ETV Bharat / state

Allegation against Government Officer: সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ, সমস্যায় বিশেষভাবে সক্ষম যুবক - Malda specially abled youth in trouble

মালদার কালিয়াচকে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন এক যুবক ৷ বিশেষভাবে সক্ষম ওই যুবকের দাবি, একাধিকবার অভিযোগ সত্ত্বেও তাঁর সমস্যার সমাধান হচ্ছে না ৷ ঘটনায় তৃণমূলকে তোপ বিরোধীদের (Malda land department) ৷

ETV Bharat
অভিযোগকারী যুবক চরণ সরকার
author img

By

Published : Mar 21, 2023, 5:04 PM IST

Updated : Mar 21, 2023, 5:41 PM IST

জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে

মালদা, 21 মার্চ: অবশেষে আমরা-ওরার বিভেদ মুছেছে ৷ সেই বিভেদ মুছিয়ে দিয়েছেন বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবক চরণ সরকার ৷ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের জালিয়াতিতে তিনি নিজের পৈতৃক ভিটে হারানোর মুখে ৷ এ নিয়ে বহুবার বিএল অ্যান্ড এলআরও, বিডিও, এসডিওকে চিঠি দিয়ে তাঁর জমি তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ওই যুবক ৷ কিন্তু তাতে কাজ হয়নি ৷ জেলাশাসকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানালেও ফল মেলেনি ৷ ভিটেছাড়া হতে হলে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তিনি কোথায় যাবেন, তার কোনও দিশা পাচ্ছেন না চরণ সরকার (Malda specially abled youth in trouble) ৷ ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে একযোগে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা ৷

মালদার কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগলপুর গ্রামের বাসিন্দা চরণ ৷ জন্ম থেকেই একটি পায়ে সমস্যা রয়েছে তাঁর ৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় কাজকর্মও কিছু করতে পারেন না ৷ ওই গ্রামে তাঁর ঠাকুরদা ঘিসু মাঝি সরকারের আট কাঠা বাস্তুজমি ছিল ৷ তাঁর মৃত্যুর পর সেই জমি দুই ছেলে সুরেন ও নরেশ মণ্ডলের মধ্যে ভাগাভাগি হয় ৷ সুরেনবাবুর ছেলেই চরণ ৷ বাবার মৃত্যুর পর মা বিমলা সরকারকে নিয়ে তিনি সেই ভিটেতে বাস করছেন ৷ ওই জমিতে বিমলাদেবীর নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরও তৈরি হয়েছে (allegation against Land Department) ৷

চরণের অভিযোগ, তাঁর এক আত্মীয়া রীতা সরকার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে হাত করে ওই ভিটে তাঁর দুই ছেলে রনি ও দীপের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছেন ৷ বিষয়টি জানতে পেরে তিনি রেকর্ড ঠিক করার জন্য বহুবার ভূমি সংস্কার দফতরে গিয়েছেন ৷ কিন্তু দফতরের দালালরা রেকর্ড ঠিক করে দেওয়ার জন্য 10 হাজার টাকা দাবি করছে ৷ চরণের বক্তব্য, “বিএল অ্যান্ড এলআরও আমার ঠাকুরদার জমি দীপ আর রনির নামে রেকর্ড করে দিয়েছেন ৷ আমি অনেকবার তাঁর দফতরে গিয়েছি ৷ কিন্তু তিনি আমাকে আজকাল করে বারবার ঘুরিয়ে দিয়েছেন ৷ রেকর্ড ঠিক করতে দালালরা অনেক টাকা চাইছে ৷ আমি প্রতিবন্ধী ৷ কাজকর্ম করতে পারি না ৷ অত টাকা কোথায় পাব ! সব জায়গায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি ৷ কাজ হচ্ছে না ৷”

চরণের এই সমস্যায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ৷ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রর মতে, দালাল আর বিএল অ্যান্ড এলআরও যোগসাজশে জেলাজুড়ে এমন ঘটনা ঘটছে ৷ এদের পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে ৷ এই দফতরে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে ৷ অন্যদিকে জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি কালীসাধন রায়ের বক্তব্য, শাসকদলের একটাই নীতি, অবাধে লুট করা ৷ তাদের মদতে ভূমি সংস্কার দফতরে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে ৷ সেটা মুখ্যমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন ৷ হয়তো তিনি এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না বা চাইছেন না ৷ ফলে গরিব মানুষ ভিটেছাড়া হচ্ছেন ৷

আরও পড়ুন: সোনাপাচার রুখতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর

বিজেপির জেলা মুখপাত্র অম্লান ভাদুড়ির মন্তব্য, “তৃণমূলের বদান্যতায় এখন ভূমি সংস্কার দফতর দালালচক্রে পরিণত হয়েছে ৷ টাকার বিনিময়ে একজনের জমি অন্যের নামে রেকর্ড করে দেওয়া হচ্ছে ৷ জমির চরিত্র পালটে দেওয়া হচ্ছে ৷ জমির আসল মালিকদের কোনও কথা শোনা হচ্ছে না ৷ উলটে তাঁদেরই হেনস্থা করা হচ্ছে ৷ এই ঘটনার সঙ্গে প্রশাসনের একাংশও জড়িত ৷”

বিরোধীদের বক্তব্য কার্যত মেনে নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসুও ৷ তিনি জানান, সরকারও জানে বিষয়টি ৷ মুখ্যমন্ত্রীকে বদনাম করার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরের কিছু আধিকারিক এসব কাজ করছেন ৷ কোথাও বর্গা কেটে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও জমির চরিত্র পরিবর্তন, কোথাও বা জমির রেকর্ড পালটে দেওয়া হচ্ছে ৷ তবে চরণ সরকার বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ এর উপযুক্ত তদন্ত হবে ৷ তবে এত কিছু হলেও কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অংশুমান চক্রবর্তীর দাবি, তিনি এসবের কিছুই জানেন না ৷ তাঁর কাছে এ নিয়ে কোনও অভিযোগও করা হয়নি ৷ তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ৷

আরও পড়ুন: 1 বছর ধরে জলমগ্ন স্কুল, শৌচকর্মে বাড়িই ভরসা শিক্ষক-পড়ুয়াদের

জমি নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে

মালদা, 21 মার্চ: অবশেষে আমরা-ওরার বিভেদ মুছেছে ৷ সেই বিভেদ মুছিয়ে দিয়েছেন বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবক চরণ সরকার ৷ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের জালিয়াতিতে তিনি নিজের পৈতৃক ভিটে হারানোর মুখে ৷ এ নিয়ে বহুবার বিএল অ্যান্ড এলআরও, বিডিও, এসডিওকে চিঠি দিয়ে তাঁর জমি তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ওই যুবক ৷ কিন্তু তাতে কাজ হয়নি ৷ জেলাশাসকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানালেও ফল মেলেনি ৷ ভিটেছাড়া হতে হলে বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তিনি কোথায় যাবেন, তার কোনও দিশা পাচ্ছেন না চরণ সরকার (Malda specially abled youth in trouble) ৷ ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে একযোগে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা ৷

মালদার কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগলপুর গ্রামের বাসিন্দা চরণ ৷ জন্ম থেকেই একটি পায়ে সমস্যা রয়েছে তাঁর ৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় কাজকর্মও কিছু করতে পারেন না ৷ ওই গ্রামে তাঁর ঠাকুরদা ঘিসু মাঝি সরকারের আট কাঠা বাস্তুজমি ছিল ৷ তাঁর মৃত্যুর পর সেই জমি দুই ছেলে সুরেন ও নরেশ মণ্ডলের মধ্যে ভাগাভাগি হয় ৷ সুরেনবাবুর ছেলেই চরণ ৷ বাবার মৃত্যুর পর মা বিমলা সরকারকে নিয়ে তিনি সেই ভিটেতে বাস করছেন ৷ ওই জমিতে বিমলাদেবীর নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘরও তৈরি হয়েছে (allegation against Land Department) ৷

চরণের অভিযোগ, তাঁর এক আত্মীয়া রীতা সরকার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককে হাত করে ওই ভিটে তাঁর দুই ছেলে রনি ও দীপের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছেন ৷ বিষয়টি জানতে পেরে তিনি রেকর্ড ঠিক করার জন্য বহুবার ভূমি সংস্কার দফতরে গিয়েছেন ৷ কিন্তু দফতরের দালালরা রেকর্ড ঠিক করে দেওয়ার জন্য 10 হাজার টাকা দাবি করছে ৷ চরণের বক্তব্য, “বিএল অ্যান্ড এলআরও আমার ঠাকুরদার জমি দীপ আর রনির নামে রেকর্ড করে দিয়েছেন ৷ আমি অনেকবার তাঁর দফতরে গিয়েছি ৷ কিন্তু তিনি আমাকে আজকাল করে বারবার ঘুরিয়ে দিয়েছেন ৷ রেকর্ড ঠিক করতে দালালরা অনেক টাকা চাইছে ৷ আমি প্রতিবন্ধী ৷ কাজকর্ম করতে পারি না ৷ অত টাকা কোথায় পাব ! সব জায়গায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি ৷ কাজ হচ্ছে না ৷”

চরণের এই সমস্যায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ৷ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্রর মতে, দালাল আর বিএল অ্যান্ড এলআরও যোগসাজশে জেলাজুড়ে এমন ঘটনা ঘটছে ৷ এদের পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে ৷ এই দফতরে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে ৷ অন্যদিকে জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি কালীসাধন রায়ের বক্তব্য, শাসকদলের একটাই নীতি, অবাধে লুট করা ৷ তাদের মদতে ভূমি সংস্কার দফতরে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে ৷ সেটা মুখ্যমন্ত্রীও স্বীকার করেছেন ৷ হয়তো তিনি এসব নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না বা চাইছেন না ৷ ফলে গরিব মানুষ ভিটেছাড়া হচ্ছেন ৷

আরও পড়ুন: সোনাপাচার রুখতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর

বিজেপির জেলা মুখপাত্র অম্লান ভাদুড়ির মন্তব্য, “তৃণমূলের বদান্যতায় এখন ভূমি সংস্কার দফতর দালালচক্রে পরিণত হয়েছে ৷ টাকার বিনিময়ে একজনের জমি অন্যের নামে রেকর্ড করে দেওয়া হচ্ছে ৷ জমির চরিত্র পালটে দেওয়া হচ্ছে ৷ জমির আসল মালিকদের কোনও কথা শোনা হচ্ছে না ৷ উলটে তাঁদেরই হেনস্থা করা হচ্ছে ৷ এই ঘটনার সঙ্গে প্রশাসনের একাংশও জড়িত ৷”

বিরোধীদের বক্তব্য কার্যত মেনে নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসুও ৷ তিনি জানান, সরকারও জানে বিষয়টি ৷ মুখ্যমন্ত্রীকে বদনাম করার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরের কিছু আধিকারিক এসব কাজ করছেন ৷ কোথাও বর্গা কেটে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও জমির চরিত্র পরিবর্তন, কোথাও বা জমির রেকর্ড পালটে দেওয়া হচ্ছে ৷ তবে চরণ সরকার বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ৷ এর উপযুক্ত তদন্ত হবে ৷ তবে এত কিছু হলেও কালিয়াচক 2 নম্বর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অংশুমান চক্রবর্তীর দাবি, তিনি এসবের কিছুই জানেন না ৷ তাঁর কাছে এ নিয়ে কোনও অভিযোগও করা হয়নি ৷ তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ৷

আরও পড়ুন: 1 বছর ধরে জলমগ্ন স্কুল, শৌচকর্মে বাড়িই ভরসা শিক্ষক-পড়ুয়াদের

Last Updated : Mar 21, 2023, 5:41 PM IST

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.