ETV Bharat / state

Child Recover from Ratua : ভুট্টাখেতে উদ্ধার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার ভিড় রতুয়ায় - Child Recover from Ratua

মালদার রতুয়ায় ভুট্টাখেতের পাশ থেকে এক সদ্যোজাত কন্যা সন্তান উদ্ধার হয় (child recover from ratua agriculture field) ৷ আপাতত ওই শিশু চিকিৎসাধীন ৷ কিন্তু তার দায়িত্ব নিতে রীতিমতো কাড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছে এলাকায় ৷ অনেকেই ওই শিশুর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন ৷

child recover from ratua agriculture field
Child Recover from Ratua : ভুট্টাখেতে উদ্ধার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার ভিড় রতুয়ায়
author img

By

Published : Jan 27, 2022, 8:32 PM IST

মালদা, 27 জানুয়ারি : অমানবিকতা আর মানবিকতার যুগলবন্দি দেখল মালদার রতুয়া । মেয়ে হওয়ায় যখন সদ্যোজাত সন্তানকে পরিত্যাগ করলেন মা, ঠিক তখন সেই কন্যাকেই ঘরে নিয়ে যেতে এগিয়ে এলেন একাধিক ব্যক্তি । যদিও ওই সদ্যোজাতকে জেলা চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বালুপুর সংলগ্ন বান্নাপাড়া গ্রামে । আজ দুপুরে ওই গ্রামের একটি ভুট্টাখেতের পাশে একটি সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে পড়ে থাকতে দেখা যায় (child recover from ratua agriculture field) । প্রথমে বাচ্চাটিকে দেখতে পায় এলাকারই দু’টি ছোট ছেলে । দীর্ঘক্ষণ বাচ্চাটিকে একাকী পড়ে থাকতে দেখে তারা এক মোটরবাইক আরোহীকে দাঁড় করায় ।

ওই বাইক আরোহী বাচ্চাটিকে তুলে দেন একটি টোটোতে । সেই টোটোয় চেপে রতুয়া যাচ্ছিলেন তিন যুবতী । তাঁরা বাচ্চাটিকে নিয়ে রওনা দিলে, স্থানীয়দের একজন গোটা বিষয়টি রতুয়া থানায় জানান । বালুপুর স্ট্যান্ড থেকেই পুলিশ বাচ্চাটিকে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে আসে । এরপরেই ওই বাচ্চাটিকে দত্তক নিতে এগিয়ে আসেন সেই মোটরবাইক আরোহী, টোটোয় থাকা যুবতী-সহ আরও কয়েকজন ।

ইংরেজবাজারের মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমি খাতুনের দাবি, “গতকাল আমি রতুয়ার বাহিরকাপ গ্রামে মাসির বাড়ি এসেছিলাম । আজ দুপুরে মাসতুতো বোনকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম । টোটোয় আমরা তিনজন ছিলাম । ফুলবান্ধা আর বালুপুরের মাঝামাঝি জায়গায় একটি লোক আমাদের টোটো দাঁড় করায় । তখনই দেখি, ভুট্টাখেতের ধারে একটি শিশু পড়ে রয়েছে। বাচ্চাটি মেয়ে । তার গায়ে একটা চাদর, ওড়না আর জামা ছিল । আমি নিজের ওড়না দিয়ে শিশুটিকে ঢেকে দিই । কোলে নিয়ে দেখি, বাচ্চাটা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে । জানতে পারি, বাচ্চাটি ওই খেতে আধঘণ্টা ধরে পড়ে রয়েছে ।’’

সুমি খাতুনের দাবি, ‘‘আমি একাধিকবার বলা সত্ত্বেও বাচ্চাটিকে কেউ নিতে চায়নি । তখন আমি বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলি । আমার দিদি বাচ্চাটিকে নিতে চাইলে, আমি সেকথা ভুট্টাখেতের কাছে থাকা সবাইকে জানাই । সেখানকার লোক থানায় ফোন করে । এখন বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি । আমরা এই বাচ্চাটিকে চাই । আমরা ওর সব দায়িত্ব নেব । হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে, বাচ্চাটিকে নাকি আমাদের দেবে না । আমরা যাতে বাচ্চাটা পাই, তার জন্য দয়া করে কোনও ব্যবস্থা করুন ।”

ভুট্টাখেতে উদ্ধার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার ভিড় রতুয়ায়

এদিকে বাহিরকাপ গ্রামের বাসিন্দা, সেই মোটরবাইক আরোহী ওবাইদুর রহমানের বক্তব্য, “আমি বাইক নিয়ে বালুপুরের দিকে যাচ্ছিলাম । রাস্তায় বান্নাপাড়া গ্রামে দু'টো ছোট ছেলে আমাকে দাঁড় করায় । তারা জানায়, খেতের ধারে একটা বাচ্চা পড়ে রয়েছে । তখনই টোটোয় এই মেয়েরা আসছিল । আমি টোটো থামিয়ে তাদের কাছে বাচ্চাটিকে দিই । বলি, বালুপুর গিয়ে বাচ্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হবে । এরই মধ্যে পুলিশে গোটা ঘটনা জানানো হয় । বেলা 12টা নাগাদ বাচ্চাটিকে দেখতে পেয়েছিলাম । যেহেতু আমি প্রথম দেখেছি, তাই বাচ্চাটিকে আমি চাই ।”

যদিও বাচ্চাটিকে কারও হাতে তুলে না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । সেসময় অন ডিউটিতে থাকা চিকিৎসক সাহারাব মণ্ডল বলেন, “আজ সকালেই বাচ্চাটির জন্ম হয়েছে । বালুপুরের কাছে একটি ভুট্টার জমি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে । বাচ্চাটি মেয়ে । সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে । বাচ্চাটির দায়িত্ব নিতে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন । কিন্তু এভাবে কাউকে বাচ্চা দেওয়া যায় না । তার কিছু সরকারি নিয়মকানুন রয়েছে । আমরা চাইল্ড লাইনে খবর দিয়েছি । তাঁরা এলে আমরা বাচ্চাটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেব ।”

আরও পড়ুন : Gambhira Artist: চরম আর্থিক দুরবস্থায় দিন কাটছে মালদার গম্ভীরা শিল্পী মহম্মদ হাফিজের

মালদা, 27 জানুয়ারি : অমানবিকতা আর মানবিকতার যুগলবন্দি দেখল মালদার রতুয়া । মেয়ে হওয়ায় যখন সদ্যোজাত সন্তানকে পরিত্যাগ করলেন মা, ঠিক তখন সেই কন্যাকেই ঘরে নিয়ে যেতে এগিয়ে এলেন একাধিক ব্যক্তি । যদিও ওই সদ্যোজাতকে জেলা চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।

ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বালুপুর সংলগ্ন বান্নাপাড়া গ্রামে । আজ দুপুরে ওই গ্রামের একটি ভুট্টাখেতের পাশে একটি সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে পড়ে থাকতে দেখা যায় (child recover from ratua agriculture field) । প্রথমে বাচ্চাটিকে দেখতে পায় এলাকারই দু’টি ছোট ছেলে । দীর্ঘক্ষণ বাচ্চাটিকে একাকী পড়ে থাকতে দেখে তারা এক মোটরবাইক আরোহীকে দাঁড় করায় ।

ওই বাইক আরোহী বাচ্চাটিকে তুলে দেন একটি টোটোতে । সেই টোটোয় চেপে রতুয়া যাচ্ছিলেন তিন যুবতী । তাঁরা বাচ্চাটিকে নিয়ে রওনা দিলে, স্থানীয়দের একজন গোটা বিষয়টি রতুয়া থানায় জানান । বালুপুর স্ট্যান্ড থেকেই পুলিশ বাচ্চাটিকে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে আসে । এরপরেই ওই বাচ্চাটিকে দত্তক নিতে এগিয়ে আসেন সেই মোটরবাইক আরোহী, টোটোয় থাকা যুবতী-সহ আরও কয়েকজন ।

ইংরেজবাজারের মিলকি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা সুমি খাতুনের দাবি, “গতকাল আমি রতুয়ার বাহিরকাপ গ্রামে মাসির বাড়ি এসেছিলাম । আজ দুপুরে মাসতুতো বোনকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম । টোটোয় আমরা তিনজন ছিলাম । ফুলবান্ধা আর বালুপুরের মাঝামাঝি জায়গায় একটি লোক আমাদের টোটো দাঁড় করায় । তখনই দেখি, ভুট্টাখেতের ধারে একটি শিশু পড়ে রয়েছে। বাচ্চাটি মেয়ে । তার গায়ে একটা চাদর, ওড়না আর জামা ছিল । আমি নিজের ওড়না দিয়ে শিশুটিকে ঢেকে দিই । কোলে নিয়ে দেখি, বাচ্চাটা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে । জানতে পারি, বাচ্চাটি ওই খেতে আধঘণ্টা ধরে পড়ে রয়েছে ।’’

সুমি খাতুনের দাবি, ‘‘আমি একাধিকবার বলা সত্ত্বেও বাচ্চাটিকে কেউ নিতে চায়নি । তখন আমি বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলি । আমার দিদি বাচ্চাটিকে নিতে চাইলে, আমি সেকথা ভুট্টাখেতের কাছে থাকা সবাইকে জানাই । সেখানকার লোক থানায় ফোন করে । এখন বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি । আমরা এই বাচ্চাটিকে চাই । আমরা ওর সব দায়িত্ব নেব । হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে, বাচ্চাটিকে নাকি আমাদের দেবে না । আমরা যাতে বাচ্চাটা পাই, তার জন্য দয়া করে কোনও ব্যবস্থা করুন ।”

ভুট্টাখেতে উদ্ধার সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার ভিড় রতুয়ায়

এদিকে বাহিরকাপ গ্রামের বাসিন্দা, সেই মোটরবাইক আরোহী ওবাইদুর রহমানের বক্তব্য, “আমি বাইক নিয়ে বালুপুরের দিকে যাচ্ছিলাম । রাস্তায় বান্নাপাড়া গ্রামে দু'টো ছোট ছেলে আমাকে দাঁড় করায় । তারা জানায়, খেতের ধারে একটা বাচ্চা পড়ে রয়েছে । তখনই টোটোয় এই মেয়েরা আসছিল । আমি টোটো থামিয়ে তাদের কাছে বাচ্চাটিকে দিই । বলি, বালুপুর গিয়ে বাচ্চার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা হবে । এরই মধ্যে পুলিশে গোটা ঘটনা জানানো হয় । বেলা 12টা নাগাদ বাচ্চাটিকে দেখতে পেয়েছিলাম । যেহেতু আমি প্রথম দেখেছি, তাই বাচ্চাটিকে আমি চাই ।”

যদিও বাচ্চাটিকে কারও হাতে তুলে না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । সেসময় অন ডিউটিতে থাকা চিকিৎসক সাহারাব মণ্ডল বলেন, “আজ সকালেই বাচ্চাটির জন্ম হয়েছে । বালুপুরের কাছে একটি ভুট্টার জমি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে । বাচ্চাটি মেয়ে । সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে । বাচ্চাটির দায়িত্ব নিতে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন । কিন্তু এভাবে কাউকে বাচ্চা দেওয়া যায় না । তার কিছু সরকারি নিয়মকানুন রয়েছে । আমরা চাইল্ড লাইনে খবর দিয়েছি । তাঁরা এলে আমরা বাচ্চাটিকে তাঁদের হাতে তুলে দেব ।”

আরও পড়ুন : Gambhira Artist: চরম আর্থিক দুরবস্থায় দিন কাটছে মালদার গম্ভীরা শিল্পী মহম্মদ হাফিজের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.