ETV Bharat / state

সুকান্তর পদবি বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন শাহ, মাত্র 23 মিনিটেই শেষ অমিত-ভাষণ

BJPs Protest Rally in Kolkata: প্রতি বছর 21 জুলাই যেখানে প্রচুর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের ভিড় হয়, সেই জায়গায় বুধবার সভা করল বিজেপি ৷ ভিড়ের নিরিখে তৃণমূলের কাছাকাছি কি পৌঁছাতে পারল গেরুয়া শিবির ? সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন যে সভায় গেরুয়া সুনামি হবে ? সেটা কি হল ? নাকি লোক কম দেখেই মাত্র 23 মিনিট ভাষণ দিয়েই মঞ্চ ছাড়লেন সভার মূলবক্তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ?

PC - BJP X
ছবি সৌজন্যে - বিজেপির এক্স হ্যান্ডেল
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 29, 2023, 7:26 PM IST

Updated : Nov 29, 2023, 11:05 PM IST

সুকান্তর পদবি বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন শাহ, মাত্র 23 মিনিটেই শেষ অমিত-ভাষণ

কলকাতা, 29 নভেম্বর: ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী বুধবার দেড় ঘণ্টা ধর্মতলায় বিজেপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চে থাকার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ৷ কিন্তু তিনি উপস্থিত ছিলেন প্রায় 45 মিনিটের মতো ৷ ভাষণও দিয়েছেন মাত্র 23 মিনিট ৷ তাও আবার শুরুতে জনতার গর্জন শুনতে পেয়ে না কিছুটা হতাশাও ব্যক্ত করেন তিনি ৷ ভাষণের শুরুতে রাজ্য সভাপতির নাম বলতে গিয়ে হোঁচটও খান ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিজেপির মেগা ইভেন্ট ফ্লপ হয়ে গেল ? আর সেটা টের পেয়েই ভাষণের সময় কাটছাঁট করলেন গেরুয়া শিবিরের এই হেভিওয়েট নেতা ?

বুধবার কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি ৷ দলের নেতা, বিধায়ক, সাংসদ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন ৷ তবে মূল আকর্ষণ ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষণকে ঘিরে ৷ দুপুর 2টোর কিছু আগে শাহ যখন সভামঞ্চে পৌঁছান, তখন ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ ৷ অমিত শাহ আসায় তাঁর ভাষণ স্বাভাবিকভাবেই মাঝপথে থেমে যায় ৷

অমিত শাহ মঞ্চে থাকাকালীন ভাষণ দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বঙ্গ বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ শুভেন্দু অধিকারী ধরা গলায় সামান্য কিছুক্ষণ কথা বলেন ৷ আর সুকান্ত স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে ভাষণ দিয়ে পোডিয়াম ছেড়ে দেন অমিত শাহের জন্য ৷ আর ভাষণের সময় সেই সুকান্তর পদবিই ভুল বলেন শাহ ৷ মজুমদারের বদলে মজমুদার বলেন ৷ যদিও শুভেন্দু অধিকারীর নাম ও পদবি বলার ক্ষেত্রে কোনও ভুল করেননি শাহ ৷ নিন্দুকেরা বলছে, যে বিষয় বা নাম বারবার বলা হয়, তা রপ্ত করা অনেক বেশি সহজ হয় ৷ সেই কারণেই কি সুকান্তর নাম বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন শাহ ?

আর একই হোঁচট কি বঙ্গ বিজেপিও খেল সভা আয়োজন করতে গিয়ে৷ কারণ, মঙ্গলবার সভাস্থলের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন যে অমিত শাহের সভার জন্য কলকাতায় গেরুয়া সুনামি হবে ৷ অথচ বক্তৃতার শুরুতে জনতার গর্জন সেভাবে শুনতেই পেলেন না অমিত শাহ ৷

বক্তৃতা করতে উঠে তিনি ভারত মায়ের নামে জয়ধ্বনি দেওয়ার আহ্বান জানান ৷ শুরুতে সেভাবে বিজেপির নেতা-কর্মীদের চিৎকার তাঁর কানে পৌঁছায়নি ৷ সেই কারণে শাহকে বলতে শোনা যায়, ‘‘...বাংলার বাসিন্দাদের আওয়াজের আজ কী হল ? 24-এ মোদিজিকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে কি হবে না ! চিৎকার করে বলুন, করতে হবে কি হবে না ! 26-এ বাংলায় বিজেপির সরকার গড়তে হবে কি হবে না ! তাহলে এমন আওয়াজ চলবে না ৷’’

প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল ? তাহলে কি গেরুয়া সুনামি হলই না ? সেই কারণেই কি কর্মীদের গলার স্বর ঠিকভাবে শুনতে পেলেন না অমিত শাহ ? আর সেই কারণেই কি মাত্র 23 মিনিট ভাষণ দিয়েই নেমে গেলেন অমিত শাহ ? যদিও এ দিন মঞ্চ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে যে পুলিশ বিভিন্ন রাস্তায় মিছিল ঘুরিয়ে দিচ্ছে, যাতে সভাস্থলে সঠিক সময় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা পৌঁছাতে না পারেন ৷

পুলিশের একটি সূত্র বলছে যে এ দিন প্রায় 70 হাজার লোক হয়েছিল সভায় ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুলিশ সাধারণত বিরোধী দলের সভায় জনসমাগমকে কমিয়ে দেখান ৷ সেক্ষেত্রে ধরা যায় যে আরও হাজার দশেক লোক বেশি ছিল ৷ কিন্তু এই পরিমাণ লোককে জনসুনামি হিসেবে ধরা সম্ভব !

তাছাড়া রাজনৈতিক মহল বলছে যে এ দিনের শাহের ভাষণের সেই ধার ছিল না ৷ সামনেই লোকসভা নির্বাচন ৷ সেই প্রেক্ষিতে তিনি যতটা আক্রমণাত্মক হবেন বলে মনে করা হয়েছিল, ততটা আক্রমণাত্মক তাঁকে দেখায়নি ৷ তাহলে কি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বঙ্গের পরিস্থিতির দেওয়াল লিখন এ দিন সভামঞ্চের সামনের ছবিটা দেখেই পড়ে ফেললেন গেরুয়া রাজনীতির চাণক্য !

আরও পড়ুন:

  1. চব্বিশে এত আসনে জেতান যাতে মোদি বলতে পারেন বাংলার জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছি, ভোটারদের বার্তা অমিত শাহের
  2. 'রিগিং করে ভোটে জিতেছেন', কেন্দ্রীয় প্রকল্পের হিসাব দিয়ে মমতাকে আক্রমণ অমিতের
  3. সিএএ লাগু হবেই, কেউ আটকাতে পারবে না: অমিত শাহ

সুকান্তর পদবি বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন শাহ, মাত্র 23 মিনিটেই শেষ অমিত-ভাষণ

কলকাতা, 29 নভেম্বর: ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী বুধবার দেড় ঘণ্টা ধর্মতলায় বিজেপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চে থাকার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ৷ কিন্তু তিনি উপস্থিত ছিলেন প্রায় 45 মিনিটের মতো ৷ ভাষণও দিয়েছেন মাত্র 23 মিনিট ৷ তাও আবার শুরুতে জনতার গর্জন শুনতে পেয়ে না কিছুটা হতাশাও ব্যক্ত করেন তিনি ৷ ভাষণের শুরুতে রাজ্য সভাপতির নাম বলতে গিয়ে হোঁচটও খান ৷ স্বাভাবিকভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিজেপির মেগা ইভেন্ট ফ্লপ হয়ে গেল ? আর সেটা টের পেয়েই ভাষণের সময় কাটছাঁট করলেন গেরুয়া শিবিরের এই হেভিওয়েট নেতা ?

বুধবার কলকাতার ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছিল বিজেপি ৷ দলের নেতা, বিধায়ক, সাংসদ, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন ৷ তবে মূল আকর্ষণ ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাষণকে ঘিরে ৷ দুপুর 2টোর কিছু আগে শাহ যখন সভামঞ্চে পৌঁছান, তখন ভাষণ দিচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ ৷ অমিত শাহ আসায় তাঁর ভাষণ স্বাভাবিকভাবেই মাঝপথে থেমে যায় ৷

অমিত শাহ মঞ্চে থাকাকালীন ভাষণ দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বঙ্গ বিজেপির বর্তমান সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ শুভেন্দু অধিকারী ধরা গলায় সামান্য কিছুক্ষণ কথা বলেন ৷ আর সুকান্ত স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে ভাষণ দিয়ে পোডিয়াম ছেড়ে দেন অমিত শাহের জন্য ৷ আর ভাষণের সময় সেই সুকান্তর পদবিই ভুল বলেন শাহ ৷ মজুমদারের বদলে মজমুদার বলেন ৷ যদিও শুভেন্দু অধিকারীর নাম ও পদবি বলার ক্ষেত্রে কোনও ভুল করেননি শাহ ৷ নিন্দুকেরা বলছে, যে বিষয় বা নাম বারবার বলা হয়, তা রপ্ত করা অনেক বেশি সহজ হয় ৷ সেই কারণেই কি সুকান্তর নাম বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন শাহ ?

আর একই হোঁচট কি বঙ্গ বিজেপিও খেল সভা আয়োজন করতে গিয়ে৷ কারণ, মঙ্গলবার সভাস্থলের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছিলেন যে অমিত শাহের সভার জন্য কলকাতায় গেরুয়া সুনামি হবে ৷ অথচ বক্তৃতার শুরুতে জনতার গর্জন সেভাবে শুনতেই পেলেন না অমিত শাহ ৷

বক্তৃতা করতে উঠে তিনি ভারত মায়ের নামে জয়ধ্বনি দেওয়ার আহ্বান জানান ৷ শুরুতে সেভাবে বিজেপির নেতা-কর্মীদের চিৎকার তাঁর কানে পৌঁছায়নি ৷ সেই কারণে শাহকে বলতে শোনা যায়, ‘‘...বাংলার বাসিন্দাদের আওয়াজের আজ কী হল ? 24-এ মোদিজিকে প্রধানমন্ত্রী করতে হবে কি হবে না ! চিৎকার করে বলুন, করতে হবে কি হবে না ! 26-এ বাংলায় বিজেপির সরকার গড়তে হবে কি হবে না ! তাহলে এমন আওয়াজ চলবে না ৷’’

প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হল ? তাহলে কি গেরুয়া সুনামি হলই না ? সেই কারণেই কি কর্মীদের গলার স্বর ঠিকভাবে শুনতে পেলেন না অমিত শাহ ? আর সেই কারণেই কি মাত্র 23 মিনিট ভাষণ দিয়েই নেমে গেলেন অমিত শাহ ? যদিও এ দিন মঞ্চ থেকে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে যে পুলিশ বিভিন্ন রাস্তায় মিছিল ঘুরিয়ে দিচ্ছে, যাতে সভাস্থলে সঠিক সময় বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা পৌঁছাতে না পারেন ৷

পুলিশের একটি সূত্র বলছে যে এ দিন প্রায় 70 হাজার লোক হয়েছিল সভায় ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পুলিশ সাধারণত বিরোধী দলের সভায় জনসমাগমকে কমিয়ে দেখান ৷ সেক্ষেত্রে ধরা যায় যে আরও হাজার দশেক লোক বেশি ছিল ৷ কিন্তু এই পরিমাণ লোককে জনসুনামি হিসেবে ধরা সম্ভব !

তাছাড়া রাজনৈতিক মহল বলছে যে এ দিনের শাহের ভাষণের সেই ধার ছিল না ৷ সামনেই লোকসভা নির্বাচন ৷ সেই প্রেক্ষিতে তিনি যতটা আক্রমণাত্মক হবেন বলে মনে করা হয়েছিল, ততটা আক্রমণাত্মক তাঁকে দেখায়নি ৷ তাহলে কি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বঙ্গের পরিস্থিতির দেওয়াল লিখন এ দিন সভামঞ্চের সামনের ছবিটা দেখেই পড়ে ফেললেন গেরুয়া রাজনীতির চাণক্য !

আরও পড়ুন:

  1. চব্বিশে এত আসনে জেতান যাতে মোদি বলতে পারেন বাংলার জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছি, ভোটারদের বার্তা অমিত শাহের
  2. 'রিগিং করে ভোটে জিতেছেন', কেন্দ্রীয় প্রকল্পের হিসাব দিয়ে মমতাকে আক্রমণ অমিতের
  3. সিএএ লাগু হবেই, কেউ আটকাতে পারবে না: অমিত শাহ
Last Updated : Nov 29, 2023, 11:05 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.