কলকাতা, 3 জানুয়ারি: টাকা নিয়ে ছাত্র ভর্তি করার অভিযোগ আগেই উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) বিরুদ্ধে । মঙ্গলবার সেই অভিযোগ আবার উঠেছে৷ এবার তা করেছেন মানিকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তাপস মণ্ডল ৷
তবে প্রকাশ্যে নয়, তিনি এই কথা বলেছেন সিবিআইয়ের (CBI) কাছে ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ ওই সূত্রের দাবি, তাপস সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন ছাত্র পিছু 5 হাজার টাকা করে নেওয়া হত ৷ এর যাতে কোনও প্রমাণ না থাকে, তাই রসিদও দিতেন না মানিক ৷
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির (Primary Recruitment Scam) তদন্ত করছে সিবিআই ৷ এই দুর্নীতির তদন্তে যেহেতু আর্থিক লেনদেনের বিষয় জড়িয়ে রয়েছে, তাই এই নিয়ে তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate) ৷ ইতিমধ্য়ে মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও পেশ করেছে ইডি (ED) ৷
একই সঙ্গে মানিক ঘনিষ্ঠদের জিজ্ঞাসাবাদও করছে দুই তদন্তকারী সংস্থা ৷ মানিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাপস মণ্ডলকে আগেই জেরা করেছে ইডি ৷ মঙ্গলবার তাঁকে তলব করেছিল সিবিআই ৷ কলকাতার নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের দফতরে যান তাপস ৷ সেখানেই প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই ৷ তাঁর বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো সূত্রে জানা গিয়েছে ৷
এদিন নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর সময় তাপস মণ্ডল জানিয়েছেন, এর আগে তিনি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে যে তথ্য দিয়েছিলেন, সেই তথ্যই সিবিআইকে তিনি আজ দিয়েছেন ৷ সত্যিই কি তাই ! আপাতত সেটাই যাচাই করে দেখা হবে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি ৷
ওই সূত্রের তরফে জানানো হয়েছে, এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে যে তথ্য দিয়েছিলেন তাপস মণ্ডল, সেই তথ্যের সঙ্গে আজ সিবিআইকে দেওয়ার তথ্য মিলিয়ে দেখা হবে । পাশাপাশি সিবিআই সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দীর্ঘদিন ঘনিষ্ঠতা ছিল তাপস মণ্ডলের । ফলে মানিক ভট্টাচার্যের সম্পর্কে অজানা একাধিক তথ্য তাপসের কাছে থাকতে পারে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন ৷ সেই সংক্রান্ত প্রশ্নও করা হয় বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে ৷
সূত্রের খবর, তাপস জানিয়েছেন যে ডিইএলএড কোর্সে ভর্তির জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে অফলাইনে ভর্তির জন্য প্রায় 21 কোটি টাকা নিয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য । মানিক ভট্টাচার্যের একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা তার হয়ে টাকা সংগ্রহ করত । যাতে কোনও রকমের তথ্য প্রমাণ না থাকে, তার জন্যই টাকা নেওয়ার পর কোনও রশিদ দেওয়া হত না ।
আরও পড়ুন: চতুর্থবার হাজিরায় এসে বিস্ফোরক মানিক-'ঘনিষ্ঠ' তাপস মণ্ডলের