বজবজ, 6 নভম্বর : প্রতিবছর দীপাবলিতে তাঁর উপস্থিতিতে তুবড়ি প্রতিযোগিতা হত এলাকায় । ছোট-বড় সমস্ত পুজোর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন প্রয়াত পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় । এবছর দীপাবলির মাঝে তাঁর চলে যাওয়ায় দিনের আলোতেও অন্ধকার নেমেছে তাঁর শৈশবের সারেঙ্গাবাদে ৷
এক প্রতিবেশী বিপ্লব হালদার জানালেন, টিভিতে তাঁর মৃত্যুর খবর শুনেছিলেন ৷ রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়লেন সাংবাদিকের সামনেই ৷ তিনি বললেন, "আমাদের ভাষা হারিয়ে গিয়েছিল ৷ বলার কিছু নেই ৷" সংবাদমাধ্যমে অরূপ বিশ্বাস আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য শোনার পর এলাকাবাসী পরিষ্কার বুঝে গিয়েছিলেন তাঁদের প্রিয় সুব্রতদা চলে গিয়েছেন ৷
প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে একদিন গ্রামের বাড়ি সারেঙ্গাবাদে আসতেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৷ ছোটবেলার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে চায়ের দোকানে বসে চলত দেদার আড্ডা । বজবজের এই গ্রামের পৈতৃক ভিটে থেকে রাজনৈতিক জীবনের পথ চলা শুরু তাঁর । যখনই আসতেন, এলাকাবাসীর খোঁজ নিতেন, বহু মানুষের সমস্যার কথা শুনে সমাধানের ব্যবস্থা করতেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় ।
আরও পড়ুন : Subrata Mukherjee : সুব্রত আর কখনও মামারবাড়ি আসবেন না, আক্ষেপ মণ্ডলগ্রামের
এলাকায় মাস্টারমশাই হিসেবেও তাঁর যথেষ্ট নামডাক রয়েছে । কারণ কলেজ ছাড়ার পর তিনি এলাকার বহু ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াতেন । প্রতিবেশী তথা রাজ্য তৃণমূল কমিটির সদস্য প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "সুব্রতদা আমাদের বাড়ির মাস্টারমশাই ছিলেন ৷ সেই সুবাদে বাড়িতে ভাই, বোন, দাদা, প্রত্যেককেই পড়িয়েছেন সুব্রতদা ৷" তিনি মন্ত্রী হওয়ার পরেও সেই প্রভাব পড়েনি আন্তরিক সম্পর্কে ৷ তিনি তাঁদের পরিবারের একজন হয়ে উঠেছিলেন জানালেন প্রদীপবাবু ৷ শেষ বার বিজয়া দশমীর পরদিন সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই অঞ্চলে বিজয়া সম্মিলনীতে অংশ নিতে এসেছিলেন ৷ তারপর হাসপাতালে থাকাকালীনই খোঁজ নিয়েছিলেন এলাকায় কালীপুজোর প্রস্তুতি কেমন চলছে ৷ প্রতিবছর কালীপুজোয় এখানে এসে বাজি পোড়াতেন তাঁদের দাদা ৷ তাঁর উদ্যোগে এখানে তুবড়ি প্রতিযোগিতা হত, স্মৃতিচারণ করলেন প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই অঞ্চলের কলেজে প্রেসিডেন্সি কলেজের সমান মানের একটি ল্যাবরেটরি আছে, যা পঞ্চায়েত মন্ত্রীর উদ্যোগেই তৈরি হয়েছে ৷
তাই বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল, আক্ষেপ করলেন প্রদীপবাবু ৷ এভাবে তাঁর চলে যাওয়া মানতে পারছে না সারেঙ্গাবাদ ৷