কলকাতা, 22 নভেম্বর: সোমবারের পর মঙ্গলবারও বিরোধী বিক্ষোভে (BJP Protest) উত্তাল হল রাজ্য বিধানসভা (TMC blames BJP for insulting President)। অখিল গিরি ইস্যুতে সোমবার বিজেপির আনা মুলতুবি প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । আর মঙ্গলবার ডেঙ্গি (Dengue Protest) নিয়েও একই প্রস্তাব এনে সুবিধা করতে পারলেন না বিজেপি বিধায়করা । এ দিনও তাঁদের প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন স্পিকার । তারপর সোমবারের মতোই অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে বাইরে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখালেন বিরোধী বিধায়করা। প্রতীকী মশা বিতরণ থেকে শুরু করে মশারি নিয়ে চলল মিছিল । ফলে অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনও শোরগোল বিধানসভায় (Ruckus in Assembly)।
এ দিন বিরোধী বিধায়করা বিধানসভায় রাষ্ট্রপতিকে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ করল শাসকদল । সোমবার বিরোধীরা বিধায়কদের বুকে ছিল রাষ্ট্রপতির ছবি । সেই ছবি নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে অন্য বিজেপি বিধায়কেরা । এ দিন সেখানে ছিল মশার ছবি । তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, এর চেয়ে বড় রাষ্ট্রপতিকে অপমান আর কী হতে পারে । তৃণমূল কংগ্রেসের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, "রাজ্য বিধানসভায় রোজ বিরোধীদের নাটকবাজি চলছে । আসলে এ সবের মাধ্যমে বিধানসভার কাজকর্ম ব্যাহত করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য । বিরোধী দলনেতা প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে রোজ আসছেন । সংবাদ মাধ্যমের নজর কাড়ার জন্যই তাঁরা এ সব করছেন ।"
এ দিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আরও বলেন, "আমরা অবাক হয়ে দেখলাম গতকাল রাষ্ট্রপতিকে মর্যাদা দিয়ে নিজেদের বুকে স্থান দিয়েছিলেন বিরোধী দলের বিধায়কেরা । আজ সেখানেই জায়গা পেয়েছে মশা । এটা কি রাষ্ট্রপতি পদের অসম্মান নয় ?" তিনি বলেন, "আমাদের যা বলার আমরা এমনিতেই বলে থাকি, তার জন্য মুলতুবি প্রস্তাব আনার প্রয়োজন পড়ে না । তাঁরাও অভিযোগ করছেন ৷ এই সরকার সচেতনতা কর্মসূচি নেয়নি । আমরা পালটা প্রশ্ন করছি, যে বিধায়কেরা আজ মুলতুবি প্রস্তাব নিয়ে এলেন, তাঁরা কি নিজেদের এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার করেছেন ?"
আরও পড়ুন: 'অনুতাপ নেই অখিলের, বরখাস্ত হোক'; রাষ্ট্রপতি নিয়ে বিজেপির বিক্ষোভ এখনই থামছে না !
এ দিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের এইসব বক্তব্যের পালটা জবাব দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন, "এই সরকার বিরোধী বিধায়কদের প্রশ্নের মুখে দাঁড়াতে ভয় পাচ্ছে । চাইলেই এই সরকার মুলতুবি প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারত । সরকারপক্ষের তরফে প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী না দিন, অন্য কেউ বিবৃতি দিতে পারতেন । কিন্তু সেই পথে না হেঁটে সরকার বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে ।"
জবাবে রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "কী বলছেন বিরোধী দলনেতা ! এই সরকারের আসল লক্ষ্য মানুষের অসুবিধা নিয়ে কথা বলা নয় বরং রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে একে ব্যবহার করা । তাই সরকার পক্ষের উত্তর দেওয়ার অপেক্ষাও শুভেন্দুবাবুরা করেননি । সরকার পক্ষের তরফে পৌরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন । আমরা জবাব দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বিরোধীরা ক্যামেরায় মুখ দেখানোর তাড়নায় এই জবাব নেওয়ার মতো ধৈর্য দেখাতে পারেননি ।"