মালদা, ১২ মার্চ : মানিকচকে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় উপযুক্ত ধারা যোগ করার নির্দেশ দিল আদালত। গতকাল মালদা জেলা আদালতের মুখ্য দায়রা বিচারক রিনজি ডোমা লামা এই নির্দেশ দেন। ১৬ জানুয়ারি এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ ওঠে তিন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। মানিকচক থানায় ওই তিন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে FIR করেছেন মৃতের আম্মা। মহিলার অভিযোগ, স্থানীয় থানা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানালেও কোনও কাজ হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত মালদা জেলা আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
নাবালিকার আম্মা বলেন, "আমার তিন মেয়ে। স্বামী পেশায় শ্রমিক। কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে থাকেন। ১৬ জানুয়ারি দুপুরে আমি আমার অপর দুই মেয়েকে নিয়ে হাটে গেছিলাম। বড় মেয়ে বাড়িতে ছিল। সেসময় তিন প্রতিবেশী আমার বড় মেয়েকে গণধর্ষণ করে। তারপর মেয়ের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খুন করে সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও গণধর্ষণ করে খুনের উল্লেখ রয়েছে। আমি তিন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু, পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা করেনি। তাদের গ্রেপ্তারও করেনি। অভিযুক্তরা ১৮ জানুয়ারি আমার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি সেই ঘটনাতেও পুলিশ অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু তারপরও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমি পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হই। দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও সেখানে থেকে আমি কোনও সাহায্য পাইনি। উলটে অভিযুক্তরা আমার অপর দুই মেয়েকেও একইভাবে খুন করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। ওদের ভয়ে মেয়েদের নিয়ে আমি এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে আছি। নিরুপায় হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আমি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।"
অভিযোগকারীর আইনজীবী প্রতীক ভৌমিক বলেন, "জমি বিবাদের জেরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে অভিযুক্তরা। এক্ষেত্রে মানিকচক থানার পুলিশের ভূমিকা অসন্তোষজনক। অভিযুক্তরা আমার মক্কেল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে। আমার মক্কেলের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এব্যাপারে পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও সাহায্য পায়নি আমরা মক্কেল। অগত্যা তিনি সুবিচার আশায় গতকাল জেলা আদালতের দ্বারস্থ হন।"
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলায় উপযুক্ত ধারা যোগ করার জন্য বিচারক নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে।