কলকাতা, 26 ডিসেম্বর: কয়েকমাস আগেই লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে 35টি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের জন্য বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ ৷ গত নভেম্বর মাসে কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনে সভা করে ভোট প্রচারের রূপরেখাও কিছুটা বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন সাধারণ নেতা-কর্মীদের জন্য ৷ বছর শেষের মুখে এবার তিনি এসেছেন বঙ্গ-বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করতে ৷ সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে ৷
কিন্তু সেই বৈঠকে বসার আগেই পুজো-প্রার্থানার মাধ্যমে জনসংযোগ সারলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৷ মঙ্গলবার সকালে তিনি প্রথমে যান জোড়াসাঁকোর একটি গুরুদোয়ারায় ৷ সেখানে প্রার্থনা করেন ৷ ধর্মগুরুদের সঙ্গে কথা বলেন৷ গুরুদোয়ারার বাইরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য অনেক মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন ৷ হাত নেড়ে সেই সব মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানান ৷ তার পর জেপি নাড্ডাকে সঙ্গে নিয়ে চলে যান একেবারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায় ৷
বেলা 12টা নাগাদ তিনি কালীঘাট মন্দিরে পুজো দিতে যান ৷ মিনিট দশেক তিনি সেখানে ছিলেন ৷ তার পর সেখান থেকে বেরিয়ে সোজা রওনা দেন বঙ্গ-বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকে যোগ দিতে ৷ তাঁর সঙ্গে জেপি নাড্ডা ছাড়াও ছিলেন রাজ্য় সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির বেশ কয়েকজন সাংসদ, বিধায়ক ও অন্য নেতারা ৷ বাইরে ছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যরা ৷ তাঁরা মন্দিরে প্রবেশের সময় ও বেরিয়ে যাওয়ার সময় অমিত শাহকে অভিবাদন জানান ৷
উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে বীরভূমের সিউড়ির একটি জনসভা থেকে অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি 35টি আসনে জিতবে ৷ তার পর গত নভেম্বরে কলকাতায় জনসভা করে তিনি সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিলেন ৷ তাই মনে করা হয়েছিল যে এ দিন কালীঘাট মন্দির থেকে বেরিয়ে কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক বার্তা দেবেন অমিত শাহ ৷
কিন্তু এ দিন তা হয়নি ৷ বরং হাত নেড়ে জনসংযোগ করেই গাড়িতে উঠে তিনি চলে যান সাংগঠনিক বৈঠকের জন্য ৷ তাৎপর্যপূর্ণভাবে এ দিন অমিত শাহের প্রথম গন্তব্য যেখানে ছিল, তা কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ছে ৷ আর কালীঘাট মন্দির পড়ছে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৷ 2019 সালে বাংলা থেকে 18টি আসন জিতলেও কলকাতার দুই কেন্দ্রে সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি বিজেপি ৷ উপরোন্তু অমিত শাহের ব়্যালি চলাকালীন বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ছড়িয়েছিল ৷
প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এই দুই কেন্দ্রে এবার বিশেষ নজর দিয়েছে বিজেপি ? সেই কারণেই দুই লোকসভা কেন্দ্রে দলের জাতীয় সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে পুজো ও প্রার্থনার মাধ্যমে জনসংযোগ সারলেন বিজেপির এই হেভিওয়েট নেতা ?
আরও পড়ুন: