কলকাতা, 27 জুন : দীর্ঘ দেড় মাসের ছুটি কাটিয়ে রাজ্যে খুলল সরকারি ও সরকার পোষিত স্কুলগুলি। তবে প্রথমদিন হলেও প্রায় সমস্ত স্কুলেই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার আশাব্যাঞ্জক (Teachers Worried About Finish Syllabus After Long Summer Vacation)।
এক সরকার পোষিত স্কুলের প্রধান শিক্ষক কিংকর অধিকারী বলেন, "আমাদের স্কুলে প্রায় 90 শতাংশের কাছাকাছি ছাত্র ছাত্রীরাই আজ স্কুলে এসেছে এবং এতদিন পরে আবার স্কুল খুলে যাওয়ায় খুবই আনন্দিত তারা। আজ পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে বুঝলাম যে তারা স্কুল খোলার জন্য মুখিয়েছিল। পাশাপাশি এও বলব কিছু পড়ুয়াদের মধ্যে এতদিন পড়ে স্কুলে আসার একটা জড়তা রয়েছে। এই সময় যারা বাড়িতে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে তাদের তেমন একটা সমস্যা হচ্ছে না ৷ তবে যারা একেবারেই পড়াশোনার সঙ্গে যুক্ত ছিল না, তাদের সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এরাই যদি প্রতিদিন স্কুলে আসে তাহলে ক্লাসে কী পড়ানো হচ্ছে সেটা শুনতে শুনতেও মনে গেঁথে যায়।"
আরও পড়ুন : দেড় মাসের ছুটির পর খুলল সব স্কুল, কোভিড আতঙ্ক নিয়েই ছন্দে ফিরল পড়ুয়ারা
তিনি আরও বলেন, "স্কুল কতৃপক্ষের তরফে শিক্ষকরা নিজেদের উদ্যোগে যতটা পেরেছে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে উপস্থিতির হার খুব একটা বেশি ছিল না। কিন্তু আবার সেই পুরনো পড়াগুলো নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে। হঠাৎ করেই গরমের ছুটি পড়ে যাওয়ায় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষা আর নেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামী 30 জুন থেকে বেশিরভাগ স্কুলেই শুরু হয়ে যাবে পরীক্ষা। কিছু সংখ্যক পড়ুয়া বাড়িতে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিলেও বাকিরা নেয়নি। তাই এই অল্প সময়ের মধ্যে তারা কেমন ফল করে সেটাও ভাববার বিষয় রয়েছে।"
পাশাপাশি হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ডক্টর জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, "স্কুলের আজ প্রথমদিনে প্রায় 80 শতাংশর কাছাকাছি পড়ুয়ারা উপস্থিত ছিল। যেহেতু পরীক্ষার মাঝপথেই স্কুল বন্ধ হয়ে যায়, তাই পড়ুয়াদের আগে থেকেই বলা ছিল যে স্কুল খুলেই পরীক্ষা নেওয়া হবে তাই আশা করা যায় যে তারা বাড়িতেই প্রস্তুতি নিয়েছে।"
অন্য এক স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন, "আমাদের স্কুলে উপস্থিতির হার ছিল 75 থেকে 80 শতাংশ। তবে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা ও মনোযোগের অভাব লক্ষ্য করলাম। স্বাভাবিকভাবেই এতদিন ছুটি কাটানোর পর ক্লাসে এসে পড়াশোনায় মন দিতে কিছুটা অসুবিধা হবে। তাই আমাদের স্কুলে আজ পড়ুয়াদের তেমন একটা চাপ দেওয়া হয়নি। এমনকী বাড়িতে পড়ার কাজও দেওয়া হয়নি। আজকের দিনটা মোটের উপর তাদের জন্য হালকা রাখা হয়েছিল যাতে তারা নিজেদের মধ্যে গল্প করতে পারে। স্কুলের মাঠে খেলতে পারে। পাশাপাশি সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে মানা হয়েছে কোভিড প্রোটোকলও।"
আরও পড়ুন : গরমের ছুটির পর খুলছে স্কুল; সঙ্গে জারি করোনা বিধিনিষেধ
তবে তিনি এও বলেন, "সবেমাত্র স্কুল খুলল আর তার দু'দিনের মধ্যেই পরীক্ষা হয়তো ছাত্রছাত্রীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। আরও কিছুদিন স্কুল করে, পাঠ্যক্রম পুনরায় ঝালিয়ে নিয়ে এবং যা যা বাকি রয়েছে সেগুলি শেষ করে পরীক্ষা নেওয়া হলে ভালো হত।"