ETV Bharat / state

মালদায় ওঝার কেরামতিতে প্রাণ গেল 2 শিশুর - 2 children died in malda

মালদার গাজোলের ঘটনা । বিষফল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল চারজন। পরিবার ওঝার কাছে নিয়ে যায় । সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে।

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Feb 15, 2020, 1:03 PM IST

Updated : Feb 16, 2020, 4:13 AM IST

মালদা, 15 ফেব্রুয়ারি : খেলার সময় ভুল করে বিষফল খেয়ে ফেলেছিল ৷ বাড়ি ফিরে নিজেদের অসুস্থতার কথা জানায় অভিভাবকদের । কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে গ্রামের এক ওঝার দ্বারস্থ হয় পরিবার । চলে ঝাড়ফুঁক৷ শেষপর্যন্ত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয় দু'জনের৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও দু’জনকে মালদা মেডিকেলে ভরতি করা হয়েছে ৷ মালদার গাজোলের কদমতলি মালঞ্চ গ্রামের ঘটনা । গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওঝাকে ৷

গতকাল বিকেলে গ্রামের চারজন সফিকুল ইসলাম (6), মহম্মদ ফিরোজ (8), কোহিনুর খাতুন (7) ও শাবনুর খাতুন (3) গ্রামের মাঠে খেলছিল৷ পাশে একটি বিষফলের গাছ ছিল । খেলার ছলে বিষফল খেয়ে ফেলে ওরা । খানিক বাদেই অসুস্থ বোধ করে । বাড়ি ফিরে সব কথা জানায় অভিভাবকদের৷ ততক্ষণে শরীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়৷ এরপরই অভিভাবকরা তাদের স্থানীয় ওঝা রফিক শেখের কাছে নিয়ে যান ৷ সেখানে ঝাড়ফুঁক চলে৷ কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে৷ মাঝ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় ফিরোজের৷ গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় সবাইকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেলে৷ মৃত্যু হয় মহম্মদ সফিকুলেরও৷ মেডিকেলের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন কোহিনুর ও শাবনুর৷

ভিডিয়োয় শুনুন মৃতের আম্মার বক্তব্য

ফিরোজের আম্মা রাশেদা বিবি বলেন, "গতকাল বিকেল 5টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে ছেলে৷ তারপরই অজ্ঞান হয়ে যায়৷ কী হয়েছিল বুঝতে পারিনি৷ অস্বাভাবিক আচরণ করছিল৷ ওকে সঙ্গে সঙ্গে ঘরে নিয়ে আসি৷ সারা শরীরে তেল মাখাই৷ তখনও ছেলে কাঁপছিল৷ একসময় ছেলের শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়৷ প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যাই । কিন্তু শরীর আরও খারাপ হয়ে যায় । তড়িঘড়ি গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাই৷ সেখান থেকে সদরে ছেলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু ততক্ষণে ছেলে মারা গেছে । ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে আসি৷"

খবর পেয়ে আজ কলকাতা থেকে গাজোল ফেরার পথে মালদা মেডিকেলে আসেন বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস৷ তিনি বলেন, "গতকাল রাতেই ঘটনাটি জেনেছি৷ আজ সকালে মালদা ফিরেই বাড়ি যাওয়ার আগে হাসপাতালে আসি৷ একটি শিশু গতকালই মারা গেছিল৷ সকালে আর একজন মারা যায় ৷ বাকি দু'জন এখন খানিকটা সুস্থ । অভিভাবকরা বলছেন, খেলার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বাচ্চারা বাড়ি ফিরে যায়৷ এর বেশি তাঁরা কিছু বলতে পারছেন না৷ আমি এনিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলব৷ কদমতলিও যাব ৷"

image
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোহিনুর ও শাবনুর

মালদা মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার অমিত দাঁ বলেন, "এখন যে বাচ্চাদুটি ভরতি রয়েছে তারা দুই বোন৷ হঠাৎ করে মাথাব্যথা, পেটব্যথার কথা বলেছিল অভিভাবকদের৷ কিন্তু অভিভাবকরা তাদের হাসপাতালে না এনে ঝাড়ফুঁক করান৷ এতে অনেকটা সময় চলে যায়৷ এখানে আসার পথেই একজন মারা যায়৷ এখানে আরেকটি বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে৷ এখন দুটি বাচ্চা আপাতত সুস্থ রয়েছে৷ তবে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এই ঘটনা । আমরা গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি ৷ এই সবাই একই পরিবারের সদস্য৷ ফলে বাড়িতেও খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে থাকতে পারে৷ অভিভাবকরা কিছুই বলতে চাইছেন না ৷"

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, গাজোলের কদমতলি গ্রামের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক । পুলিশ সব খতিয়ে দেখছে৷"

মালদা, 15 ফেব্রুয়ারি : খেলার সময় ভুল করে বিষফল খেয়ে ফেলেছিল ৷ বাড়ি ফিরে নিজেদের অসুস্থতার কথা জানায় অভিভাবকদের । কিন্তু হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে গ্রামের এক ওঝার দ্বারস্থ হয় পরিবার । চলে ঝাড়ফুঁক৷ শেষপর্যন্ত চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয় দু'জনের৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও দু’জনকে মালদা মেডিকেলে ভরতি করা হয়েছে ৷ মালদার গাজোলের কদমতলি মালঞ্চ গ্রামের ঘটনা । গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওঝাকে ৷

গতকাল বিকেলে গ্রামের চারজন সফিকুল ইসলাম (6), মহম্মদ ফিরোজ (8), কোহিনুর খাতুন (7) ও শাবনুর খাতুন (3) গ্রামের মাঠে খেলছিল৷ পাশে একটি বিষফলের গাছ ছিল । খেলার ছলে বিষফল খেয়ে ফেলে ওরা । খানিক বাদেই অসুস্থ বোধ করে । বাড়ি ফিরে সব কথা জানায় অভিভাবকদের৷ ততক্ষণে শরীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়৷ এরপরই অভিভাবকরা তাদের স্থানীয় ওঝা রফিক শেখের কাছে নিয়ে যান ৷ সেখানে ঝাড়ফুঁক চলে৷ কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সবাইকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে৷ মাঝ রাস্তাতেই মৃত্যু হয় ফিরোজের৷ গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় সবাইকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মালদা মেডিকেলে৷ মৃত্যু হয় মহম্মদ সফিকুলেরও৷ মেডিকেলের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন কোহিনুর ও শাবনুর৷

ভিডিয়োয় শুনুন মৃতের আম্মার বক্তব্য

ফিরোজের আম্মা রাশেদা বিবি বলেন, "গতকাল বিকেল 5টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে ছেলে৷ তারপরই অজ্ঞান হয়ে যায়৷ কী হয়েছিল বুঝতে পারিনি৷ অস্বাভাবিক আচরণ করছিল৷ ওকে সঙ্গে সঙ্গে ঘরে নিয়ে আসি৷ সারা শরীরে তেল মাখাই৷ তখনও ছেলে কাঁপছিল৷ একসময় ছেলের শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়৷ প্রথমে ওঝার কাছে নিয়ে যাই । কিন্তু শরীর আরও খারাপ হয়ে যায় । তড়িঘড়ি গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাই৷ সেখান থেকে সদরে ছেলেকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু ততক্ষণে ছেলে মারা গেছে । ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে আসি৷"

খবর পেয়ে আজ কলকাতা থেকে গাজোল ফেরার পথে মালদা মেডিকেলে আসেন বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস৷ তিনি বলেন, "গতকাল রাতেই ঘটনাটি জেনেছি৷ আজ সকালে মালদা ফিরেই বাড়ি যাওয়ার আগে হাসপাতালে আসি৷ একটি শিশু গতকালই মারা গেছিল৷ সকালে আর একজন মারা যায় ৷ বাকি দু'জন এখন খানিকটা সুস্থ । অভিভাবকরা বলছেন, খেলার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বাচ্চারা বাড়ি ফিরে যায়৷ এর বেশি তাঁরা কিছু বলতে পারছেন না৷ আমি এনিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলব৷ কদমতলিও যাব ৷"

image
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোহিনুর ও শাবনুর

মালদা মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার অমিত দাঁ বলেন, "এখন যে বাচ্চাদুটি ভরতি রয়েছে তারা দুই বোন৷ হঠাৎ করে মাথাব্যথা, পেটব্যথার কথা বলেছিল অভিভাবকদের৷ কিন্তু অভিভাবকরা তাদের হাসপাতালে না এনে ঝাড়ফুঁক করান৷ এতে অনেকটা সময় চলে যায়৷ এখানে আসার পথেই একজন মারা যায়৷ এখানে আরেকটি বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে৷ এখন দুটি বাচ্চা আপাতত সুস্থ রয়েছে৷ তবে প্রাথমিকভাবে আমাদের মনে হচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এই ঘটনা । আমরা গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি ৷ এই সবাই একই পরিবারের সদস্য৷ ফলে বাড়িতেও খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে থাকতে পারে৷ অভিভাবকরা কিছুই বলতে চাইছেন না ৷"

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, গাজোলের কদমতলি গ্রামের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক । পুলিশ সব খতিয়ে দেখছে৷"

Last Updated : Feb 16, 2020, 4:13 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.