কলকাতা, 20 এপ্রিল: নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি 2020 বাতিলের জন্য আগেই আন্দোলন, মিছিল, বিক্ষোভ সংঘটিত করেছিল এসএফআই। কিন্তু, তারপরও রদ করা গেল না। এরাজ্যেও ঘুরিয়ে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য রাজ্য সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে দাবি এসএফআইয়ের। গঠন করা হয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটিও। সেই কমিটির শীর্ষে রাখা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে। আজ বৃহস্পতিবার এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির তরফে দল বেঁধে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে যাওয়া হবে।
নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি 2020 বাতিলের দাবি জানানো হবে বলে জানান, এসএফআই পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। তাঁর আগে গোলপার্ক থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত একটি মিছিলও হবে। যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের থেকে এসএফআই কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত থাকবেন।
কোন ইস্যুতে বিক্ষোভ মিছিল:
এসএফআইয়ের বক্তব্য, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সর্বনাশা শিক্ষানীতি হুবহু মেনে নিচ্ছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। সম্প্রতি ইউজিসি'র নির্দেশিকা অনুযায়ী রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন করে সাজানোর জন্য কমিটি বানিয়েছে তৃণমূল সরকার। সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "বড় লোকদের স্বার্থে, কর্পোরেটদের স্বার্থে দুই সরকার গরীব মানুষের বিরূদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করছে। চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি চালু হলে কলেজ ড্রপ আউট বাড়বে। শিক্ষায় বেসরকারি পুঁজি ঢুকলেই পড়াশোনার খরচ বাড়বে।
লাখ লাখ টাকা খরচ করে বড়লোকের ছেলে মেয়েরা নানান কোর্সে ভরতি হবে। আর মেধা থাকলেও টাকার অভাবে ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে সাধারণ খেটে খাওয়া পরিবারের পড়ুয়ারা। শুধু তাই নয়, আজ ইতিহাস বদলে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষায় মারাত্মক আকারে গৈরিকিকরণ চলছে। ধর্মের সুঁড়সুঁড়ি দিয়ে ছাত্রাবস্থা থেকেই পড়ুয়াদের বিপথে চালিত করার চক্রান্ত চলছে। আর পুরো পদ্ধতিটাই চলছে আরএসএস বিজেপির অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে। যার বিরুদ্ধে বামপন্থীরা আগেও ছিল, আজও আছে। পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তো বিজেপির থেকে আলাদা নয়, ফলে এরাজ্যেও আরএসএস এর কথা চলছে। তার বিরুদ্ধে আজ গোলপার্ক থেকে মিছিল হবে।"
আরও পড়ুন: জাতীয় শিক্ষানীতি 2023, কী বলছেন পড়ুুয়া-শিক্ষক ?
তিনি আরও জানান, যাদবপুর 8বি'তে গিয়ে সভা করে শেষ হবে। দুপুর 2টোর সময়ে রাজ্য সরকারের কমিটির প্রধান ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে আমাদের মিটিং হবার কথা ওনার দফতরে। আমাদের প্রতিনিধিদল মিছিলে যোগদান করবে, ও 8বি'র সভাতে থাকবে ৷ গত 11 এপ্রিল উত্তর 24 পরগনার জেলা পরিষদ অভিযানের পর বেশ কয়েকজন ডিওয়াইএফআই ও এসএফআই কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আজও জেলে আছে। তাদের মধ্যে তিন জনের বিরুদ্ধে আবার শ্লীলতাহানির মামলা দেওয়া হয়েছে। গতকাল আরও 7 দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। আজকের মিছিলে এই ইস্যুটিও থাকবে। সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা আগেও দাবি করেছি ধৃত এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই কর্মীদের নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে। আজও তাই বলছি। পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়েছে। কারণ, শাসকের চুরি, দুর্নীতি, বঞ্চনার বিরূদ্ধে এরাই আন্দোলন গড়ে তুলেছিল।"