কলকাতা, 17 জুন: পঞ্চায়েত ভোটের স্ক্রুটিনি পর্ব শেষ হল নির্বিঘ্নে ৷ একদিনের স্ক্রুটিনি পর্বের শেষে এমনটাই দাবি করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ একই সঙ্গে, কমিশন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হয়েছে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের ঝাড়াই-বাছাইয়ের কাজও। তবে বিরোধীরা অবশ্য স্ক্রুটিনি নিয়েও একাধিক অভিযোগ তুলেছে ৷ এমনকী রাজ্যপালের দরবারেও অভিযোগ জানানো হয়েছে ৷ তাতে অবশ্য ভাবিত নয় কমিশন ৷ তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী একেবারেই ঝামেলাবিহীন হয়েছে মনোনয়নের স্ক্রুটিনি ৷
গত পাঁচদিনের মনোনয়ন পর্বে রাজ্য জুড়ে হিংসা, হানাহানি এবং চরম বিশৃঙ্খলার ছবি দেখা গিয়েছে ৷ এরপর স্ক্রুটিনি পর্ব নিয়েও অবশ্য অভিযোগ করেছে বিজেপি-সহ বিরোধীরা ৷ কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দাবি, স্ক্রুটিনি পর্বে কোনও সমস্যা হয়নি ৷ শান্তিপূর্ণভাবেই সবটা মিটেছে বলে দাবি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। একদিকে যখন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে ৷ এমনকী গুলিও চলছে ৷ টানা পাঁচদিনের মনোনয়নেই মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের ৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে মাত্র 72টি বোমা উদ্ধার হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মনোনয়ন পর্ব শেষে স্ক্রুটিনি পর্বও শেষ হয়েছে, তবে এখনও পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে মৃতের সংখ্যা সম্পর্কিত কোনও তথ্য জানান হয়নি কমিশনের পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে কমিশনের দাবি, জেলা পুলিশ-প্রশাসনের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে যে তথ্য পাঠানো হয়েছে সেই অনুসারেই তারা রিপোর্ট তৈরি করেন ৷
নিয়ম অনুযায়ী পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট জেলার রিটার্নিং অফিসারের কাছে যদি কোনও হতাহতের ঘটনার অভিযোগ আসে তবে আগে তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হয়, তারপরই সেই রিপোর্ট আসে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। কমিশন সূত্রে খবর, যে সেই রিপোর্ট আসতে বেশ কিছুটা সময় লাগে। যেহেতু তদন্ত করতে পুলিশের কিছুটা সময় লাগে, তাই কিছু ক্ষেত্রে ভোটের পরও আসে সেই সংখ্যা। অন্যদিকে, ভোট পর্বে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে সেই সন্দেহে প্রায় তিন হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। 34টি অনভিপ্রেত ঘটনার অভিযোগও এসেছে কমিশনের কাছে। সেই সঙ্গে, কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, দু'দিনে আহতের সংখ্যা মোট 104 জন।
আরও পড়ুন: রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়ার ইচ্ছেপ্রকাশ সুব্রত বক্সির, প্রত্যাখ্যান মমতার
যখন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের একাধিক জেলায় লাগামছাড়া সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছে তখন রাজ্য নির্বাচন কমিশন জনাচ্ছে, একদিনের স্ক্রুটিনি পর্বে কোথাও কোনও উত্তেজনার সৃষ্টিই হয়নি। 260 জন জেনারেল অবজার্ভারদের এদিন শিশির মঞ্চে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার 24 ঘন্টার মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ আজ 21 জন স্পেশাল অবজার্ভার নিয়োগ করা হয়েছে জেলাগুলিতে। প্রতিটি জেলায় তিনজন করে স্পেশাল অবজার্ভার দেওয়া হলেও কালিম্পং ও দার্জিলিংয়ের ক্ষেত্রে মোট দু'জন স্পেশাল অফজার্ভারকে নিয়োগ করা হয়েছে। অন্যদিকে মালদায় কালিয়াচকের এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় জেলা শাসকের কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।