ETV Bharat / state

হাতের লেখায় ধরা পড়ে অপরাধী মন, বাস্তবের ফেলুদা-ব্যোমকেশের খোঁজ

Private Detective: মধ্য কলকাতার অভিরূপ মিত্র যেন বাস্তবের ফেলুদা, কিমবা সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ ৷ তবে কোথায় আলাদা গল্প আর বাস্তব ? জানালেন গোয়েন্দা তথা হস্তলিপিবিদ ৷

private detective
অভিরূপ মিত্র
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 11, 2023, 6:08 PM IST

অভিরূপ মিত্র

কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: “তুমি গোয়েন্দাগিরি করছো, মানুষের মনের অন্ধকার দিক নিয়ে কারবার...৷” সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লা গল্পে বিখ্যাত সিধু জ্যাঠা প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর ফেলু মিত্তিরের প্রশংসায় এই কথাগুলো বলেছিলেন । অপরাধের বিচার বিশ্লেষণ মানেই মানুষের অন্ধকার প্রবৃত্তির উন্মোচন এবং ব্যবস্থা গ্রহণ গোয়েন্দাদের কাজ । বর্তমান সময়ে অপরাধ দমনের জন্য পুলিশ রয়েছে । রয়েছে তাদের গোয়েন্দা বিভাগ । তবুও আম জনতার কাছে প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর বা গোয়েন্দা কথার আমোঘ টান রয়েছে । তাই তো শার্লক হোমস, আগাথা ক্রিস্টি, প্রদোষচন্দ্র মিত্র, ব্যোমকেশ বকসি, কিরীটিরা গল্পের চরিত্র হয়েও আজও একই রকম সমান জনপ্রিয় । কিন্তু এই চরিত্রগুলো কি শুধুই গল্পের চরিত্র নাকি তার বাস্তব ভিত্তি আছে ?থাকলেও তারা কী ভাবে কাজ করেন ? পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থাকলেও প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের প্রয়োজন কী ? এমনই অনেক প্রশ্ন নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিলাম প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরকে । মধ্য কলকাতায় ডিটেকটিভ এজেন্সিতে তাঁর দেখা মিলল । নাম অভিরূপ মিত্র ।

নিজেকে গোয়েন্দা এবং গ্রাফোলজিস্ট বা হস্তলিপিবিদ হিসেবে পরিচয় দেন । গোয়েন্দাগিরির সঙ্গে হাতের লেখার যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করেন । কারণ হাতের লেখায় অপরাধীর মানসিক স্থিতির ইঙ্গিত মেলে । যার মাধ্যমে অপরাধীকে চিহ্নিত করা সহজ হয় । অপরাধীকে শনাক্ত করতে আঙুলের ছাপের ভূমিকা এখন প্রমাণিত । উইলিয়াম জেমস হার্সেল, 1880 সালে ইংল্যান্ডের নেচার পত্রিকায় একটি চিঠি লিখেছিলেন । সেখানে মানুষের হাতের আঙুলের ছাপ দেখে অপরাধী ধরা যে সম্ভব, তা এই চিঠিতে প্রকাশ করেন তিনি । পরবর্তী সময়ে তা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পেয়েছে ।

অভিরূপ মিত্র বলছেন, হাতের লেখা বা গ্রাফোলজির মাধ্যমে অপরাধী চিহ্নিত করার বিষয়টি ভারতে না স্বীকৃতি পেলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বীকৃতি পেয়েছে । তার মাধ্যমে অপরাধী ধরা হয় । এই দেশেও পুলিশ বকলমে গ্রাফোলজির মাধ্যমে অপরাধীকে চিহ্নিত করে । তবে এই পদ্ধতিটি যেহেতু আইনসিদ্ধ নয় এ দেশে, তাই তাতে সরকারি সিলমোহর পড়ে না ।

অভিরূপের কথায়, “একজন মানুষ আত্মহত্যা করার মনস্থ করেছেন ৷ সেইসময় তাঁর সুইসাইড নোটে হাতের লেখা আর তাঁকে গান পয়েন্টে রেখে লেখানো লেখা এক হয় না । তাঁর দু'রকম মানসিক স্থিতি দুটো লেখায় ধরা পড়বেই । তাই দিয়েই শনাক্ত করা সম্ভব । এটা বুঝতে পুলিশ আমাদের বকলমে কোনও কোনও সময়ে সাহায্য নেয় বই কী ৷”

গ্রাফোলজির সঙ্গে অপরাধ তত্ত্বের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করছেন অভিরূপ । কিন্তু এর সঙ্গে গোয়েন্দাগিরি কীভাবে সম্পৃক্ত । অভিরূপ মিত্র বলছেন, গোয়েন্দা গল্প পড়ার নেশাই তাঁকে গোয়েন্দা হয়ে উঠতে অনুপ্রাণিত করেছিল । পেশাগত ভাবে গোয়েন্দা হয়ে ওঠার পরে অভিরূপ মিত্র বুঝতে পারেন অপরাধ দু'রকমের । একটি কগনিজেবল । আরেকটি নন-কগনিজেবল ।

অভিরূপ বলেন, “ইন্ডিয়ান পিনাল কোড অনুসারে অপরাধের মাত্রা নির্ণয় হয় । যেমন বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীর তত্ত্ব তলাশ করা হয় । অনেকেই করেন । এর মধ্যে কোনও অপরাধ নেই । ব্যাংক একটা লোন দিয়েছে । লোন ডিফল্ট হয়েছে । ঋণগ্রহীতার কোন কোন সম্পত্তি রয়েছে তা ব্যাংক জানতে চায় । এটা ক্রাইম বা অপরাধ নয় । ব্যাংক লোকটাকে গ্রেফতার করাতে পারবে না । সে কোনও ফ্রড বা জালিয়াতি করেনি । কিন্তু তাঁর কী কী সম্পত্তি রয়েছে তা ব্যাংক জানতে চায় । আমরা সেই তথ্য সন্ধান করে দিই । আবার কোনও কোম্পানি কোনও একটি ছেলে বা মেয়েকে নিয়োগ করবে । তাঁর অতীত রেকর্ড পেশাদারি জীবনে কী রয়েছে, তা জানার জন্য আমাদের ডাক পড়ে । এগুলো কিন্তু অপরাধ নয় । শুধুই তথ্য তলাশ । তবে কিছু অপরাধ নির্ণয়েরও ডাক পড়ে আমাদের । যেমন জাল দ্রব্য জাল বই ধরা । সেগুলোর জন্য ডাক পড়ে আমাদের । সেই খোঁজখবর বের করে আমাদের যে কোম্পানি বা ব্যক্তি নিয়োগ করেছিল তার হাতে তুলে দিই । এরপর পুলিশ হানা দিয়ে উদ্ধার করে । গ্রেফতার করে । আমাদের কাছে যাঁরা আসেন, তাঁরা নন-কগনিজেবল অফেন্স সমাধান করতেই আসেন ৷”

একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “শার্লস হোমস কিন্তু ডিটেকটিভ এজেন্সি চালাতেন না । তিনি নিজেই ছিলেন ডিটেকটিভ । আজ আমেরিকা ও ইউরোপের বহু দেশে লাইসেন্সড ডিটেকটিভ এজেন্সি রয়েছে । আমাদের দেশে তা নেই । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক লাইসেন্সড সিকিউরিটি এজেন্সি করার অনুমতি দিয়েছে । কিন্তু ডিটেকটিভ এজেন্সিকে দেয়নি । এই নিয়ে চিঠি চাপাটি চলছে । হয়তো হবে ভবিষ্যতে । পুলিশ তাই আমাদের কাছ থেকে সরকারিভাবে সাহায্য নিতে পারে না । আমাদের বন্দুক রাখার অনুমতি নেই । প্রখর রুদ্রের ঠাঁই ঠাঁই ঠাঁই ব্যাপারটা আমাদের নয় ।”

কলকাতায় এখন গোটা কুড়ি গোয়েন্দা রয়েছেন । তাঁরা মক্কেলের ইচ্ছে অনুসারে গোয়েন্দাগিরি করেন । তবে কোনও গোয়েন্দাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোনও কেস হাতে তুলে নেন না । তাই অতি সম্প্রতি কলকাতা শহরে হওয়া পাঁচটি রহস্য মৃত্যুর ব্যাপারে মন অনুসন্ধিৎসু হলেও অভিরূপ মিত্ররা গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রেখেই চুপ করে থাকেন ।

অভিরূপের কথায়, “আমরা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোনও কেস নিতে পারি না । সে ক্ষেত্রে কেসের খরচ কে দেবে । কে আমাদের মক্কেল হবে । এটা তো আমাদের পেশা । শখের গোয়েন্দাগিরি তো নয় । আমরা কী ঘরের টাকা খরচ করে সেই তদন্তটা করব ! তা তো নয় । আমাদের ভূমিকাটা উকিল বা ডাক্তারের মতো ৷”

তাই গোয়েন্দা চরিত্র গল্পের পাতায় যত বেশি ডাকাবুকো, বাস্তবের মাটিতে অনেক বেশি নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকা নরমসরম । তাই গোলকধাম রহস্য, ছিন্নমস্তার অভিশাপ, দুর্গ রহস্য, চিড়িয়াখানা গল্পে ফেলুদা-ব্যোমকেশকে যতই যুক্তির জাল বিছিয়ে তদন্তের সমাধান করতে দেখে আমি-আপনি রোমাঞ্চিত হই, বাস্তবে নামলে তাঁরাও হয়তো এমন নরম সরম নিয়মের জালে বাঁধা চরিত্র হিসেবে প্রতিভাত হতেন ।

আরও পড়ুন:

  1. 'সেরা ব্যোমকেশ, সেরা সত্যবতী ও সেরা অজিতকে পেয়েছি'; দুর্গ রহস্যের পোস্টার লঞ্চে দরাজ সৃজিত
  2. 'ব্যোমকেশ চরিত্রে আর কিছু দেওয়ার নেই', জার্নি শেষ সত্যান্বেষী অনিবার্ণের
  3. সৃজিতের 'ফেলুদা'কে ব্যোমকেশ করতে চেয়েছিলেন ঋতুপর্ণ, স্মৃতির সাগরে ডুব দিলেন টোটা রায়চৌধুরী

অভিরূপ মিত্র

কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: “তুমি গোয়েন্দাগিরি করছো, মানুষের মনের অন্ধকার দিক নিয়ে কারবার...৷” সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লা গল্পে বিখ্যাত সিধু জ্যাঠা প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর ফেলু মিত্তিরের প্রশংসায় এই কথাগুলো বলেছিলেন । অপরাধের বিচার বিশ্লেষণ মানেই মানুষের অন্ধকার প্রবৃত্তির উন্মোচন এবং ব্যবস্থা গ্রহণ গোয়েন্দাদের কাজ । বর্তমান সময়ে অপরাধ দমনের জন্য পুলিশ রয়েছে । রয়েছে তাদের গোয়েন্দা বিভাগ । তবুও আম জনতার কাছে প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর বা গোয়েন্দা কথার আমোঘ টান রয়েছে । তাই তো শার্লক হোমস, আগাথা ক্রিস্টি, প্রদোষচন্দ্র মিত্র, ব্যোমকেশ বকসি, কিরীটিরা গল্পের চরিত্র হয়েও আজও একই রকম সমান জনপ্রিয় । কিন্তু এই চরিত্রগুলো কি শুধুই গল্পের চরিত্র নাকি তার বাস্তব ভিত্তি আছে ?থাকলেও তারা কী ভাবে কাজ করেন ? পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থাকলেও প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরের প্রয়োজন কী ? এমনই অনেক প্রশ্ন নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিলাম প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটরকে । মধ্য কলকাতায় ডিটেকটিভ এজেন্সিতে তাঁর দেখা মিলল । নাম অভিরূপ মিত্র ।

নিজেকে গোয়েন্দা এবং গ্রাফোলজিস্ট বা হস্তলিপিবিদ হিসেবে পরিচয় দেন । গোয়েন্দাগিরির সঙ্গে হাতের লেখার যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করেন । কারণ হাতের লেখায় অপরাধীর মানসিক স্থিতির ইঙ্গিত মেলে । যার মাধ্যমে অপরাধীকে চিহ্নিত করা সহজ হয় । অপরাধীকে শনাক্ত করতে আঙুলের ছাপের ভূমিকা এখন প্রমাণিত । উইলিয়াম জেমস হার্সেল, 1880 সালে ইংল্যান্ডের নেচার পত্রিকায় একটি চিঠি লিখেছিলেন । সেখানে মানুষের হাতের আঙুলের ছাপ দেখে অপরাধী ধরা যে সম্ভব, তা এই চিঠিতে প্রকাশ করেন তিনি । পরবর্তী সময়ে তা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃতি পেয়েছে ।

অভিরূপ মিত্র বলছেন, হাতের লেখা বা গ্রাফোলজির মাধ্যমে অপরাধী চিহ্নিত করার বিষয়টি ভারতে না স্বীকৃতি পেলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বীকৃতি পেয়েছে । তার মাধ্যমে অপরাধী ধরা হয় । এই দেশেও পুলিশ বকলমে গ্রাফোলজির মাধ্যমে অপরাধীকে চিহ্নিত করে । তবে এই পদ্ধতিটি যেহেতু আইনসিদ্ধ নয় এ দেশে, তাই তাতে সরকারি সিলমোহর পড়ে না ।

অভিরূপের কথায়, “একজন মানুষ আত্মহত্যা করার মনস্থ করেছেন ৷ সেইসময় তাঁর সুইসাইড নোটে হাতের লেখা আর তাঁকে গান পয়েন্টে রেখে লেখানো লেখা এক হয় না । তাঁর দু'রকম মানসিক স্থিতি দুটো লেখায় ধরা পড়বেই । তাই দিয়েই শনাক্ত করা সম্ভব । এটা বুঝতে পুলিশ আমাদের বকলমে কোনও কোনও সময়ে সাহায্য নেয় বই কী ৷”

গ্রাফোলজির সঙ্গে অপরাধ তত্ত্বের সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করছেন অভিরূপ । কিন্তু এর সঙ্গে গোয়েন্দাগিরি কীভাবে সম্পৃক্ত । অভিরূপ মিত্র বলছেন, গোয়েন্দা গল্প পড়ার নেশাই তাঁকে গোয়েন্দা হয়ে উঠতে অনুপ্রাণিত করেছিল । পেশাগত ভাবে গোয়েন্দা হয়ে ওঠার পরে অভিরূপ মিত্র বুঝতে পারেন অপরাধ দু'রকমের । একটি কগনিজেবল । আরেকটি নন-কগনিজেবল ।

অভিরূপ বলেন, “ইন্ডিয়ান পিনাল কোড অনুসারে অপরাধের মাত্রা নির্ণয় হয় । যেমন বিয়ের আগে পাত্র পাত্রীর তত্ত্ব তলাশ করা হয় । অনেকেই করেন । এর মধ্যে কোনও অপরাধ নেই । ব্যাংক একটা লোন দিয়েছে । লোন ডিফল্ট হয়েছে । ঋণগ্রহীতার কোন কোন সম্পত্তি রয়েছে তা ব্যাংক জানতে চায় । এটা ক্রাইম বা অপরাধ নয় । ব্যাংক লোকটাকে গ্রেফতার করাতে পারবে না । সে কোনও ফ্রড বা জালিয়াতি করেনি । কিন্তু তাঁর কী কী সম্পত্তি রয়েছে তা ব্যাংক জানতে চায় । আমরা সেই তথ্য সন্ধান করে দিই । আবার কোনও কোম্পানি কোনও একটি ছেলে বা মেয়েকে নিয়োগ করবে । তাঁর অতীত রেকর্ড পেশাদারি জীবনে কী রয়েছে, তা জানার জন্য আমাদের ডাক পড়ে । এগুলো কিন্তু অপরাধ নয় । শুধুই তথ্য তলাশ । তবে কিছু অপরাধ নির্ণয়েরও ডাক পড়ে আমাদের । যেমন জাল দ্রব্য জাল বই ধরা । সেগুলোর জন্য ডাক পড়ে আমাদের । সেই খোঁজখবর বের করে আমাদের যে কোম্পানি বা ব্যক্তি নিয়োগ করেছিল তার হাতে তুলে দিই । এরপর পুলিশ হানা দিয়ে উদ্ধার করে । গ্রেফতার করে । আমাদের কাছে যাঁরা আসেন, তাঁরা নন-কগনিজেবল অফেন্স সমাধান করতেই আসেন ৷”

একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “শার্লস হোমস কিন্তু ডিটেকটিভ এজেন্সি চালাতেন না । তিনি নিজেই ছিলেন ডিটেকটিভ । আজ আমেরিকা ও ইউরোপের বহু দেশে লাইসেন্সড ডিটেকটিভ এজেন্সি রয়েছে । আমাদের দেশে তা নেই । স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক লাইসেন্সড সিকিউরিটি এজেন্সি করার অনুমতি দিয়েছে । কিন্তু ডিটেকটিভ এজেন্সিকে দেয়নি । এই নিয়ে চিঠি চাপাটি চলছে । হয়তো হবে ভবিষ্যতে । পুলিশ তাই আমাদের কাছ থেকে সরকারিভাবে সাহায্য নিতে পারে না । আমাদের বন্দুক রাখার অনুমতি নেই । প্রখর রুদ্রের ঠাঁই ঠাঁই ঠাঁই ব্যাপারটা আমাদের নয় ।”

কলকাতায় এখন গোটা কুড়ি গোয়েন্দা রয়েছেন । তাঁরা মক্কেলের ইচ্ছে অনুসারে গোয়েন্দাগিরি করেন । তবে কোনও গোয়েন্দাই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোনও কেস হাতে তুলে নেন না । তাই অতি সম্প্রতি কলকাতা শহরে হওয়া পাঁচটি রহস্য মৃত্যুর ব্যাপারে মন অনুসন্ধিৎসু হলেও অভিরূপ মিত্ররা গতিপ্রকৃতির দিকে নজর রেখেই চুপ করে থাকেন ।

অভিরূপের কথায়, “আমরা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোনও কেস নিতে পারি না । সে ক্ষেত্রে কেসের খরচ কে দেবে । কে আমাদের মক্কেল হবে । এটা তো আমাদের পেশা । শখের গোয়েন্দাগিরি তো নয় । আমরা কী ঘরের টাকা খরচ করে সেই তদন্তটা করব ! তা তো নয় । আমাদের ভূমিকাটা উকিল বা ডাক্তারের মতো ৷”

তাই গোয়েন্দা চরিত্র গল্পের পাতায় যত বেশি ডাকাবুকো, বাস্তবের মাটিতে অনেক বেশি নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকা নরমসরম । তাই গোলকধাম রহস্য, ছিন্নমস্তার অভিশাপ, দুর্গ রহস্য, চিড়িয়াখানা গল্পে ফেলুদা-ব্যোমকেশকে যতই যুক্তির জাল বিছিয়ে তদন্তের সমাধান করতে দেখে আমি-আপনি রোমাঞ্চিত হই, বাস্তবে নামলে তাঁরাও হয়তো এমন নরম সরম নিয়মের জালে বাঁধা চরিত্র হিসেবে প্রতিভাত হতেন ।

আরও পড়ুন:

  1. 'সেরা ব্যোমকেশ, সেরা সত্যবতী ও সেরা অজিতকে পেয়েছি'; দুর্গ রহস্যের পোস্টার লঞ্চে দরাজ সৃজিত
  2. 'ব্যোমকেশ চরিত্রে আর কিছু দেওয়ার নেই', জার্নি শেষ সত্যান্বেষী অনিবার্ণের
  3. সৃজিতের 'ফেলুদা'কে ব্যোমকেশ করতে চেয়েছিলেন ঋতুপর্ণ, স্মৃতির সাগরে ডুব দিলেন টোটা রায়চৌধুরী
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.