কলকাতা, 12 জুন: বাংলায় মণিপুরের মতো জাতপাতের রাজনীতি আনতে চাইছে বিজেপি ৷ ঠাকুরবাড়িতে গণ্ডগোলের ঘটনায় গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে শাসক দলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে গতকালের ঘটনার তীব্র সমালোচনা করা হয় ৷ হিন্দু ব্রাহ্মণ হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দেবেন ? বিজেপি নেতৃত্বের এই প্রশ্নকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ বলেছেন, "হিন্দু-মুসলিম ছিল ৷ এ বার আসছে ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণ ৷ মণিপুরের রাজনীতি এখানে করছে বিজেপি ৷"
সোমবার এই নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তৃণমূলের শীর্ষ নেতা কুণাল ঘোষ ও শশী পাঁজা ৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মতুয়া পরিবারের সদস্য তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ৷ তিনি গতকালের ঘটনায় নিশানা করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে ৷ মমতাবালার অভিযোগ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তৈরি করে শান্তনু ঠাকুরকে দিয়ে মতুয়াদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে । তিনি বলেন, গতকাল কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ তিনি শুধু পুজো দিতে গিয়েছিলেন ৷
মমতাবালা ঠাকুরের কথায়, "গতকালের দিনটা কালো দিন হিসাবে থাকবে । আমরা দুদিন আগেই পুজোর ব্যবস্থা করেছি । কারণ, হাবড়াতে অভিষেকের মিছিল ছিল । হরি ঠাকুর 200 বছর আগে জাতপাত উঠিয়ে মানবতার ধর্ম এনেছিলেন ৷ গতকাল আমাদের এখানে মুসলিম লোকজনও এসেছিল ।"
এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে শশী পাঁজা বলেন, "আমাদের একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে যে, পবিত্র মন্দিরকে কারা যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করল ? 200-250 লোক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শান্তনু ঠাকুর । অভিষেক কাল পুজো দিতে গিয়েছিলেন । এই পবিত্র জায়গায় কারা জুতো পরে ঢুকলেন ? কারা অপবিত্র করলেন ? সাধারণ মানুষের সঙ্গে কিছু দুষ্ট লোক মিশে গিয়েছিল । আগামী দিনেও কী এ রকম দেখব ?" কারা মন্দিরে ঢুকবেন তাই নিয়ে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শশী পাঁজা ৷
আরও পড়ুন: ঠাকুরবাড়িতে সংঘর্ষ চরমে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের; আক্রান্ত শান্তনু ঠাকুরও
একই সুরে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বলেন, "ওখানে অভিষেক পুজো দিতে গিয়েছিলেন । রাজনীতি করতে যাননি । মোদি-অমিত শাহ গেলে রাজনীতি হয় না ? এখন আবার বলছে ব্রাহ্মণ বলে পুজো দিতে পারবে না । এখানে কি মণিপুর করার চেষ্টা চলছে ? জুতো পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মন্দিরে ঢোকানো হায়েছে । এর বেলা মন্দির অপবিত্র হচ্ছে না ? কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির ক্যাডারের কাজ করেছে । শান্তনুর হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়া উচিত ।"