কলকাতা , 14 জুন : কোরোনা আবহে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ স্কুল , কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । দীর্ঘদিনের এই লকডাউন যে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলেছে তা আগেই আঁচ করা গেছিল । তার উপর ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা । এইসব দিকগুলির কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে পড়ুয়াদের জন্য আগেই কাউন্সেলিং প্রোগ্রাম চালু করেছিল পুরুলিয়ার সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় । কিন্তু , এবার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নয় , রাজ্যের সব পড়ুয়া কেমন আছেন তার সার্বিক চিত্রের খোঁজে সমীক্ষা শুরু করল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগ । গতকাল থেকেই এই সমীক্ষা শুরু হয়েছে বলে জানান সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর ।
পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এই সমীক্ষার বিষয়ে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর বলেন , " আমরা পড়ুয়া স্তরে একটা সমীক্ষা শুরু করেছি । যেখানে এই কোরোনা অতিমারি এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলা লকডাউনে পড়ুয়াদের আশঙ্কা , অনিশ্চয়তা , ইতিবাচক-নেতিবাচক প্রভাব , অ্যাডজাস্টমেন্ট এবং জীবন সন্তুষ্টির বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগ থেকে এই সমীক্ষা চালু করা হয়েছে । গুগল সার্ভের মাধ্যমে এটা করা হচ্ছে । কলেজ , বিশ্ববিদ্যালয় , এমনকী স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন ।"
সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছরের ইন্ট্রিগ্রেটেড সাইকোলজি প্রোগ্রাম আছে । যাতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও P.hD ডিগ্রি একসঙ্গে করতে পারেন পড়ুয়ারা । সেই বিভাগ থেকে আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল । এবার তাঁরাই ছাত্রসমাজের মানসিক অবস্থা নিয়ে এই সমীক্ষা শুরু করেছে । এই সমীক্ষা করার উদ্দেশ্য নিয়ে দীপক কর বলেন , " আমরা চাইছি এই সময়ে পড়ুয়া সমাজের মানসিক অবস্থা যাচাই করা এবং তার রেমেডি করা । গোটা ব্যাপারটা একটা আদান-প্রদানের মাধ্যমে করতে চাইছি । আমরা যেমন , পড়াশোনার জিনিসপত্র আদান-প্রদান করি , তেমনি মনস্তাত্ত্বিক দিকটাও যাতে আদান-প্রদান করতে পারি , ওদের মনের কথা বুঝতে পারি ও সমস্যা অনুযায়ী তার সমাধান করতে পারি তার জন্যই এই প্রকল্পটি শুরু করা হয়েছে । এই সার্ভের জন্য আমরা গুগলে লিঙ্ক দিয়েছি । আমরা সমীক্ষায় পাওয়া প্রত্যেকটা তথ্য ধরে ধরে ই-মেইল, ফোনের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করব ।"
এছাড়া , ছাত্রসমাজের মানসিক অবস্থার একটা সার্বিক চিত্র পাওয়া যাবে এই সমীক্ষার মধ্যে দিয়ে । এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন , " আমরা একটা সার্বিক চিত্র পাব । গোপনীয়তা রক্ষা করে আমরা তা রিপোর্ট আকারেও প্রকাশ করব । তার মাধ্যমে সার্বিকভাবে ছাত্রসমাজের মনস্তাত্ত্বিক চিত্রটা ফুটে উঠবে । এই মাধ্যমে আমাদের যে নীতি প্রণয়নকারীরা আছেন তাঁদের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সুবিধা হবে । "
তবে, কোনও অবস্থাতেই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা হবে না । তার উল্লেখও রয়েছে সমীক্ষায় । দীপক কর বলেন , " আমরা একজন ব্যক্তির তথ্যের গোপনীয়তা সবদিক থেকে সুরক্ষিত রাখব । রিপোর্ট প্রকাশ হলেও সেখানে কারও নাম বা ব্যক্তিগত তথ্যের উল্লেখ থাকবে না । "
