কলকাতা, 24 এপ্রিল: এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র নজরে এবার দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি, বরাহনগর, টিটাগর, নিউ ব্যারাকপুর, কাঁচরাপাড়া, উত্তর দমদম-সহ একাধিক পৌরসভা ৷ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি এই সব পৌরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রে দেদার বেনিয়ম হয়েছে। সুতরাং শিক্ষক নিয়োগের তদন্তে নেমে অয়ন শীলের বাড়ি এবং অফিস থেকে পৌরসভার নিয়োগের যে তথ্য ও নথি পেয়েছিল ইডি, এবার ধীরে ধীরে সেদিকেই তদন্তের জাল ছড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷
ইডির দাবি, এই বেআইনি নিয়োগ সম্পন্ন করেছিলেন গ্রেফতার হওয়া প্রোমোটার অয়ন শীল। সম্প্রতি ইডি'র তরফ থেকে আদালতে একটি মুখ বন্ধ খাম জমা দেওয়া হয় ৷ সূত্রের খবর, সেই খামেই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যের এমন সব পৌরসভার নাম রয়েছে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের তরফ থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, সিবিআই চাইলে পৌরসভা নিয়োগের দুর্নীতিরও তদন্ত করতে পারবে। কারণ বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির জাল অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন, সিবিআই চাইলে ইডির রিপোর্টের সূত্র ধরে নতুন এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে পারে।
অন্যদিকে, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্তে নেমে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগ নয়, পাশাপাশি রাজ্যের একাধিক পৌরসভার চাকরি মিলিয়ে বাজার থেকে মোট 200 কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে অয়ন শীল। তদন্তকারীদের দাবি, এই আত্মসাৎ করা কোটি কোটি টাকা রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে পৌরসভার একাধিক আধিকারিকদের অ্যাকাউন্টেও পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল অয়ন শীলের উপরে। এখন তদন্তকারীরা জানতে চাইছেন, শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ড নয়, এর সঙ্গেই পৌরসভাতেও ব্যাপক হারে দুর্নীতি করে বিভিন্ন মানুষকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছে অয়ন।
আরও পড়ুন: নজরে বিরোধী জোট, মমতা-নীতীশ বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে অয়ন শীলের এখনও পর্যন্ত 16টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এছাড়াও সোমবার সল্টলেকে সিজিও কমপ্লেক্সে অয়নের সংস্থার একজন কর্মী এবং অয়নের গাড়ি চালককে তলব করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অয়ন শীল কাদের সঙ্গে দেখা করতেন তার বিস্তারিত তথ্য অয়নের গাড়ির চালক এবং তাঁর সংস্থার আধিকারিকরা দিতে পারেন। ফলে এক্ষেত্রে অয়নের গাড়ি চালক এবং সংস্থার কর্মীর বয়ান রেকর্ড করবেন তদন্তকারীরা।