মালদা, 8 অক্টোবর: চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল মালদা জেলার রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল। উত্তেজিত শিশুর পরিবারের লোকজন হাসপাতাল ভাঙচুরের পাশাপাশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মারধর করে। শুধু তাই নয়, ডিউটিরত চিকিৎসকের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে মৃত শিশুর পরিজনদের বিরুদ্ধে। যদিও চিকিৎসকদের দাবি, সদ্যোজাত শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাসপাতালে হামলার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রতুয়া থানার পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের ডারা গ্রামের এক বধূ মুন্নি খাতুন প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত মঙ্গলবার রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিনই তিনি স্বাভাবিক প্রসবে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। প্রসবের পর সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। 48 ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর মা ও সন্তানকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। আজ দুপুরে মুন্নিদেবী ও তাঁর পরিবারের লোকজন সদ্যোজাতকে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে বাচ্চাটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরেই মুন্নিদেবীর আত্মীয়স্বজনরা হাসপাতালে তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনা ধরা পড়ে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে।
আরও পড়ুন: ভাউচারের জন্য ফাঁকা অনুসন্ধান কেন্দ্রে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা, প্রাণ গেল সদ্যোজাতের
রতুয়া 1 নম্বর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মাসুদ রহমান বলেন, "মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর সেদিনই মুন্নি খাতুন সুস্থ ও স্বাভাবিক বাচ্চার জন্ম দেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আমরা মা ও সদ্যোজাতকে পর্যবেক্ষণে রাখি। সেদিন বিভিন্ন পরীক্ষা করার পর মা ও বাচ্চাকে ছুটি দেওয়া হয়। আজ দুপুরে সেই শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করতেই মুন্নি খাতুনের লোকজন রীতিমতো তাণ্ডব চালায়।" আক্রান্ত চিকিৎসক অর্ণব রায় বলেন, "আজ দুপুরে আমিই হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলাম। দুপুরে একটি বাচ্চাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু তাকে পরীক্ষা করে আমি মৃত ঘোষণা করি। আমাকে প্রশ্ন করা হয়, কীভাবে বাচ্চাটির মৃত্যু হয়েছে? আমি জানাই, বাচ্চাটি বাড়িতেই মারা গিয়েছে। পরিবারের লোকজনও তা স্বীকার করে। এরপরেই মৃত শিশুর পরিবারের লোকজন আমার কলার চেপে ধরে। বয়স্ক স্বাস্থ্যকর্মীদের মারতে যায়। মেরে আমার ডান পা ভেঙে দেয়।"