কলকাতা, 4 এপ্রিল: আধার কার্ড না থাকলে রেশনে খাদ্যশস্য মিলছে না । এই অভিযোগ আর শুনতে চায় না কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক । শুধু তাই নয়, কোনও যোগ্য উপভোক্তাকে রেশন থেকে বঞ্চিত করতে নারাজ সরকার । ঠিক এই কারণেই আধার কার্ড না থাকলেও রেশনে খাদ্যশস্য প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
রেশন ডিলারদের সর্বভারতীয় সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার ফেডারেশনের দাবি, কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রকের সচিব সঞ্জীব চোপড়া জানিয়েছেন রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগের সমস্যা থাকলে বা আঙুলের ছাপ দিতে সমস্যা থাকলেও রেশন কার্ডধারীকে খাদ্যপণ্য দিতে হবে । এমনকী আধার কার্ড না থাকলেও কেউ যাতে রেশন পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয় সে দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে । এই মর্মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের তরফে প্রত্যেকটি রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে নির্দেশ পাঠানো হচ্ছে ৷
রাজ্য খাদ্য দফতরের ডিডিপিএস অজয় ভট্টাচার্য এই প্রসঙ্গে বলেন, "বহু ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক গ্রাহকের হাত নেই । সেটা দুর্ঘটনার কারণেই হোক বা জন্মগত কারণে । তাঁদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়াও সম্ভব নয় । এই সমস্ত ক্ষেত্রে ওই গ্রাহকদের রেশন থেকে কোনওভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না । আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় বহু গ্রাহকের আধার কার্ডই নেই । বা আধার কার্ডের সঙ্গে ফিঙ্গারপ্রিন্টের কোনও মিল নেই । সেই সমস্ত গ্রাহকদেরও রেশন দেওয়া হয় । কিন্তু, তাঁদের আধার কার্ড সংশোধন করার বা নতুন করে আধার কার্ড তৈরি করে নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ।"
তবে এই আঙুলের ছাপের সমস্যা এড়াতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই চোখের মণির স্ক্যানের মাধ্যমে রেশন বরাদ্দ করা হচ্ছে । প্রাথমিকভাবে রাজ্যের পাঁচটি জেলায় আই স্ক্যানের মাধ্যমে রেশন বরাদ্দ করা হচ্ছিল । আগামী 15 এপ্রিল অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের দিন থেকেই রাজ্যজুড়ে এই পদ্ধতি চালু করা হবে বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর ।
আরও পড়ুন: 'অণ্ডাল টু জয়পুর', ইস্পাতনগরী থেকে গোলাপি শহর এবার মাত্র 4 ঘণ্টায় !
রাজ্য খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নতুন প্রযুক্তির বিষয়ে রেশন ডিলারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া চলছে । কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, বাঁকুড়া, হুগলি, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া এবং বীরভূম ইত্যাদি জেলাগুলিতে রেশন ডিলাররা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন । তাঁরা 1 এপ্রিল থেকেই চোখের মণির স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে রেশন দিতেও শুরু করেছেন । রাজ্যজুড়ে পয়লা বৈশাখ থেকে 21 হাজার রেশন ডিলার এইভাবে চোখের মণি স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে রেশন প্রদান করতে পারবেন । খাদ্যমন্ত্রীর রথীন ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের কোনও মানুষকে রেশন থেকে বঞ্চিত করতে চান না । আমরা এই প্রযুক্তির জন্য অতিরিক্ত কোনও টাকা খরচ করিনি ৷ সার্ভিস প্রোভাইডারদের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছি ।"