মালদা, 24 মার্চ: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে কলেজের এক অধ্যাপককে পেটানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৷ আরও অভিযোগ, হামলাকারীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক অধ্যাপক ৷ এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার অফ এগজামিনেশনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নিগৃহীত অধ্যাপক ৷ তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি না-দিলে এই অপমানের জেরে তিনি আত্মঘাতী হবেন (University of Gour Banga) ৷
যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি উপাচার্য ৷ অন্যদিকে, কন্ট্রোলার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি ৷ নিগৃহীত ওই অধ্যাপকের নাম ডঃ সৌগত বাগচি ৷ তিনি সাউথ মালদা কলেজের বাংলা বিষয়ের অধ্যাপক ৷ লিখিত অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার অফ এগজামিনেশনের ঘরে 20-25 জন গুন্ডা, বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধ্যাপক ডঃ সৌগত পালের নেতৃত্বে তাঁকে মারধর করে ৷ গলা টিপে তাঁকে খুনের চেষ্টাও করা হয় ৷ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোনোর পর তাঁকে দেখে নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় হামলাকারীরা (Professor hackled in Malda)৷
এই ঘটনায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন সৌগত বাগচি ৷ এই ঘটনায় অপমানিত বোধ করছেন ওই অধ্যাপক ৷ এমনকি আত্মঘাতী হওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তিনি ৷ এই প্রসঙ্গে সৌগতবাবু জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার সেকশন থেকে তাঁকে তৃতীয় সেমিস্টারের খাতা দেখতে দেওয়া হয়েছিল ৷ গতকাল তাঁকে সেই খাতা জমা দিতে বলা হয়েছিল ৷ কিন্তু কিছু খাতা দেখা বাকি থাকায় গতকাল তিনি তা জমা দিতে পারেননি ৷ শুক্রবার সকাল সাড়ে 10টার মধ্যেই তিনি খাতা জমা দেব বলে জানান ৷ তাঁকে এদিন বেলা সাড়ে 11টার পর আসতে বলা হয় ৷
ওই অধ্যাপক আরও জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে 11টার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যান ৷ কিন্তু সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, যে ব্যক্তি তাঁকে খাতা জমা দিতে বলেছিলন, তিনি নেই ৷ পরে ওই ব্যক্তি এলে তাঁদের মধ্যে কথা কটাকাটি হয় ও তা মিটেও যায় ৷ কিন্তু বিপত্তি বাঁধে এরপরে ৷ ওই অধ্যাপকের কথায়, "এর প্রায় ঘণ্টাদুয়েক বাদে অভীক, রাজু ঘোষ-সহ আরও কয়েকজন আমাকে কন্ট্রোলার সেকশনে ডেকে নিয়ে যায় ৷ সেখানে 25-30 জন ছেলে আমাকে বেদম মারে ৷ আমাকে চেয়ার থেকে উলটে ফেলে দেয় ৷ এখানকারই অধ্যাপক সৌগত পালের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে ৷ সৌগতবাবু নিজে আমাকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টা করেন ৷ এরা সবাই তৃণমূলের লোকজন ৷"
আরও পড়ুন: বীরভূমের সংগঠন দেখবেন তিন নেতা, অনুব্রত কন্যার খেয়াল রাখার নির্দেশ মমতার
ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলারের ঘরের সামনে বেশ কিছুক্ষণ ধরনায় বসেন নিগৃহীত অধ্যাপক ৷ সেখানে বসেই তিনি অভিযোগপত্র লেখেন ৷ এ নিয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপক সৌগত পাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷ ওদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্ট্রোলার বিশ্বরূপ সরকার সাফ জানান, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি ৷ অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তি ছেত্রীর বক্তব্য,“আমার অত সময় নেই ৷ আমি এখন বেরোচ্ছি ৷ তাড়া আছে ৷ আমি কিছু শুনিনি ৷ জানি না ৷ আমার কাছে কোনও রিপোর্ট আসেনি ৷”