কলকাতা, 19 অগস্ট: সাগরদিঘির বদলা নিলেন অধীর চৌধুরী ৷ তৃণমূলের অন্যতম প্রধান সংখ্যালঘু মুখ তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ঘরে ভাঙন ধরিয়ে তাঁর জামাইকে কংগ্রেসে টানলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ৷ শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস কার্যালয় বিধানভবনে অধীররঞ্জন চৌধুরীর উপস্থিতিতে কংগ্রেসে যোগ দেন ফিরহাদ হাকিমের জামাই ইয়াসির হায়দার ৷
এদিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির হাত থেকে কংগ্রেসের দলীয় পতাকা তুলে নেন ইয়াসির ৷ কংগ্রেসে যোগ দিয়েই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন তিনি । মাস কয়েক আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন এরাজ্যে হাত শিবিরের একমাত্র বিধায়ক সাগরদিঘির বাইরন বিশ্বাস ৷ মনে করা হচ্ছে এরই পালটা এবার তৃণমূলের অন্দরে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ৷
2019 সাল পর্যন্ত ইয়াসির হায়দার তৃণমূল কংগ্রেসের যুব শাখার স্টেট সেক্রেটারি ছিলেন । তারপর আচমকাই তাঁকে সেই পথ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন । কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর এদিন ইয়াসির হায়দার বলেন,"কাজ করার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। তৃণমূল যুব দলে ছিলাম । অধীর দা'র নেতৃত্বে কাজ করার ইচ্ছা ছিল । আমি ফিরহাদ হাকিমের জামাই । আমি রাজনৈতিক নেতার থেকে বেশি সমাজকর্মী বলে মনে করি নিজেকে । মানুষের সঙ্গে থেকে কাজ করতে চাই আমি । আমি তোলাবাজি বা দুর্নীতির সঙ্গে নেই । তাও আমার নাম সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল দলের যুব স্টেট সেক্রেটারি পদ থেকে।"
এদিন ইয়াসির আরও জানান, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের জন্ম তাই এই দলের প্রতি তাঁর অনুপ্রেরণা আছে। তাঁর কথায়, "রাজনীতি করি তাই টলিউডে যেতে পারিনি, তাই টিকিট পাইনি । কিন্তু যে সারাক্ষণ পার্টির জন্য কাজ করে তাঁকেই টিকিট দেওয়া উচিত। টিকিটের জন্য আমি কংগ্রেসে যোগ দিইনি। পরিবার আর রাজনীতি আলাদা । দুজনের আদর্শ আলাদা ।"
আরও পড়ুন: বিজেপি-তৃণমূল কাউন্সিলরদের বচসা, কলকাতা কর্পোরেশনে হাতাহাতি
তিনি কেন বিজেপিতে যোগ দিলেন না এই প্রসঙ্গে ইয়াসির জানিয়েছেন, তিনি মন্দির-মসজিদ নিয়ে রাজনীতি করতে পারবেন না ৷ ফলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর মাথায় আসেনি ৷ তবে ফিরহাদ হাকিমকে দেখেই যে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন, তাও জানিয়েছেন ইয়াসির হায়দার ৷ তবে ফিরহাদের সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক নীতি ও আদর্শ এখন আলাদা বলেও দাবি তাঁর ৷
সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন । সেই প্রসঙ্গ তুলে অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে প্রশ্ন করা তিনি বলেন, "কোনও পালটা নয় । আদর্শগত কারণেই উনি এসেছেন । আমরা বদলার রাজনীতি করি না । সকলের জন্য কংগ্রেসের দরজা খোলা । কংগ্রেস বদলার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় । "
তবে এরাজ্যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস কটি আসনে লড়বে সেই প্রসঙ্গে অধীর জানান, সেটা সময় বলবে ৷ তাঁর কথায়, তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 42 কেন 420টি আসনেও লড়তে পারেন তাঁর ব্যাপার, কিন্তু কংগ্রেসেরও এরাজ্যে আসন রয়েছে সেটাও মাথায় রাখতে হবে ৷ ফিরহাদ হাকিমের জামাই ছাড়াও হাওড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতৃত্ব অধীররঞ্জন চৌধুরীর হাত থেকে কংগ্রেস পতাকা নিয়ে যোগদান করেন এই দলে ।