কলকাতা, 3 মে: বকেয়া ডিএ-সহ একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। চাপে পড়ে তিন শতাংশ ডিএ নতুন করে বরাদ্দ করতে হয়েছে সরকারকে। কিন্তু তারপরও নাছোড়বান্দা সরকারি কর্মচারীরা ৷ এরকম পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সরকারি কর্মচারীদের দলে টানতে রাজ্যজুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে তৃণমূল।
সংগঠন সূত্র খবর, রাজ্যজুড়ে মোট দুই লক্ষ চার হাজার ফর্ম বিলি করা হয়েছিল সদস্য সংগ্রহ করার জন্য। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও সব জেলা থেকে আশানুরূপ সদস্য সংগ্রহ করা যায়নি। কোথাও কো-অর্ডিনেশন কমিটির চাপ কোথাও বা সরকারি কর্মচারীদের তৃণমূলের সংগঠনে অংশ নিতে অনিহা। কারণ বর্তমানে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে চুরি বা দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ উঠছে এবং যে হারে নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গেই গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক আমলা-আধিকারিক ৷ জেলও খাটছে তাঁরা ৷ সেকারণেই কি তৃণমূলে নাম লেখাতে অনিহা সরকারি কর্মীদের ৷ যদিও এই সব বিষয়কে আড়াল করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া বলেন, "রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বড় অংশ আমাদের সঙ্গেই আছেন। ইতিমধ্যে এক লক্ষ 62 হাজার সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে ।"
পাশাপাশি আড়াই থেকে তিন লক্ষ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ফেডারেশনে যুক্ত করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া একথা জানিয়েছেন। গত 25 এপ্রিল রাজ্য পরিবেশ দফতরের অডিটোরিয়ামে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের সভা অনুষ্ঠিত হয়। 23টি জেলার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে করেন মানস ভূঁইয়া। জেলা ধরে ধরে কত সদস্য পদ পাওয়া গেল তার হিসাবও নেন তিনি।
সূত্রের খবর, সদস্য সংখ্যার ক্ষেত্রে কোনও জেলা সন্তোষজনক হলেও, কোনওটি আবার একদমই তলানিতে। ফলে যে সমস্ত জেলায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ভাটা পড়েছে তাদের চাঙ্গা হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযানে জেলাশাসক, বিডিও বা অন্য কোনও পদস্থ আধিকারিক কোনও রকম সাহায্য করছে বা বাধা দিচ্ছেন সে বিষয়েও খোঁজখবর নেন মানস রঞ্জন। তিনি একই সঙ্গে উপস্থিত জেলা নেতাদের স্পষ্ট নির্দেশ দেন, "সংগঠন গোছাতে কোন জেলার কোন বিডিও, কোন জেলাশাসক সমস্যা করছে তাদের নাম পাঠান। ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সংগঠনকে গোছাতেই হবে। এই সমস্ত আধিকারিক এবং কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতাদের জবাব আমরা দিয়ে দেব।"
যদিও সংবাদিক সম্মলনে মানস রঞ্জন ভূঁইয়া দাবি করেছেন, "যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ বা কো-অর্ডিনেশন কমিটির ফাঁদে পা না-দিয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী প্রকল্পের প্রচারে আগামীতে পথে নামবেন। তারপরে কেন্দ্রীয়ভাবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সম্মেলন করার ইচ্ছে আছে আমাদের। সেখানেই যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ কো-অর্ডিনেশন কমিটিকে জবাব দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরকারি কর্মচারীরা পাশে থাকার বার্তা দেবেন।"
আরও পড়ুন: অনুব্রতর গড়ে ট্রেন থামতেই মমতার হাতে চপ-মুড়ি তুলে দিলেন কর্মীরা