কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: এসএসকেএম-এ পার্মানেন্ট ক্যাম্প করার কথা বলা সত্বেও কেন ঘটনার সময় পুলিশ ছিল না, প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata on SSKM Incident)। একইসঙ্গে রাতে হাসপাতালে সিনিয়র ডাক্তার না থাকা নিয়েও বার্তা দিলেন তিনি । বার্তা দিলেন যাঁরা ট্রমা সেন্টার ভাঙচুর করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও । বললেন জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে আছেন তিনি ।
সোমবার দিল্লি যাওয়ার আগে এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভাঙচুর করা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banaerjee)। তিনি বলেন, কোনও ভাবেই এই ধরনের ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয় । সরকার এটাকে এত পয়সা খরচ করে সাজিয়েছিল । আদতে এর ফলে মানুষের সমস্যা বাড়বে । তিনি এও জানান, ইতিমধ্যেই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । আর সরকার জুনিয়র ডাক্তারদের পাশেই আছে । তবে তিনি এও বলেছেন, রাতে সিনিয়ার ডাক্তারেরও উপস্থিত থাকা উচিত হাসপাতালে ।
রবিবার চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ ওঠে রাজ্যের অন্যতম প্রধান সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএম-এ । এর জেরে সরকারি হাসপাতালের এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভাঙচুর চালান রোগীর বাড়ির আত্মীয়রা । এই ঘটনায় দু’জন জুনিয়র চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন বলেও খবর । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাত থেকে থমথমে হাসপাতাল চত্বর । চিকিৎসকদের হেনস্থা করা নিয়ে দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ঘটনাটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি করেছেন তিনি ।
এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও বেশ অসন্তুষ্ট রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এসএসকেএম হাসপাতালে পুলিশের স্থায়ী ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি । মমতা বলেন, "যখন ওরা এল, বডি নিয়ে চলে গেল, তখন তোমরা (পুলিশ) চলে গেলে কেন ? ওখানে তো পার্মানেন্ট ক্যাম্প করে দেওয়া হয়েছে । সুতরাং তোমাদের তরফেও গাফিলতি আছে ।"
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্য আলাদা নিয়ম কেন ? প্রশ্ন মমতার
সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে ভাঙচুর হওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আপনারা সব জানেন না । আমি সকালেই ঘটনাটা হ্যান্ডেল করে দিয়েছি । তখন দু'জন মাত্র জুনিয়র ডাক্তার ছিলেন । কোনও সিনিয়র ডাক্তার ছিলেন না । ঘটনাটি চার-পাঁচদিন আগের একটি অ্যাক্সিডেন্ট কেস । যাই হোক, একজন তরুণ ছেলে মারা গেলে, মানুষের তো দুঃখ হয় । কিন্তু তাঁদের এটা করা উচিত নয় ।"
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, "চিকিৎসকরা তাঁদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন । আমাদের ট্রমা সেন্টার অন্যতম সেরা । চিকিৎসকরা চার-পাঁচ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন । রাতের বেলা মারা গিয়েছে বলে ওরা হঠাৎ ঢুকে গিয়েছে । আমি কত কষ্ট করে, কত টাকা খরচ করে এই ট্রমা সেন্টার করেছি । আপনারা ভাঙচুর করলেন এতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে ।"
এ দিন জুনিয়র ডাক্তারদের হেনস্থা করা নিয়েও মুখ খুলেছেন মমতা । তিনি বলেন, "দুইজন জুনিয়র ডাক্তারকে ওরা হেনস্থা করেছে । কোনও সিনিয়র ডাক্তার তখন ছিলেন না । আমি পিজির সুপারকে ফোন করে চিকিৎসকদের জন্য সরি বলেছি ।" জুনিয়র চিকিৎসকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "জুনিয়র চিকিৎসকদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা আমাদের সরকার দেবে । আমি সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি, আমি মনে করি রাতেও সিনিয়র ডাক্তারদের থাকা উচিত ।"