মালদা, 12 জুলাই: সমকামিতা এদেশে এখন আইনসিদ্ধ । দেশের অন্তত তিন শতাংশ মানুষ সমকামী বলে জানা যায় । কিন্তু মানুষ এখনও যে সমকামিতাকে ভালো চোখে দেখে না, তার প্রমাণ মিলেছে পুরাতন মালদায় । রবিবার নারী পাচারকারী সন্দেহে এক যুবতিকে দোকানের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করার অভিযোগ ওঠে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে(Allegation of beating a teenage girl by tying her up in Malda)। খবর পেয়ে ওই যুবতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে মালদা পুলিশ । থানায় ওই যুবতি নিজেই জানান, সমকামিতার মনোভাব থেকেই পুরাতন মালদার সাহাপুর এলাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রেমে পড়া এক কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তিনি ।
হবিবপুরের বাসিন্দা এক কিশোরী মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে । 16 বছরের ওই কিশোরীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় ইংরেজবাজারের এক যুবতির । 18 বছর বয়সী ওই যুবতি মালদা মহিলা কলেজের ছাত্রী । তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে যুবক পরিচয় দিয়ে হবিবপুরের ওই কিশোরীর সঙ্গে আলাপ করেন । এরপর বেশ কিছুদিন প্রেম চলার পর রবিবার তিনি ওই কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন ৷ প্রেমিক যে একজন যুবতি, তা ওই কিশোরী ভাবতেও পারেননি । তাঁকে দেখা মাত্রই চিৎকার শুরু করতেই স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন । ওই যুবতিকে দেখে প্রথমে সবাই যুবক কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ বলে সন্দেহ করেন । এরপরেই নারী পাচারকারী সন্দেহে তাঁকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ।
পরে গোটা ঘটনা জানতে পেরে সবাই হতবাক হয়ে যান । ওই এলাকার বাসিন্দা তথা পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুশান্ত কুণ্ডু বলেন, "দেশে সমকামিতা আইনত সিদ্ধ হওয়ায় এখন অনেক ছেলেমেয়ে এদিকে ঝুঁকছে । তবে গ্রামাঞ্চলের মানুষ এখনও এই প্রথা ভালোভাবে নেয় না । এলাকার লোক ওই যুবতিকে প্রথমে যুবক কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং নারী পাচারকারী বলে সন্দেহ করেন । পরে বিষয়টি সবাই জানতে পারে । তবে এই ঘটনায় নাবালিকার পরিবার পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি । ওই যুবতিকে তাঁর অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ।"
আরও পড়ুন : সমকামী ও রূপান্তরকামীদের পাশে দাঁড়াতে আসানসোলের সুমনের 'দিদিগিরি'
