কলকাতা, 5 মে: হাতিবাগান কি হাতির জন্য বিখ্যাত ? আচ্ছা, উল্টোডাঙ্গায় কি সবকিছু উল্টো ? ছোটবেলায় এমন অনেক প্রশ্ন ঘুরত আমাদের মনে । অনেক সময় অনেক জায়গার নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সেখানকার ইতিহাস। জড়িয়ে থাকে সেখানকার ঐতিহ্য। আবার অনেক জায়গার নাম সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে । একই ভাবে শহর তিলোত্তমার সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তা ধর্মতলা। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের যাতায়াত এই পথ ধরেই । কিন্তু কতজন জানেন বলুন তো ধর্মতলা নাম কেন হয়েছিল ? কি-ইবা এর ইতিহাস ? শহরবাসীদের ধর্মতলা চত্বর এবং তার ইতিহাস নিয়ে সচেতন করতেই বহু যুগ আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ধর্ম ঠাকুরের পুজো শুরু হয়েছে আবার । শুক্রবার এই পুজোর দায়িত্বে ছিল বঙ্গ কুম্ভ মেলা পরিষদ।
কলকাতার মেয়ো রোড দিয়ে পার্ক স্ট্রিটের দিকে কিছুটা এগোলেই বাদিকেই ধর্ম ঠাকুরের শীলা প্রতিষ্ঠা করে শুরু হয়েছে এই পুজো। বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন থেকে এই পুজো শুরু হয়ে চলবে আগামী 9 মে পর্যন্ত। পুজো উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধুসন্তদের সমাবেশ হতে চলেছে। এই পাঁচ দিন ধরে চলবে হোমযজ্ঞ, ধর্মীয় সভা, বাউল গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠন।
আরও পড়ুন: আজ দেশের প্রথম উপচ্ছায়া চন্দ্রগ্রহণ, কোথায় দেখা যাবে ? কখন ?
এই পুজোর অন্যতম আয়োজক প্রসাদ মহারাজ জানিয়েছেন, ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে যে কয়েকশো বছর আগে এই ধর্মতলা চত্বর একেবারে ঘন জঙ্গলে পূর্ণ ছিল। তখন এই জায়গায় আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে শুরু করে বাউর, গিরি এবং আরও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের বাস ছিল। মূলত তাঁরাই ধর্ম ঠাকুর হিসাবে শীলা পুজো করতেন। তার থেকেই এই জায়গার নাম হয়েছে ধর্মতলা। তিনি আরও বলেন, "এই জায়গাটি শহরের প্রাণকেন্দ্র। এখানে গড়ে উঠেছে অনেক কিছু। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কিন্তু ধর্মতলা যাঁর নামে সেই ঠাকুরের একটিও মন্দির এখানে দেখা যায় না। তাই এই বছর থেকে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আবারও এই স্থানেই এই পুজো শুরু করা হয়েছে। এইবার প্রতি বছর এখানেই এই পুজো করা হবে। এখানে রাজনীতির কোনও রং নেই। জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এখানে আসতে পারেন এবং পুজোতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।"
শুধুমাত্র সনাতন ধর্মের সাধু এবং সন্ন্যাসীরাই এই পুজোর পরিচালনায় রয়েছেন। পাহাড় থেকে নতুন শীলা নিয়ে এসে এই শীলা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই জায়গাতেই বসানো থাকবে শীলা।