কলকাতা, 12 অগস্ট : নির্বাচনের পর থেকেই শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে খেলা হবে স্লোগান । ইতিমধ্যেই জাতীয় ক্ষেত্রেও এই স্লোগান যথেষ্ট পরিচিতি পেয়েছে । সংসদের মধ্যেও এই খেলা হবে স্লোগান তুলে বিরোধীরা বিজেপিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে । এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ঘোষিত খেলা হবে দিবস (Khela Hobe Divas) পালিত হতে চলেছে রাজ্যে রাজ্যে । বাংলা ও ত্রিপুরার পর এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও (Uttar Pradesh)। যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) রাজ্যে এ বার খেলা হবে দিবস পালনের উদ্যোগ নিয়েছে সে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস ।
গত 21 জুলাই শহীদ দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, আগামী 16 অগস্ট দিনটিকে রাজ্যে খেলা হবে দিবস হিসেবে পালন করা হবে । তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । রাজ্যের শাসকদল সূত্রের খবর, ওইদিন পশ্চিমবঙ্গের ব্লকে ব্লকে পালন করা হবে দিনটি ।
আরও পড়ুন: Ghatal flood : ঘাটালের বন্যা নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এলাকা পর্যবেক্ষণে প্রতিনিধি দল
যদিও রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে । তারা দাবি তুলেছে 16 অগস্ট খেলা হবে দিবস পালনের মাধ্যমে 1946 সালের ঐতিহাসিক কলকাতা কিলিংয়ের স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসকদল । বিজেপির তরফে স্বপন দাশগুপ্ত লিখেছেন, "16 অগস্টকে খেলা হবে দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 1946 সালে এই দিনেই মুসলিম লিগ তাদের 'ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে' এবং 'গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং' শুরু করেছিল । বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে খেলা হবে স্লোগান বিরোধীদের উপর অত্যাচারের প্রতীক হয়ে উঠেছে ।"
আরও পড়ুন: Mamata-Javed-Shabana : জাভেদকে হিন্দিতে ‘খেলা হবে’ গান লেখার অনুরোধ মমতার
তবে 16 অগস্ট খেলা হবে দিবস পালনের কারণ হিসেবে মমতা জানিয়েছেন, ওইদিনই 1980 সালে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে ইডেন গার্ডেন্সে । কলকাতা ফুটবল লিগের ডার্বিতে ট্রাজিক ঘটনা আজও ক্ষত হয়ে রয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের মনে । দুই দলের সমর্থকদের মারামারি ও পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় 16 জনের প্রাণহানি হয় । তারপর থেকে ওইদিনটি ‘ফুটবল লাভার্স ডে’ হিসেবে পালন করা হয় কলকাতা ময়দানে । সেই দিনের স্মৃতি এখনও টাটকা । সে কথাই সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই কারণেই 16 অগস্ট দিনটিতেই সরকার খেলা হবে দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি । এই খেলা হবে স্লোগানে ভর করেই তৃতীয়বার নবান্নের গদিতে বসেছেন মমতা । এ বার রাজ্যজুড়ে খেলা হবে দিবস পালন করে ঐক্য-সংহতির বন্ধনে রাজ্যকে বাঁধতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী ।
আরও পড়ুন: রাজ্যে এবার খেলা হবে দিবস, বিধানসভায় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
উত্তরপ্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ওই দিন লখনউতে খেলা হবে দিবস উপলক্ষে একটি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে । করোনাবিধি মেনেই এই কর্মসূচি পালন করা হবে । ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচি পালনের কথা উল্লেখ করে যোগী সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে । তবে সরকারের তরফে সেই আবেদন সম্পর্কে কোনও জবাব এখনও দেওয়া হয়নি । যোগীর রাজ্যে আদৌ তৃণমূলের এই কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়া হবে কি না সেটাই এখন দেখার ।
বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তাপস রায় বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন জাতীয় নেত্রী । তাঁর ডাকে গোটা দেশে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা এমন উদ্যোগ নিচ্ছেন । আর এমন উদ্যোগই প্রমাণ করে দিনে দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা গোটা দেশে বাড়ছে ।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ সরকার যদি এই কর্মসূচির জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে অনুমতি না দেয়, তাহলে বুঝতে হবে যোগী সরকার তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছে ।’’ উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির রাজ্য গুজরাতেও খেলা হবে দিবস পালনের আয়োজন করছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷