ETV Bharat / state

ন্যায় সংহিতায় পথ দুর্ঘটনা আইনের প্রতিবাদে সামিল জ্বালানি তেল সংস্থার ট্যাঙ্কার চালকরা

Bharatiya Nyaya Sanhita's Road Accident Act: ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় পথ দুর্ঘটনা আইন আরও কঠোর করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ৷ যে আইনকে বাণিজ্যিক পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত চালকদের উপর অত্যাচার বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ আজ তারই বিরুদ্ধে রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদে সামিল হলেন খিদিরপুর ডক এলাকার ট্রাক ও লরি চালকরা ৷ জ্বালানি তেল সংস্থার ট্যাঙ্কার চালকরাও প্রতিবাদে সামিল ৷

ETV BHARAT
ETV BHARAT
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 2, 2024, 2:33 PM IST

Updated : Jan 2, 2024, 4:12 PM IST

ন্যায় সংহিতার পথ দুর্ঘটনা আইনের প্রতিবাদে চাক্কা জ্যাম বন্দরের ট্রাক চালকদের

কলকাতা/দুর্গাপুর, 2 জানুয়ারি: কেন্দ্রের ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিরুদ্ধে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য চাক্কা জ্যামের ডাক দিল খিদিরপুর পোর্ট এলাকায় বিভিন্ন সংস্থার হয়ে কাজ করা ট্রাকচালকরা ৷ পথ দুর্ঘটনা আইনে 10 বছরের কারাদণ্ড ও 7 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন বলে জানিয়েছেন বন্দর এলাকার ট্রাক ইউনিয়নের নেতারা ৷ অন্যদিকে, সংহিতার পরিবহণ সংক্রান্ত আইনের প্রতিবাদে কাঁকসায় 'স্টিয়ারিং ছাড়ো আন্দোলন' শুরু করেছে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সংস্থার ট্যাঙ্কার চালকরা ৷ তিনটি তেল সংস্থার গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলকারী ট্যাঙ্কার চালকরা ৷

তাঁদের দাবি, কেন্দ্র নয়া আইন আনার আগে পথ দুর্ঘটনা কেন ঘটছে ? তা যাচাই করে দেখল না ৷ কোন যুক্তিতে ট্রাক চালকদের উপর এই শাস্তির খাড়া ঝুলিয়ে দেওয়া হল ? প্রশ্ন তুলেছে, তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সংস্থার ট্যাঙ্কার চালকরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় সড়কের অবস্থা বেহাল ৷ কোথাও আবার ব্যাপক যানজট হয় ৷ সেই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন সময় ৷ এর দায় কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎই নয়া পরিবহন আইন বলবৎ করেছে ৷ যেখানে বলা হচ্ছে, কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে চালকদের লক্ষাধিক টাকার জরিমানার দিতে হবে ৷ এই আইন তারা মানছে না বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির ট্যাঙ্কার চালকরা ৷

এই আইনের বিরুদ্ধেই দেশ জড়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন ট্রাক চালক সংগঠনগুলি ৷ এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আজ খিদিরপুরেও বিক্ষোভে নামল বন্দর এলাকার ট্রাক ইউনিয়নগুলি ৷ যার জেরে খিদিরপুর ডক এলাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাজকর্ম ৷ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে, অনির্দিষ্টকালের জন্য চাক্কা জ্যামের কথা ঘোষণা করেছে সংগঠনগুলি ৷ যতদিন না আইন সংশোধন বা প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততদিন খিদিরপুর ডকের প্রায় 1400 ট্রাক ও ট্রেলারের স্টিয়ারিং ধরবেন না চালকরা ৷

এ দিন সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, যে ট্রাকচালকের মাসে 10 হাজার টাকাও আয় নেই, তাঁরা 7 লক্ষ টাকা জরিমানা কীভাবে দেবে ৷ সংগঠনের যুক্তি, কোনও ট্রাকচালক ইচ্ছাকৃত কোনও মানুষকে চাপা দেয় না ৷ দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কিছু করার থাকে না ৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে ট্রাক চালকদের উপর নয়া আইন চাপিয়ে দিচ্ছে, তা রীতিমতো জুলুম ৷ তাদের প্রশ্ন, কোনও ট্রাক চালক 10 বছরের জন্য জেলে গেলে, তাঁর পরিবারের কী হবে ?

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দু’দিনে ব্রিটিশ আমলের 'ভারতীয় দণ্ডবিধি' সংশোধন করে 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা' আইন নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ সংহতি 104 (2) ধারায় পথ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত নয়া বিধানের সংযোজন করেছে কেন্দ্র ৷ সেখানে বলা হয়েছে, "গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চালক নিজে পুলিশকে ফোন করে সেই কথা জানাবে ৷ তা না-করে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে, তার বিরুদ্ধে 'হিট অ্যান্ড রান' মামলায় অভিযোগ দায়ের হবে ৷ সেক্ষেত্রে চালকের সর্বোচ্চ 10 বছরের কারাদণ্ড ও 7 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে ৷"

উল্লেখ্য, আগে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কারণ যাচাই করা হত ৷ দুর্ঘটনা কতটা গুরুতর, চালকের আচরণ কেমন ? তা বিচার করে ইচ্ছাকৃত খুনের ধারা যোগ করা হত ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলাই দেওয়া হত ৷ কিন্তু, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চালক পুলিশকে না জানালে, ইচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হবে ৷

আরও পড়ুন:

  1. বিক্ষোভ নয়, ভোটবাক্সে নয়া আইনের বিরুদ্ধে সরবের বার্তা পরিবহণ মন্ত্রীর
  2. কেন্দ্রের নয়া পরিবহণ আইনের প্রতিবাদে জাতীয় সড়কে অবরোধ ট্রাকচালকদের, লাঠিচার্জ পুলিশের
  3. বছর শুরুর আনন্দে এগরোল খেতে যায় দুই বন্ধু, আর ঘরে ফেরা হল না!

ন্যায় সংহিতার পথ দুর্ঘটনা আইনের প্রতিবাদে চাক্কা জ্যাম বন্দরের ট্রাক চালকদের

কলকাতা/দুর্গাপুর, 2 জানুয়ারি: কেন্দ্রের ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিরুদ্ধে এবার অনির্দিষ্টকালের জন্য চাক্কা জ্যামের ডাক দিল খিদিরপুর পোর্ট এলাকায় বিভিন্ন সংস্থার হয়ে কাজ করা ট্রাকচালকরা ৷ পথ দুর্ঘটনা আইনে 10 বছরের কারাদণ্ড ও 7 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন বলে জানিয়েছেন বন্দর এলাকার ট্রাক ইউনিয়নের নেতারা ৷ অন্যদিকে, সংহিতার পরিবহণ সংক্রান্ত আইনের প্রতিবাদে কাঁকসায় 'স্টিয়ারিং ছাড়ো আন্দোলন' শুরু করেছে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সংস্থার ট্যাঙ্কার চালকরা ৷ তিনটি তেল সংস্থার গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলকারী ট্যাঙ্কার চালকরা ৷

তাঁদের দাবি, কেন্দ্র নয়া আইন আনার আগে পথ দুর্ঘটনা কেন ঘটছে ? তা যাচাই করে দেখল না ৷ কোন যুক্তিতে ট্রাক চালকদের উপর এই শাস্তির খাড়া ঝুলিয়ে দেওয়া হল ? প্রশ্ন তুলেছে, তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি তেল সংস্থার ট্যাঙ্কার চালকরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় সড়কের অবস্থা বেহাল ৷ কোথাও আবার ব্যাপক যানজট হয় ৷ সেই কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে বিভিন্ন সময় ৷ এর দায় কেন্দ্রীয় সরকারের ৷ তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার হঠাৎই নয়া পরিবহন আইন বলবৎ করেছে ৷ যেখানে বলা হচ্ছে, কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে চালকদের লক্ষাধিক টাকার জরিমানার দিতে হবে ৷ এই আইন তারা মানছে না বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির ট্যাঙ্কার চালকরা ৷

এই আইনের বিরুদ্ধেই দেশ জড়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন ট্রাক চালক সংগঠনগুলি ৷ এই আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আজ খিদিরপুরেও বিক্ষোভে নামল বন্দর এলাকার ট্রাক ইউনিয়নগুলি ৷ যার জেরে খিদিরপুর ডক এলাকায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে কাজকর্ম ৷ আইন প্রত্যাহারের দাবিতে, অনির্দিষ্টকালের জন্য চাক্কা জ্যামের কথা ঘোষণা করেছে সংগঠনগুলি ৷ যতদিন না আইন সংশোধন বা প্রত্যাহার করা হচ্ছে, ততদিন খিদিরপুর ডকের প্রায় 1400 ট্রাক ও ট্রেলারের স্টিয়ারিং ধরবেন না চালকরা ৷

এ দিন সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, যে ট্রাকচালকের মাসে 10 হাজার টাকাও আয় নেই, তাঁরা 7 লক্ষ টাকা জরিমানা কীভাবে দেবে ৷ সংগঠনের যুক্তি, কোনও ট্রাকচালক ইচ্ছাকৃত কোনও মানুষকে চাপা দেয় না ৷ দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কিছু করার থাকে না ৷ কিন্তু, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে ট্রাক চালকদের উপর নয়া আইন চাপিয়ে দিচ্ছে, তা রীতিমতো জুলুম ৷ তাদের প্রশ্ন, কোনও ট্রাক চালক 10 বছরের জন্য জেলে গেলে, তাঁর পরিবারের কী হবে ?

সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দু’দিনে ব্রিটিশ আমলের 'ভারতীয় দণ্ডবিধি' সংশোধন করে 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা' আইন নিয়ে আসে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ সংহতি 104 (2) ধারায় পথ দুর্ঘটনা সংক্রান্ত নয়া বিধানের সংযোজন করেছে কেন্দ্র ৷ সেখানে বলা হয়েছে, "গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চালক নিজে পুলিশকে ফোন করে সেই কথা জানাবে ৷ তা না-করে চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলে, তার বিরুদ্ধে 'হিট অ্যান্ড রান' মামলায় অভিযোগ দায়ের হবে ৷ সেক্ষেত্রে চালকের সর্বোচ্চ 10 বছরের কারাদণ্ড ও 7 লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে ৷"

উল্লেখ্য, আগে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কারণ যাচাই করা হত ৷ দুর্ঘটনা কতটা গুরুতর, চালকের আচরণ কেমন ? তা বিচার করে ইচ্ছাকৃত খুনের ধারা যোগ করা হত ৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলাই দেওয়া হত ৷ কিন্তু, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত চালক পুলিশকে না জানালে, ইচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করা হবে ৷

আরও পড়ুন:

  1. বিক্ষোভ নয়, ভোটবাক্সে নয়া আইনের বিরুদ্ধে সরবের বার্তা পরিবহণ মন্ত্রীর
  2. কেন্দ্রের নয়া পরিবহণ আইনের প্রতিবাদে জাতীয় সড়কে অবরোধ ট্রাকচালকদের, লাঠিচার্জ পুলিশের
  3. বছর শুরুর আনন্দে এগরোল খেতে যায় দুই বন্ধু, আর ঘরে ফেরা হল না!
Last Updated : Jan 2, 2024, 4:12 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.