ETV Bharat / state

উত্তরপত্র 'ফাঁস', যাদবপুরের পরীক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ - Kolkata

অভ্র সেন নামে অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক মাস কমিউনিকেশন বিভাগের একজন রিসার্চ স্কলার ও পরীক্ষকও । গতকাল ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।

ju
author img

By

Published : Nov 2, 2019, 10:48 PM IST

কলকাতা, 2 নভেম্বর : উত্তরপত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের এক অতিথি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে । অভ্র সেন নামে অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক মাস কমিউনিকেশন বিভাগের একজন রিসার্চ স্কলার ও পরীক্ষকও । গতকাল বিষয়টি সামনে আসতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান পড়ুয়ারা । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । লিখিত অভিযোগ করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের তরফ থেকেও । তারপর গতকাল গভীর রাতে জয়দীপ দাস নামে মাস কমিউনিকেশনের যে পড়ুয়ার উত্তরপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ফাঁস হয়েছে তিনিও পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ।

ঠিক কী ঘটেছিল?

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া জয়দীপ দাস বলেন, "31 অক্টোবর দুপুর 1টা নাগাদ বীরেন্দ্র তরফদার নামে একজনের কাছ থেকে একটা মেইল আসে আমার ও আরও চার-পাঁচজনের কাছে । তাঁকে আমরা কেউ চিনি না । মেইলটা খুলে আমরা দেখি 2018 সালের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্র পাঠানো হয়েছে । অভ্রদার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটও পাঠানো হয়েছে । সেখানে দেখা যাচ্ছে অভ্রদা বক্তব্য রাখছে, ওরা আন্দোলন করছে । ওদের দাবাতেই আমাকে এগুলো এগুলো করতে হবে । আমি এগুলো করেছি । দেখো কী ভাবে টাইট দিতে হয় আমি জানি । এবারে ওদের মধ্যে ভাঙন ধরবে নম্বর কম বেশি নিয়ে । এই চ্যাটের সত্যতা নিয়ে অভ্রদা প্রশ্ন তুললেও উত্তরপত্রের সত্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই । কারণ ওই হাতের লেখাটা আমার । ওই উত্তরপত্রটা আমারই । যেটা কনফিডেন্সিয়াল হওয়ার কথা । অথচ, ফাঁস হয়ে গেছে ।" জয়দীপ দাস বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল হিউম্যানিটিস অ্যান্ড কালচারাল ইনফর্মেটিকসে ডিপ্লোমা করছেন । 2017 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত তিনি মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজ়মে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া ছিলেন যাদবপুরেই । মাস কমিউনিকেশনেরই একজন রিসার্চ স্কলার ও অতিথি অধ্যাপক অভিযুক্ত অভ্র সেন । অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক BJP ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত । রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ জয়দীপের ।

complaint
অভিযোগ পত্র...

বীরেন্দ্র তরফদার নামে ব্যক্তির কাছ থেকে আসা মেইলে যে স্ক্রিনশটগুলি পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, অভ্রদা বলে একজনের সঙ্গে কথা বলছেন কেউ একজন । দেখা যাচ্ছে, বিভাগীয় ঝামেলার বিষয়ে জানতে চান চ্যাটের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি । উত্তরে অভ্রদা লেখেন, 'জয়দীপ নামে একটা ছেলে হঠাৎ ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করা শুরু করেছিল । আরও সাথে সাঙ্গোপাঙ্গ পেয়েছে SFI দলের । সেই নিয়ে মাস কম মুভমেন্ট নাকি আবার ।' ফি কম নিয়ে আন্দোলন কি না জানতে চাইলে অভ্রদা লেখেন, 'ওই ঢঙ যত রাজ্যের । ভরতির সময় সব জেনে শুনে এসে এখন ন্যাকামো আর কী । ওই জয়দীপটাই আসল নাটের গুরু । তবে বেশিদিন আর চলবে না দৌড় ।' তারপরই অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে লাল কালিতে ভরা উত্তরপত্রের ছবি পাঠান অভ্রদা । সেগুলো কী জানতে চাইলে অভ্রদা লেখেন, 'এটা জয়দীপের IC নামে পেপারের অ্যানসার স্ক্রিপ্ট । এমন চেপেছি মার্কস আমার পার্টে জব্দ হবেই ৷' তারপর তিনি এই কাজটা কী করে করলেন তার ব্যাখ্যাও দেন চ্যাটে অভিযুক্ত অধ্যাপক ।

নম্বর নিয়ে দলের মধ্যে ভাঙন ধরবে বলেও চ্যাটে মন্তব্য করেন অভ্রদা । তিনি লিখেছেন, 'পরীক্ষার নম্বর এমন পাবে যাতে ওদের নিজেদের দলে নম্বরের জন্য ভাঙন ধরবে । এতে বেঠিকের কিছু নেই ৷' প্রত্যুত্তরে যখন চ্যাটের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যাক্তি লেখেন, 'কিন্তু দাদা একটা ছেলের কেরিয়ার নিয়ে এটা ঠিক নয়', তখন অভ্রদা লেখেন, 'কেরিয়ার নিয়ে এত চিন্তা থাকলে ওর তবে এত পাকামো মেরে আন্দোলন করতে আসা উচিত হয়নি ৷ যখন করেছে তখন পস্তাতে হবে ৷ এদের এরম করেই টাইট রাখতে হয় ৷'

মেইল পাওয়ার পরপরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন পড়ুয়ারা । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । লিখিত অভিযোগ করে আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ও জয়দীপ দাস নামে যে ছাত্রের উত্তরপত্র ফাঁস হয়েছে তিনিও । অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত অভ্র সেনকে এই বিষয়ে তদন্ত শেষের আগে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । এ ছাড়া, মাস কমিউনিকেশনের ছাত্রদের তরফ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, দ্বিতীয় সিমেস্টারের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্রগুলো পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, পরের সিমেস্টারের উত্তরপত্রগুলো ডিনের তত্ত্বাবধানে নিয়ামক বিভাগের অধীনে দেখা হবে কোনও প্রকার অস্বচ্ছতা এড়াতে । এমনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন জয়দীপ দাস ।

কলকাতা, 2 নভেম্বর : উত্তরপত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের এক অতিথি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে । অভ্র সেন নামে অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক মাস কমিউনিকেশন বিভাগের একজন রিসার্চ স্কলার ও পরীক্ষকও । গতকাল বিষয়টি সামনে আসতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান পড়ুয়ারা । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । লিখিত অভিযোগ করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের তরফ থেকেও । তারপর গতকাল গভীর রাতে জয়দীপ দাস নামে মাস কমিউনিকেশনের যে পড়ুয়ার উত্তরপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ফাঁস হয়েছে তিনিও পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ।

ঠিক কী ঘটেছিল?

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া জয়দীপ দাস বলেন, "31 অক্টোবর দুপুর 1টা নাগাদ বীরেন্দ্র তরফদার নামে একজনের কাছ থেকে একটা মেইল আসে আমার ও আরও চার-পাঁচজনের কাছে । তাঁকে আমরা কেউ চিনি না । মেইলটা খুলে আমরা দেখি 2018 সালের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্র পাঠানো হয়েছে । অভ্রদার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটও পাঠানো হয়েছে । সেখানে দেখা যাচ্ছে অভ্রদা বক্তব্য রাখছে, ওরা আন্দোলন করছে । ওদের দাবাতেই আমাকে এগুলো এগুলো করতে হবে । আমি এগুলো করেছি । দেখো কী ভাবে টাইট দিতে হয় আমি জানি । এবারে ওদের মধ্যে ভাঙন ধরবে নম্বর কম বেশি নিয়ে । এই চ্যাটের সত্যতা নিয়ে অভ্রদা প্রশ্ন তুললেও উত্তরপত্রের সত্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই । কারণ ওই হাতের লেখাটা আমার । ওই উত্তরপত্রটা আমারই । যেটা কনফিডেন্সিয়াল হওয়ার কথা । অথচ, ফাঁস হয়ে গেছে ।" জয়দীপ দাস বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল হিউম্যানিটিস অ্যান্ড কালচারাল ইনফর্মেটিকসে ডিপ্লোমা করছেন । 2017 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত তিনি মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজ়মে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া ছিলেন যাদবপুরেই । মাস কমিউনিকেশনেরই একজন রিসার্চ স্কলার ও অতিথি অধ্যাপক অভিযুক্ত অভ্র সেন । অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক BJP ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত । রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ জয়দীপের ।

complaint
অভিযোগ পত্র...

বীরেন্দ্র তরফদার নামে ব্যক্তির কাছ থেকে আসা মেইলে যে স্ক্রিনশটগুলি পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, অভ্রদা বলে একজনের সঙ্গে কথা বলছেন কেউ একজন । দেখা যাচ্ছে, বিভাগীয় ঝামেলার বিষয়ে জানতে চান চ্যাটের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি । উত্তরে অভ্রদা লেখেন, 'জয়দীপ নামে একটা ছেলে হঠাৎ ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করা শুরু করেছিল । আরও সাথে সাঙ্গোপাঙ্গ পেয়েছে SFI দলের । সেই নিয়ে মাস কম মুভমেন্ট নাকি আবার ।' ফি কম নিয়ে আন্দোলন কি না জানতে চাইলে অভ্রদা লেখেন, 'ওই ঢঙ যত রাজ্যের । ভরতির সময় সব জেনে শুনে এসে এখন ন্যাকামো আর কী । ওই জয়দীপটাই আসল নাটের গুরু । তবে বেশিদিন আর চলবে না দৌড় ।' তারপরই অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে লাল কালিতে ভরা উত্তরপত্রের ছবি পাঠান অভ্রদা । সেগুলো কী জানতে চাইলে অভ্রদা লেখেন, 'এটা জয়দীপের IC নামে পেপারের অ্যানসার স্ক্রিপ্ট । এমন চেপেছি মার্কস আমার পার্টে জব্দ হবেই ৷' তারপর তিনি এই কাজটা কী করে করলেন তার ব্যাখ্যাও দেন চ্যাটে অভিযুক্ত অধ্যাপক ।

নম্বর নিয়ে দলের মধ্যে ভাঙন ধরবে বলেও চ্যাটে মন্তব্য করেন অভ্রদা । তিনি লিখেছেন, 'পরীক্ষার নম্বর এমন পাবে যাতে ওদের নিজেদের দলে নম্বরের জন্য ভাঙন ধরবে । এতে বেঠিকের কিছু নেই ৷' প্রত্যুত্তরে যখন চ্যাটের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যাক্তি লেখেন, 'কিন্তু দাদা একটা ছেলের কেরিয়ার নিয়ে এটা ঠিক নয়', তখন অভ্রদা লেখেন, 'কেরিয়ার নিয়ে এত চিন্তা থাকলে ওর তবে এত পাকামো মেরে আন্দোলন করতে আসা উচিত হয়নি ৷ যখন করেছে তখন পস্তাতে হবে ৷ এদের এরম করেই টাইট রাখতে হয় ৷'

মেইল পাওয়ার পরপরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন পড়ুয়ারা । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । লিখিত অভিযোগ করে আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ও জয়দীপ দাস নামে যে ছাত্রের উত্তরপত্র ফাঁস হয়েছে তিনিও । অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত অভ্র সেনকে এই বিষয়ে তদন্ত শেষের আগে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । এ ছাড়া, মাস কমিউনিকেশনের ছাত্রদের তরফ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, দ্বিতীয় সিমেস্টারের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্রগুলো পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, পরের সিমেস্টারের উত্তরপত্রগুলো ডিনের তত্ত্বাবধানে নিয়ামক বিভাগের অধীনে দেখা হবে কোনও প্রকার অস্বচ্ছতা এড়াতে । এমনই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন জয়দীপ দাস ।

Intro:
কলকাতা, ২ নভেম্বর: উত্তরপত্রের মতো সংবেদনশীল নথি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের এক অতিথি অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। অভ্র সেন নামের অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক মাস কমিউনিকেশন বিভাগের একজন রিসার্চ স্কলার ও পরিক্ষকও। গতকাল বিষয়টি সামনে আসতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান পড়ুয়ারা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকালই ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। লিখিত অভিযোগ করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন তরফ থেকেও। তারপরে গতকাল গভীর রাতে জয়দীপ দাস নামের মাস কমিউনিকেশনের যে পড়ুয়ার উত্তরপত্র হোয়াটসঅ্যাপে ফাঁস হয়েছে তিনিও পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।

Body:ঠিক কী ঘটেছিল? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া জয়দীপ দাস বলেন, "গত ৩১ অক্টোবর দুপুর ১২:৫৪ নাগাদ বিরেন্দ্র তরফদার নামের একজনের কাছ থেকে একটা মেল আসে আমার ও আরো চার-পাঁচজনের কাছে। তাঁকে আমরা কেউ চিনি না। মেলটা খুলে আমরা দেখি ২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্র পাঠানো হয়েছে। অভ্র দার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশটও পাঠানো হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে অভ্র দা বক্তব্য রাখছে, ওরা আন্দোলন করছে। ওদের দাবাতেই আমাকে এগুলো এগুলো করতে হবে। আমি এগুলো করেছি। দেখ কীভাবে টাইট দিতে হয় আমি জানি। এবারে ওদের মধ্যে ভাঙন ধরবে নম্বর কম বেশি নিয়ে। এই চ্যাটের সত্যতা নিয়ে অভ্র দা প্রশ্ন তুললেও উত্তরপত্রের সত্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। কারণ ওই হাতের লেখাটা আমার। ওই উত্তরপত্রটা আমারই। যেটা কনফিডেন্সিয়াল হওয়ার কথা। অথচ, ফাঁস হয়ে গেছে।" জয়দীপ দাস বর্তমানে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিট্যাল হিউম্যানিটিস অ্যান্ড কালচারাল ইনফর্মেটিকসে ডিপ্লোমা করছেন। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিনি মাস কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজমে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া ছিলেন যাদবপুরেই। মাস কমিউনিকেশনেরই একজন রিসার্চ স্কলার ও অতিথি অধ্যাপক অভিযুক্ত অভ্র সেন। অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ জয়দীপের।

বিরেন্দ্র তরফদার নামের ব্যক্তির কাছ থেকে আসা মেলে যে স্ক্রিনশট গুলি পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, অভ্র দা বলে একজনের সঙ্গে কথা বলছেন কেউ একজন। দেখা যাচ্ছে, বিভাগীয় ঝামেলার বিষয়ে জানতে চান চ্যাটের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি। উত্তরে অভ্র দা লেখেন, 'জয়দীপ নামের একটা ছেলে হঠাৎ ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করা শুরু করেছিল। আরও সাথে সাঙ্গোপাঙ্গো পেয়েছে কটা ভাটের SFI দলের। সেই নিয়ে মাস কম মুভমেন্ট নাকি আবার।' ফি কম নিয়ে আন্দোলন কিনা জানতে চাইলে অভ্র দা লেখেন, 'ওই ঢঙ যত রাজ্যের। ভর্তির সময় সব জেনে শুনে এসে এখন ন্যাকামো মারা আর কী। ওই জয়দীপটাই আসল নাটের গুরু। তবে বেশিদিন আর চলবে না দৌড়।' তারপরেই অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে লাল কালিতে ভরা উত্তরপত্রের ছবি পাঠান অভ্র দা। সেগুলো কী জানতে চাইলে অভ্র দা লেখেন, 'এটা জয়দীপের IC নামের পেপারের অ্যানসার স্ক্রিপ্ট। এমন চেপেছি মার্কস আমার পার্টে জব্দ হবেই'। তারপরে তিনি এই কাজটা কী করে করলেন তার ব্যাখ্যাও দেন চ্যাটে অভিযুক্ত অধ্যাপক।

নম্বর নিয়ে দলের মধ্যে ভাঙন ধরবে বলেও চ্যাটে মন্তব্য করেন অভ্র দা। তিনি লিখেছেন, 'পরীক্ষার নম্বর এমন পাবে যাতে ওদের নিজেদের দলে নম্বরের জন্য ভাঙন ধরবে। এতে বেঠিকের কিছু নেই'। প্রত্যুত্তরে যখন চ্যাটের অপরপ্রান্তে থাকা ব্যাক্তি লেখেন, 'কিন্তু দাদা একটা ছেলের কেরিয়ার নিয়ে এটা ঠিক নয়', তখন অভ্র দা লেখেন, 'কেরিয়ার নিয়ে এতো চিন্তা থাকলে ওর তবে এতো পাকামো মেরে আন্দোলন করতে আসা উচিত হয়নি', 'যখন করেছে তখন পস্তাতে হবে', 'এদের এরম করেই টাইট রাখতে হয়'।

মেল পাওয়ার পর পরই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন পড়ুয়ারা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। লিখিত অভিযোগ করে আর্টস ফ্যাকাল্টি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ও জয়দীপ দাস নামের যে ছাত্রের উত্তরপত্র ফাঁস হয়েছে তিনিও। অভিযোগে ভিত্তিতে অভিযুক্ত অভ্র সেনকে এই বিষয়ে তদন্ত শেষের আগে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া, মাস কমিউনিকেশনের ছাত্রদের তরফ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, দ্বিতীয় সেমিস্টারের ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশনের উত্তরপত্রগুলো পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, পরের সেমিস্টারের উত্তরপত্রগুলো ডিনের তত্ত্বাবধানে নিয়ামক বিভাগের অধীনে দেখা হবে কোনও প্রকার অস্বচ্ছতা এড়াতে। এমনটাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন জয়দীপ দাস।
Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.