ETV Bharat / state

Fake IAS : ভুয়ো নথি তৈরির খুঁটিনাটি জানতে ইন্টারনেটে পড়াশুনা করত দেবাঞ্জন - fake ias Debanjan Deb

জেরায় দেবাঞ্জন দেব গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, কীভাবে আইপিএস, আইএএস অফিসাররা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নেতা, মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তা রপ্ত করেছিল সে ৷ আইএএস অফিসারদের লাইফস্টাইল হুবহু নকল করে নিজের জীবনে কপি-পেস্ট করেছিল দেবাঞ্জন ।

dabanjan
dabanjan
author img

By

Published : Jun 29, 2021, 6:13 PM IST

কলকাতা, 29 জুন : কথায় আছে মানুষের মগজকে যে বিষয় বারবার শাণ দেওয়া হয়, মস্তিষ্ক সেদিকেই প্রভাবিত হয় । তা সে ভাল হোক কিংবা খারাপ দিক হোক । ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব ভাল দিকটা ছেড়ে খারাপ দিকটাকেই কাছে টেনে নিয়েছিল । মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যাথলজিক্যাল লায়িং থেকে দেবাঞ্জনের এই অপরাধপ্রবণতা ৷

কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প কাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে ৷ ততই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য । নিজেকে প্রচারের আলোয় দেখতে ভালবাসত দেবাঞ্জন । তার এই মানসিকতা যে শুধুমাত্র আইএএস বলে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই ৷ গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ছোট থেকেই দেবাঞ্জন অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করত ৷ মাথার মধ্যে ঘুরত, যে করেই হোক নিজেকে সবার থেকে উঁচুতে তুলে ধরতে হবে । আর এই কাজের জন্য নিজের মগজকে শাণ দেওয়ার কাজ করত ধৃত দেবাঞ্জন ।

জেরায় গোয়েন্দারা জেনেছেন, দিনের পর দিন রাত জেগে ইন্টারনেটে পড়াশোনা করত দেবাঞ্জন । কিন্তু তার পড়াশোনার বিষয় এবং ধরন দেখে চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড় গোয়েন্দাদের । ইন্টারনেটে একাধিক সাইটে গিয়ে ভুয়ো নথিপত্র কীভাবে বানানো যায় তা শিখত দেবাঞ্জন । ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে দেবাঞ্জনের যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল ৷ তাছাড়া কীভাবে রাবার স্ট্যাম্প জাল করা যায়, জাল করতে গেলে কী কী পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়, কীভাবে একটি মিথ্যা কথা উপস্থাপনা করলে তা সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ত বলে পরিণত হবে ৷ এইসব সে ইন্টারনেট থেকেই শিখেছিল ।

আরও পড়ুন : সারদার সুদীপ্ত সেনের পথে হেঁটেই কি প্রতারণার জাল বিস্তার দেবাঞ্জনের ?

নিজের বুদ্ধিকে শাণ দিতে এবং নতুন নতুন জালিয়াতির খোঁজখবর ও পরিকল্পনা পেতে একাধিক ক্রাইম থ্রিলার সিরিজও দেখত দেবাঞ্জন ।

মূলত কম সময়ের মধ্যে সাফল্যের শীর্ষে ওঠার জন্য অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল দেবাঞ্জন ৷ ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক ইন্টারনেট সাইটের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা । জেরায় দেবাঞ্জন দেব গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, কীভাবে আইপিএস, আইএএস অফিসাররা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নেতা, মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তা রপ্ত করেছিল সে ৷ আইএএস অফিসারদের লাইফস্টাইল হুবহু নকল করে নিজের জীবনে কপি-পেস্ট করেছিল দেবাঞ্জন ।

এই বিষয় কেপিসি মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ তীর্থঙ্কর গুহ ঠাকুরতা বলছেন, "সাইক্রিয়াট্রিতে এই বিষয়কে বলা হয় প্যাথলজিক্যাল লাইং । প্যাথলজিক্যাল লায়ার তাঁরাই যাঁরা দিনের পর দিন অনবরত মিথ্যে কথা বলার চেষ্টা করেন । তাঁরা এটাতে সবসময় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই এই কাজ করেন তেমনটা নয় । কিন্তু এই মিথ্যে কথা বলার অভ্যাসটা তাঁরা কিছুতেই ছাড়তে পারেন না ৷"

কেপিসির ওই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এই ধরনের মানুষরা জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মিথ্যের আশ্রয় নেন । বলা চলে মিথ্যের আশ্র‍য় নিতে বাধ্য হন ৷ এরা মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে একাধিক মানুষের কাছে বিভিন্নভাবে তা উপস্থাপন করে । কারণ তাঁরা যে মিথ্যে কথা বলছেন, এই বিষয়টি তাঁদের সবসময় মনে থাকে না । এই ধরনের মানুষকে প্রশ্রয় না দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত । মনোবিজ্ঞানে এর চিকিৎসা রয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Kasba Vaccine Controversy : অনলাইন কোচিং ক্লাসের চেইন খুলে আইএএস তৈরি করতে চেয়েছিল দেবাঞ্জন

ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের একাধিক আত্মীয় এবং তার স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা । তাঁরা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই মিথ্যে কথা বলার প্রবণতায় সিদ্ধহস্ত ছিল দেবাঞ্জন । টলিউড থেকে বলিউডের একাধিক অভিনেতা ও অভিনেত্রী, পরিচালকদের সঙ্গে তার ওঠাবসা ছিল । ফ্রান্সের কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সে নাকি পুরস্কৃতও হয়েছে ৷ এমনটাও জানিয়েছিল বন্ধু মহলে ।

সুন্দর সুন্দর ট্রফি এবং মেমেন্টো সমেত সিনেমার অভিনেতাদের সঙ্গে নিজের ছবি এডিট করে সংরক্ষণ করে রেখেছিল দেবাঞ্জন । মূলত সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করার জন্যই এসব করত সে ৷

কলকাতা, 29 জুন : কথায় আছে মানুষের মগজকে যে বিষয় বারবার শাণ দেওয়া হয়, মস্তিষ্ক সেদিকেই প্রভাবিত হয় । তা সে ভাল হোক কিংবা খারাপ দিক হোক । ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেব ভাল দিকটা ছেড়ে খারাপ দিকটাকেই কাছে টেনে নিয়েছিল । মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্যাথলজিক্যাল লায়িং থেকে দেবাঞ্জনের এই অপরাধপ্রবণতা ৷

কসবায় ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প কাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জন দেবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে ৷ ততই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য । নিজেকে প্রচারের আলোয় দেখতে ভালবাসত দেবাঞ্জন । তার এই মানসিকতা যে শুধুমাত্র আইএএস বলে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই ৷ গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ছোট থেকেই দেবাঞ্জন অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করত ৷ মাথার মধ্যে ঘুরত, যে করেই হোক নিজেকে সবার থেকে উঁচুতে তুলে ধরতে হবে । আর এই কাজের জন্য নিজের মগজকে শাণ দেওয়ার কাজ করত ধৃত দেবাঞ্জন ।

জেরায় গোয়েন্দারা জেনেছেন, দিনের পর দিন রাত জেগে ইন্টারনেটে পড়াশোনা করত দেবাঞ্জন । কিন্তু তার পড়াশোনার বিষয় এবং ধরন দেখে চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড় গোয়েন্দাদের । ইন্টারনেটে একাধিক সাইটে গিয়ে ভুয়ো নথিপত্র কীভাবে বানানো যায় তা শিখত দেবাঞ্জন । ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সঙ্গে দেবাঞ্জনের যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল ৷ তাছাড়া কীভাবে রাবার স্ট্যাম্প জাল করা যায়, জাল করতে গেলে কী কী পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়, কীভাবে একটি মিথ্যা কথা উপস্থাপনা করলে তা সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ত বলে পরিণত হবে ৷ এইসব সে ইন্টারনেট থেকেই শিখেছিল ।

আরও পড়ুন : সারদার সুদীপ্ত সেনের পথে হেঁটেই কি প্রতারণার জাল বিস্তার দেবাঞ্জনের ?

নিজের বুদ্ধিকে শাণ দিতে এবং নতুন নতুন জালিয়াতির খোঁজখবর ও পরিকল্পনা পেতে একাধিক ক্রাইম থ্রিলার সিরিজও দেখত দেবাঞ্জন ।

মূলত কম সময়ের মধ্যে সাফল্যের শীর্ষে ওঠার জন্য অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল দেবাঞ্জন ৷ ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক ইন্টারনেট সাইটের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা । জেরায় দেবাঞ্জন দেব গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, কীভাবে আইপিএস, আইএএস অফিসাররা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে নেতা, মন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন তা রপ্ত করেছিল সে ৷ আইএএস অফিসারদের লাইফস্টাইল হুবহু নকল করে নিজের জীবনে কপি-পেস্ট করেছিল দেবাঞ্জন ।

এই বিষয় কেপিসি মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ তীর্থঙ্কর গুহ ঠাকুরতা বলছেন, "সাইক্রিয়াট্রিতে এই বিষয়কে বলা হয় প্যাথলজিক্যাল লাইং । প্যাথলজিক্যাল লায়ার তাঁরাই যাঁরা দিনের পর দিন অনবরত মিথ্যে কথা বলার চেষ্টা করেন । তাঁরা এটাতে সবসময় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই এই কাজ করেন তেমনটা নয় । কিন্তু এই মিথ্যে কথা বলার অভ্যাসটা তাঁরা কিছুতেই ছাড়তে পারেন না ৷"

কেপিসির ওই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এই ধরনের মানুষরা জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে মিথ্যের আশ্রয় নেন । বলা চলে মিথ্যের আশ্র‍য় নিতে বাধ্য হন ৷ এরা মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে একাধিক মানুষের কাছে বিভিন্নভাবে তা উপস্থাপন করে । কারণ তাঁরা যে মিথ্যে কথা বলছেন, এই বিষয়টি তাঁদের সবসময় মনে থাকে না । এই ধরনের মানুষকে প্রশ্রয় না দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত । মনোবিজ্ঞানে এর চিকিৎসা রয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Kasba Vaccine Controversy : অনলাইন কোচিং ক্লাসের চেইন খুলে আইএএস তৈরি করতে চেয়েছিল দেবাঞ্জন

ইতিমধ্যেই দেবাঞ্জনের একাধিক আত্মীয় এবং তার স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কথা বলেছেন গোয়েন্দারা । তাঁরা জানিয়েছেন, ছোট থেকেই মিথ্যে কথা বলার প্রবণতায় সিদ্ধহস্ত ছিল দেবাঞ্জন । টলিউড থেকে বলিউডের একাধিক অভিনেতা ও অভিনেত্রী, পরিচালকদের সঙ্গে তার ওঠাবসা ছিল । ফ্রান্সের কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সে নাকি পুরস্কৃতও হয়েছে ৷ এমনটাও জানিয়েছিল বন্ধু মহলে ।

সুন্দর সুন্দর ট্রফি এবং মেমেন্টো সমেত সিনেমার অভিনেতাদের সঙ্গে নিজের ছবি এডিট করে সংরক্ষণ করে রেখেছিল দেবাঞ্জন । মূলত সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জন করার জন্যই এসব করত সে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.