কলকাতা, 7 অগস্ট: রাজ্যের অর্থনীতির বড় সাফল্য সব সময় নির্ভর করে গ্রামীণ অর্থনীতির উপর । আর সে কারণেই নতুন ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগেই কীভাবে এই গ্রামীণ অর্থনীতির ভিতকে মজবুত করা যায় তা ঠিক করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার । আর সে কারণেই ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের মতো প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিতে চাইছে রাজ্য । আগামী দিনে এই ম্যানেজমেন্ট সংস্থার মাধ্যমে কীভাবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কাজে আরও স্বচ্ছতা আনা যায় এবং আয় বাড়ানো যায় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়েও ভাবা হচ্ছে । রাজ্য সরকারের আমলা মহলের একাংশ মনে করছে এই সিদ্ধান্ত গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য ট্রাম কার্ড হতে চলেছে ।
100 দিনের কাজ, গ্রাম সড়ক যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা মিলে এই মুহূর্তে রাজ্য বছরে প্রায় 20 হাজার কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে । এই অবস্থায় বিকল্প উপায়ে আয় বাড়িয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখাই রাজ্য সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ । যতদূর জানা যাচ্ছে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গার রাখার পর্যাপ্ত প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে । পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন পর্যায়ে কীভাবে আয় বাড়ানো যায় তা নিয়ে ভাবছে রাজ্য সরকার ।
নবান্নে গত শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিক, জেলাশাসক, এসডিও এবং বিডিওদের নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । সেখানে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে না থেকে কীভাবে পঞ্চায়েতগুলিকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে । এই বৈঠকে মুখ্যসচিব স্পষ্ট ভাষায় কীভাবে আয় বৃদ্ধি করা যায় তার জন্য জেলা প্রশাসনকে সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছেন । এক্ষেত্রে নবান্ন কী ভাবছে তা স্পষ্ট করে দিতে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে । আর সেখানে আয় বাড়ানোর কৌশল শিখতে ওই নির্দিষ্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কথাও বলা হয়েছে বলেই খবর ।
যদিও পদ্ধতিটা সহজ নয়, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য আগামী 5 বছর গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসাবেই দেখছে রাজ্য । আর সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও রয়েছে রাজ্যের । ঠিক যেভাবে পৌরসভাগুলিতে বিল্ডিং প্ল্যান থেকে ট্রেড লাইসেন্স সবকিছু অনলাইনে করা হয়েছে এবার একই ব্যবস্থা গ্রামীণ ক্ষেত্রেও চালু করার কথা ভাবছে রাজ্য ।
পঞ্চায়েত দফতরের এক আধিকারিক এর কথায়, "এতে একদিকে যেমন স্বচ্ছতা আসে । একই সঙ্গে রাজস্ব ফাঁকির সম্ভাবনাও কমে । সেই জায়গা থেকে অনলাইন পরিষেবাকে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । যতদূর জানা যাচ্ছে, আগামী সময়ে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা দোকান বাজার গুদামঘরগুলিকে যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে । একই সঙ্গে উন্নয়নের কাজে গতি আনতেও নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্যের । মোটের উপর রাজ্য চায় উন্নয়নের কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের প্রক্রিয়াটিও জারি থাকুক সমানতালে আর তা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কিছু ভাবনা রয়েছে রাজ্যের ।"
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথীতে 6 বছরে খরচ 9 হাজার কোটি, পরিষেবা পেয়েছেন 60 লক্ষ