কলকাতা, 24 মার্চ: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে শান্তনু বন্দোপাধ্যায়কে 4 এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল ব্য়াংকশাল আদালত। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Shantanu Banerjee at Bankshall Court) ইডি-র হেফাজতের মেয়াদ শেষে এদিন নগর দায়রা আদালতে তোলা হয়। আদালতে ইডি শান্তনুর জামিনের তীব্র বিরোধীতা করে ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, শান্তনুকে জামিন দিলে তাঁর যে বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলছে ক্রমে তা চাপা পড়ে যাবে ৷ এরপরই শান্তনুর জামিন খারিজ করেন বিচারক ৷ ইডি-র দাবি, কেস ডাইরিতে একাধিক প্রভাবশালী নাম রয়েছে ৷ তবে তদন্তের সাপেক্ষে তাদের নাম এখনই বলতে নারাজ তারা ৷
এদিন আদালতে ইডি জানায়, শান্তনু বন্দোপাধ্যায়ের বিপুল বেনামি সম্পত্তি রয়েছে ৷ তাঁকে জামিন দিলে পুরো বিষয়টিই ধামাচাপা পড়ে যাবে । শান্তনুকে প্রয়োজনে বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হোক বলে জোড়াল সওয়াল করেন ইডি-র আইনজীবী। পাশাপাশি এদিন আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রসঙ্গও টেনে আনেন ইডির আইনজীবীরা ৷ তাঁদের কথায়, "এই দুর্নীতির প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, আর এঁরা হচ্ছেন ছাত্র। প্রকৃতির নিয়মে বসন্তের পর তীব্র গরম আসে, তারপর আসে শীত। একটু ধৈর্য ধরুন, তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে। আমরা দ্বিতীয় ধাপে রয়েছি। আমরা রামধনু দেখতে পাচ্ছি।"
উল্লেখযোগ্য়ভাবে, কেস ডাইরিতে একাধিক প্রভাবশালী নাম রয়েছে বলেও এদিন জানায় ইডি ৷ তবে তদন্তের সাপেক্ষে সেই প্রভাবশালীর নাম এখনই আদালতে প্রকাশ করা সম্ভব নয় বলেও জানান ইডি-র আইনজীবীরা ৷ তবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, অয়ন শীলকে গ্রেফতার করে অনেক তথ্যই তাদের হাতে এসেছে। সময়ের সঙ্গে এবং তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে সেসব প্রকাশ্য়ে আনা হবে। ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলের হাত ধরে বেনামী কোম্পানি তৈরি করা করা থেকে শুরু করে তার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা হয়েছে বিভিন্নভাবে।
অন্যদিকে শান্তনুর আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলের কিডনির জটিল সমস্যা রয়েছে। যার জন্য় তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হোক। শান্তনু তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করবেন বলেও জানান তাঁর আইনজীবী। কিডনির চিকিৎসার যাবতীয় রিপোর্টও আদালতে জমা দেন শান্তনুর আইনজীবী। উল্লেখ্য এর আগে নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে যে দ্বিতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট ইডি পেশ করেছে, তাতে শান্তনুকে, কুন্তল ঘোষের 'গুরু' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবশালী যোগ কুন্তলের থেকেও বেশি ছিল বলেই ইডি-র তদন্তে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: মোদির 'নতুন ভারতে' গণতন্ত্রের নয়া অবনমন, রাহুলের সাংসদ পদ খারিজে বার্তা মমতার
এদিন বিচারক সমস্ত নথি খতিয়ে দেখার পর নির্দেশে জানান, এটা পরিস্কার যে, আর্থিক দুর্নীতিতে শান্তনু বন্দোপাধ্যায় অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। আরও কত জন প্রভাবশালী এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সে ব্যাপারে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তথ্যও রয়েছে। যার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে বলেই মনে করেন বিচারক। তবে প্রেসিডেন্সি জেল সুপারকে তারঁ কিডনি জনিত অসুখের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যাবস্থা করতেও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।