কলকাতা, 9 অগাস্ট : বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর ভরতির সময় পেমেন্ট নিয়ে সমস্যায় পড়েন পরিবারের সদস্যরা । একাধিক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগও উঠেছে । এ-বার সমস্যার সমধানে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দেশিকা জারি করল ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (WBCERC) । এমারজেন্সি রোগীর ক্ষেত্রে অগ্রিম চাইতে পারবে না বেসরকারি হাসপাতাল । এমনকী, অগ্রিম জমা না করলেও প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা শুরু করতে হবে । তবে 12 ঘণ্টার মধ্যে অগ্রিম জমা না করলে রোগীকে ফেরাতে পারবে হাসপাতালগুলি । পাশাপাশি কোনও পরীক্ষার খরচ 2 হাজার টাকার বেশি হলে, রোগীর পরিজনদের জানিয়ে ওই পরীক্ষা করতে হবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশিকায় ।
অগ্রিম বাবদ সর্বাধিক 50 হাজার টাকা অথবা চিকিৎসার সম্ভাব্য খরচের সর্বাধিক 20 শতাংশর মধ্যে যেটি কম হবে, সেই টাকা দিতে হবে । ভরতির সময় এই অগ্রিম জমা দিতে না পারলে ওই রোগীকে প্রভিশনাল অ্যাডমিশন হিসেবে ভরতি নেবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল । সেক্ষেত্রে ভরতির পরবর্তী 12ঘণ্টার মধ্যে ওই অগ্রিম জমা দিতে হবে রোগীর পরিবারকে । 12ঘণ্টার মধ্যেও অগ্রিম টাকা দিতে না পারলে ওই রোগীর প্রভিশনাল অ্যাডমিশন বাতিল করে দেবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতাল । পরবর্তী এক ঘণ্টার মধ্যে ওই রোগীকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলবে পরিজনদের । তবে, এমারজেন্সির রোগীর ক্ষেত্রে এমন করতে পারবে না কোনও বেসরকারি হাসপাতাল, এই কথাই স্পষ্ট জানানো হয়েছে WBCERC-র নির্দেশিকায় ।
7 অগাস্ট রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন অর্থাৎ WBCERC নির্দেশিকা জারি করে । এমারজেন্সি বাদে অন্যান্যক্ষেত্রে রোগীকে বেসরকারি কোনও হাসপাতালে ভরতি করার সময় অগ্রিম টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও কঠিন সমস্যায় পড়তে হয় রোগীর পরিজনদের । বিষয়টি কমিশনের নজরে আসে । রোগীদের ভরতির সময়ে অগ্রিম টাকা বেঁধে দেওয়ার কথা বলেছে কমিশন ।
কমিশনের নির্দেশিকায় জানানো হয়, বেসরকারি কোনও হাসপাতালে চিকিৎসার খরচের আপডেট প্রতিদিন SMS অথবা, ই-মেল কিংবা, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে রোগীর পরিজনদের জানাতে হবে । কোনও ক্ষেত্রে সম্ভাব্য খরচ যদি বেড়ে যায়, তা হলে তার কারণ উল্লেখ করে ওই বেড়ে যাওয়া খরচের বিষয়টি রোগীর পরিজনদের জানাতে হবে । সমস্ত পেমেন্ট ব্যাঙ্কিং ট্রানজাকশনের মাধ্যমে বা অনলাইনে করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে নির্দেশিকায় । তবে কোনও রোগীর পরিজনদের পক্ষে অনলাইনে পেমেন্ট সম্ভব না হলে নগদ টাকা জমা দিতে পারবেন পরিজনরা । নগদে টাকা জমা নেওয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে রশিদ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রোগীর পরিজনদের ।
এমারজেন্সি রোগীদের বিষয়টি এই নির্দেশিকার আওতায় রাখা হয়নি । তবে স্বাস্থ্য কমিশনের নির্দেশিকায় কোথাও COVID-19 বা COVID-19 আক্রান্ত নন এমন রোগীদের উল্লেখ করা হয়নি । যার জেরে চিকিৎসকদের কোনও কোনও অংশ এমনও মনে করছে, এমারজেন্সি নয় এমন ক্ষেত্রে COVID-19 এবং অন্যান্য রোগীদের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারে কোনও বেসরকারি হাসপাতাল ।
2 হাজার টাকার বেশি খরচ হবে এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা রোগীর পরিজনদের জানানোর পরেই করা যাবে । যদি কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বারবার করার প্রয়োজন হয়, তা হলে অবশ্যই তা করানোর কারণ পরিজনদের জানাতে হবে । রোগীর পরিজনদের জানানোর পর সেই তথ্য নথিভুক্ত করতে হবে । কীভাবে তথ্য রাখা হবে , তাও কমিশনের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে ৷ রোগীর পরিজনদের সঙ্গে ফোনে কথোপকথনের রেকর্ড-ও নথিভুক্ত করা যেতে পারে । তবে, এমারজেন্সি ক্ষেত্রে রোগীর পরিজনদের না জানিয়েও পরীক্ষা করা যাবে। সেইক্ষেত্রে রোগীর কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন, সে বিষয়ে চিকিৎসকের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ও বাধ্যতামূলক হিসেবে গণ্য হবে ।