কলকাতা, 4 মার্চ : রবিবার জোড়াফুলের পতাকায় মোড়া কলকাতা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেবে তৃণমূল । তার প্রস্তুতিতে আজ শহরের সব জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক করল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব । বৈঠকে শুধু বিধায়করাই নন, ছিলেন কাউন্সিলর-সাংসদরাও । সূত্রের খবর, প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে নিজেদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বৈঠকে । নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রতিটি গলিতে পতাকা লাগানোর । একটি করে সিডি দেওয়া হয়েছে প্রত্যেকেকে । তাতে রয়েছে বাংলার মেয়ে মমতা, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায় থেকে শুরু করে একগুচ্ছ দলীয় স্লোগান ।
বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিধায়করা । শুধু তাঁদের নিয়ে বৈঠক না করে কলকাতা এলাকায় দলের সমস্ত জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক কেন ? রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভোটের আগে দলকে এককাট্টা রাখতেই আজকের বৈঠক । সেইরকমই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের । প্রত্যেকে কে কোন দায়িত্বে থাকবেন, সেই সবকিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে খবর ।
একুশের লড়াইটা তৃণমূলের জন্য অন্যান্য বারের থেকে আলাদা । যদিও রাজ্যের শাসক দল বলছে তারা বারো মাস মানুষের পাশে থাকে । তাই এই নির্বাচনে জিততে তাদের কোনও অসুবিধা হবে না । তবুও এদিন সমস্ত জনপ্রতিনিধিকে সতর্ক করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব । অভিষেক-পার্থ-ফিরহাদরা নির্দেশ দিয়েছেন, ঠিক যেভাবে লোকসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে দলের প্রার্থীদের জিততে সাহায্য করেছিলেন দলের অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা... এবারও যেন তা অব্যাহত থাকে ।
আরও পড়ুন : বাংলায় প্রচারে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, হাথরসের ঘটনাকে সামনে রেখে তাঁকে একযোগে আক্রমণ তৃণমূলের
ভোটের বাকি আর মাত্র 3 সপ্তাহ । 27 তারিখ রাজ্যে প্রথম দফার ভোট । তার আগে রবিবার রাজ্যে আসছেন নরেন্দ্র মোদি । ব্রিগেডের মাঠে সভা করবেন । পরপর দু'টি রবিবাসরীয় ব্রিগেড । বামেদের সংযুক্ত মোর্চার ব্রিগেড ভালোই ভিড় টেনেছিল । বঙ্গ বিজেপিও হুঙ্কার দিয়ে রেখেছে ব্রিগেড ভরানোর । রাজ্যে এখন যা হাওয়া, তাতে অনেকেই মনে করছেন মমতার তখত বেশ নড়বড়ে । বিগত এক বছরে এতটা টালমাটাল কখনও লাগেনি তৃণমূল শিবিরকে । অনেকেই বলছেন, এই পরিস্থিতিতে নিজেদের অস্তিস্ত প্রমাণ করতেই আজকের বৈঠক ।
সূত্রের খবর, মোদির সফরের আগে গোটা শহর ঘাসফুলের পতাকায় মুড়ে ফেলার পরিকল্পনা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব । বাংলার রাজনীতিতে এখনও যে চালিকাশক্তি তৃণমূলের হাতেই রয়েছে, সেটাই যেন বারবার প্রমাণ করতে চাইছে তৃণমূল নেতৃত্ব । আর সেই কারণেই আজ প্রতিটি ওয়ার্ড, প্রতিটি গলি ঘাসফুলের পতাকায় মুড়ে ফেলার বার্তা দেওয়া হয়েছে । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই মনে করছেন, যেভাবে নীলবাড়ির দখলের লড়াইয়ে ময়দানে নেমেছে বিজেপি নেতৃত্ব, তাতে যথেষ্ট চাপে ফেলেছে পার্থ-ফিরহাদদের ।
তবে এবার ব্রিগেডের আগে বিজেপির মনোবলে পাল্টা আঘাত হানতে শহর ঘাসফুলের পতাকা দিয়ে ছেয়ে ফেলতে চাইছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ।