কলকাতা, 7 এপ্রিল : ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু হত্যা মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার । প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের বিরোধিতায় মামলা করল রাজ্য । দ্রুত মামলার শুনানি চেয়ে আর্জি জানিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার । তবে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি বিবেচনা করে দেখে শুনানির তারিখ বলবেন (State Govt appeals HC Division Bench challenging CBI probe into Tapan Kandu Murder in Jhalda Purulia) ৷
উল্লেখ্য, গত 4 এপ্রিল পুরুলিয়ার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের তদন্তভার সিবিআইকে দেয় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ (Justice Rajasekhar Mantha) । সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশে জানিয়েছিল, এই ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার একাধিক প্রমাণ রয়েছে । পাশাপাশি পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই সাংবাদিক সম্মেলন করে তপন কান্দু খুনে পারিবারিক বিবাদকেই দায়ী করেছেন ৷ এতে রাজ্য পুলিশের তদন্ত নিরপেক্ষ হবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তর ভার সঁপে দেয় হাইকোর্ট ।
প্রসঙ্গত গত 13 মার্চ ঝালদা শহর লাগোয়া গোকুলনগর গ্রামের কাছে আততায়ীদের ছোড়া গুলিতে খুন হন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু । এই ঘটনাকে ঘিরে তোলপাড় হয়ে ওঠে রাজ্য-রাজনীতি । পৌরসভা নির্বাচনে ঝালদা পৌরসভার 2 নম্বর ওয়ার্ড থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কংগ্রেস প্রার্থী তপন কান্দু এবং তাঁর দাদা নরেন কান্দুর ছেলে তৃণমূল প্রার্থী দীপক কান্দু । 2 মার্চ ফল ঘোষণায় জয়ী হন তপন কান্দু ৷
তাঁর খুনের তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের 6 সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট । তদন্তে সহযোগিতা করে সিআইডি । কংগ্রেস কাউন্সিলরের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর অভিযোগ, শাসকদলে যোগ না দেওয়ায় তাঁর স্বামীকে খুন হতে হয়েছে । তপন কান্দু খুনের পর একাধিক অডিয়ো ভাইরাল হয় ৷
আরও পড়ুন : Jhalda Councillor Murder Case : 7 লাখে রফা, ঝালদা কাউন্সিলর খুনে জড়িত নন আইসি, জানালেন পুলিশ সুপার
এদিকে সিট তদন্তে গ্রেফতার করা হয় তপন কান্দুর দাদা নরেন কান্দু, ভাইপো দীপক কান্দু, ভাড়াটে খুনি কলেবর সিং ও আসিফ খান ৷ 3 এপ্রিল রবিবার পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান সাংবাদিক বৈঠকে জানান, সাত লক্ষ টাকার বিনিময়ে খুন হয়েছেন ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু ৷ তাঁর দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন হয়েছেন তপন কান্দু ৷ আইসি সঞ্জীব ঘোষকে ক্লিনচিট দেন এসপি সেলভামুরুগান ৷
গতকাল, 6 এপ্রিল সকালে ঝালদা শহরে তপন কান্দুর সঙ্গী নিরঞ্জন ওরফে সেফাল বৈষ্ণবের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে রহস্য আরও ঘনীভূত হয় ৷ তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ৷ সেফাল বৈষ্ণবের নামে স্বাক্ষর করা একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায় তাঁর ঘর থেকে ৷ সেই নোট থেকে জানা গিয়েছে, তপন কান্দুর খুনে মানসিক অবসাদে চলে গিয়েছেন তাঁর ছোটবেলার সঙ্গী নিরঞ্জন ওরফে সেফাল ৷ পাশাপাশি বার বার পুলিশের ডেকে পাঠানো কথাও উল্লেখ করা হয়েছে ৷ তপন কান্দু খুনের সময় তিনি কংগ্রেস নেতার সঙ্গেই ছিলেন ৷
সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করল রাজ্য । এবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কি সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল রাখে নাকি তা খারিজ করে রাজ্য সরকারকে স্বস্তি দেবে, তাই এখন দেখার ৷