কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: 100 দিনের কাজ নিয়ে গত একবছর ধরে এমনিতেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি ৷ প্রায় প্রতিদিনই নিয়মিত শাসক এবং বিরোধী একশো দিনের বকেয়া প্রসঙ্গে একে অপরকে নিশানা করছে ৷ কিন্তু, বাস্তব হল এটাই যে, এক বছরের বেশি সময় ধরে 100 দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না ৷ গতকালও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমানের সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচির মঞ্চ 100 দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন ৷ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, 100 দিনের কাজের টাকা না-দিলে 'দুর্বার' আন্দোলন হবে ৷
এই অবস্থায় ঘটনা প্রবাহ যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে 100 দিনের কাজের বকেয়া ইস্যুতে বিধানসভায় আসন্ন বাজেট অধিবেশন (Assembly Budget Session) উত্তপ্ত হতে পারে ৷ এখনও পর্যন্ত যতদূর জানা যাচ্ছে, তাতে রাজ্যের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে শাসকদল তৃণমূলের তরফে 100 দিনের কাজ নিয়ে প্রস্তাব আনা হতে পারে (State Government May Bring Private Bill on MGNREGA) ৷ একই সঙ্গে এমন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে যে, এই বিষয়ে প্রাইভেট বিলও আনতে পারে রাজ্য সরকার ৷
তবে, কী এই প্রাইভেট বিল ? যতদূর জানা যাচ্ছে তাতে, মন্ত্রীদের ছাড়া বিধায়কদের তরফে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিল আনা হয় ৷ অধিবেশনে তা আলোচনা হলে এবং গৃহীত হলে বিষয়টি আইনে পরিণত হয় ৷ এক্ষেত্রে 100 দিনের কাজ নিয়ে প্রাইভেট বিল আনা হলে, তা কেন্দ্রকে চাপে ফেলতে পারে ৷ এমনটাই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির হুজহুরা ৷
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন ৷ সেখানে জানিয়েছিলেন সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে দিল্লি দরবারে একটি প্রস্তাব পাঠাবেন ৷ কিন্তু, বিজেপি সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি ৷ ফলে শেষ পর্যন্ত রাজ্যের নেওয়া পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়নি ৷ পরবর্তী সময়ে তৃণমূলের মন্ত্রী এবং বিধায়করা বিজেপিকে নিশানা করেছেন একশো দিনের হকের টাকা না দেওয়ার অভিযোগে ৷
আরও পড়ুন: 100 দিনের কাজের টাকার জন্য কতবার কেন্দ্রকে বলতে হবে, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর
পালটা রাজ্য বিজেপির তরফে শাসকদলকে নিশানা করা হয়েছে ৷ সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা বারেবারে একই কথা বলে গিয়েছেন এ প্রসঙ্গে ৷ আগে 100 দিনের কাজের টাকার খরচের হিসেব দেবে রাজ্য সরকার ৷ তারপর প্রধানমন্ত্রীর মানরেগার বকেয় টাকা দেওয়া হবে ৷ বিজেপির সর্বভারতী সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে এমনও বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘‘কেন্দ্র টাকা দেয়, তার খরচের হিসেব চাওয়ার অধিকার আছে ৷’’
এই অবস্থায় প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্যের নেতামন্ত্রীরা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এবং হচ্ছেনও ৷ কিন্তু, কোনও ফল না-হওয়ায় এবার বিধানসভায় প্রাইভেট বিল এনে কেন্দ্রের উপর চাপ তৈরির চেষ্টা করছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার ৷ কিন্তু, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে, তা এত সহজে হবে বলে মনে করছে না রাজনীতিকরা ৷ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিচার রুখতে না-পারলেও, হইহট্টগোল করে বিলম্ব সৃষ্টির চেষ্টা করতেই পারেন শুভেন্দু অধিকারী ৷