মালদা, 12 মে: এর আগে 100 দিন প্রকল্প, সরকারি আবাস যোজনা-সহ বহু প্রকল্পে প্রকৃত উপভোক্তার টাকা অন্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার অভিযোগ শোনা গিয়েছিল ৷ এবার কন্যাশ্রীর টাকা নিয়ে একই অভিযোগ ৷ বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার পুলিশ ও বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছে এক ছাত্রী ৷ ঘটনাটি হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের ৷ ওই ব্লকের হরদমনগর গ্রামের বাসিন্দা রীকিতা চৌধুরী ৷ তার সঙ্গেই ঘটেছে এইরকম ঘটনা ৷
স্থানীয় দৌলতপুর হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন রীকিতা চৌধুরী ৷ নার্সিং-য়ের ট্রেনিং নেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি ৷ বাবা অনাদী চৌধুরী সামান্য কৃষিশ্রমিক ৷ বাড়িঘরও ঠিকমতো করতে পারেননি ৷ দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের রিকিতা সম্প্রতি কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য লিখিত আবেদন করেছিলেন ৷ বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাংকের খিদিরপুর শাখায় তাঁর অ্যাকাউন্ট আছে ৷ প্রশাসনের তরফে তাঁর কাছে মেসেজ আসে ৷ কন্যাশ্রীর 25 হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ অথচ ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাঁর অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা ঢোকেনি ৷
ওই টাকা স্থানীয় তালসুর গ্রামের মাছ বিক্রেতা দেবেন মহালদারের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে ৷ সেকথা জানতে পেরে দেবেনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে রিকিতার পরিবার ৷ কিন্তু তিনি সেই টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন ৷ এরপরেই হরিশ্চন্দ্রপুর থানা ও বিডিওর কাছেও অভিযোগ জানান তিনি ৷
রীকিতার কথায়, "কন্যাশ্রীর টাকা আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা ৷ সেই টাকা একজন ছেলের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে কেন? কন্যাশ্রীর টাকা তো কোনওভাবেই কোনও ছেলের অ্যাকাউন্টে যেতে পারে না ৷ এই ঘটনার তদন্ত এবং টাকা যাতে আমার অ্যাকাউন্টে ঢোকে, সেই দাবিতেই পুলিশ এবং বিডিওর কাছে গিয়েছিলাম ৷ এই টাকা পেতে আমি দৌলতপুর হাইস্কুলে কে-2 ফর্ম জমা দিয়েছিলাম ৷ সমস্ত নথিপত্র সঠিকভাবেই জমা দিয়েছিলাম ৷ কিন্তু কন্যাশ্রীর টাকা আমার অ্যাকাউন্টে না ঢুকে দেবেন মহালদার নামে তালসুরের এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ৷ এক্ষেত্রে স্কুলের ভুল হয়েছে, না কি অন্য কারণ রয়েছে, সেটা নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন ৷"
অনাদিবাবু জানান, কন্যাশ্রীর টাকা পেতে তাঁর মেয়ে স্কুলে আবেদন করেছিল ৷ কিন্তু সেই টাকা তাঁর মেয়ের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি ৷ তাঁরা একাধিকবার ব্যাংকে গেলেও কোনও কাজ হয়নি ৷ ব্যাংক থেকে শুধুমাত্র এই টাকা ট্রানজাকশনের কাগজটা দিয়েছেন ৷ ব্যাংক থেকে জানানো হয়েছে মেয়ের কন্যাশ্রীর টাকা মহালদার নামে কোনও এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ঢুকছে ৷
আরও পড়ুন: বেহাল রাস্তা সংস্কার না-হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি গ্রামবাসীদের
এই প্রসঙ্গেই দৌলতপুর হাইস্কুলের শিক্ষক সুরজিৎ রায় বলেন, "এক্ষেত্রে স্কুলের কোনও ভুল নেই ৷ তবে কোথাও নিশ্চয়ই কিছু ভুল হয়েছে ৷ যে পাওয়ার অধিকারী, তাকেই এই টাকা দেওয়া উচিত ৷" বিষয়টি জানতে পেরে মাথায় হাত হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরির ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ৷