দা সুবেশ মিত্র কিন্তু নতুন বিধায়কের কথায় আস্থা রাখছেন ৷ চাঁচল মহকুমা আদালতের আইনজীবী সুবেশবাবু বলেন, “চাঁচল একটা দুর্ভাগা দেশ ৷ এখানে কিছুই হয় না ৷ যা ছিল, সেসবও আর নেই ৷ 50 বছর আগে বেসিক ট্রেনিং কলেজ ছিল, 40 বছর আগে বিটি কলেজ ছিল ৷ সব উঠে চলে গিয়েছে ৷ সরকারের তরফে চাঁচল পৌরসভা ঘোষণা করা হল ৷ আমরা আনন্দে নাচ-গান করলাম ৷ কিন্তু পৌরসভা হল না ৷ পুলিশের মহকুমা দফতর হওয়ার কথা ছিল ৷ হল না ৷ নতুন বিধায়ককে আমি অনেকদিন ধরেই চিনি ৷ তাঁর কাজ করার সুনাম রয়েছে ৷ এখানে কোনও ফোয়ারা নেই ৷ আমার মনে হয়, তিনি তা করতে পারবেন ৷ আমরা কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চাই না ৷ আমরা সাধারণ মানুষ শুধু জনমঙ্গলই চাই ৷”