কলকাতা, 31 মার্চ : বীরভূমের বগটুইকাণ্ডে গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিবিআই । এক সপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও এখনও পর্যন্ত বেশকিছু প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে সিবিআইয়ের কাছে । সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ অর্থাৎ সিআইডির অন্দরমহলে পুলিশের একাংশের প্রশ্ন হল এখনও পর্যন্ত তদন্তে নেমে একবারও বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করল না সিবিআই ? এই নিয়ে খোদ ভবানী ভবনের অন্দরে শুরু হয়েছে গুঞ্জন (Birbhum SP has not been interrogated in Bagtui Massacre case yet) । রাজ্য পুলিশের আইপিএস মহলের একাংশের দাবি, বীরভূমের বগটুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিআইডির যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিম বা সিট ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল তারা মাত্র হাতে কয়েকদিন সময় পেয়েছিল তদন্ত করার জন্য ।
পুলিশের দাবি, যদি এই ঘটনার তদন্ত তাদের হাতেই থাকত তাহলে প্রথমেই তারা বীরভূমের পুলিশ সুপারের সঙ্গে একবার কথা বলার চেষ্টা করতেন তারা। কারণ, বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একাধিক মিসিং লিঙ্ক সামনে আসতে থাকবে । রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দফতরের একাংশের দাবি ,মাত্র এক সপ্তাহ তদন্তভার গ্রহণ করার পরেই হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে এই কাণ্ডের তদন্তভার সিআইডির হাত থেকে চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে । রাজ্য পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিমের বেশ কয়েকজন সদস্যের মতে এই ঘটনায় যখন সিবিআই তদন্ত ভার গ্রহণ করল সেই সময়ে তাদের মনে হয়েছিল তদন্তে নেমে প্রথমেই বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে কথা বলতে চাইবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই । কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি দিন অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেনি সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা । এখানেই রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একাংশের প্রশ্ন তাহলে কী কোনও গোপন আঁতাত তৈরি হয়েছে বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের ?
যদিও এই বিষয়ে ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এডিজি নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, হয়তো সিবিআই হাতে অনেকটা সময় রেখে একাধিক সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড় করে তারপরেই হয়তো বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে । নিজের মত প্রকাশ করতে না চেয়ে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিমের এক সদস্য জানান, তদন্তে নেমে প্রথমে রামপুরহাটের প্রাক্তন এসডিপিও সায়ন আহমেদকে কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হয় । পাশাপাশি রামপুরহাট থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর ইনচার্জ ত্রিদীপ প্রামাণিককে ক্লোজ করা হয় ।
আরও পড়ুন: বগটুই-কাণ্ডের সময় কোন প্রভাবশালীর ফোন পেয়েছিল পুলিশ, জানতে চায় সিবিআই
সিটের লক্ষ্য ছিল বীরভূমের জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে বেশকিছু মিসিং লিঙ্ক খুঁজে বের করা । কিন্তু তার আগেই হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে বীরভূমের বগটুইকাণ্ডের গোটা ঘটনার তদন্তভার চলে যায় সিবিআইয়ের হাতে । পুলিশ মহলের একাংশের দাবি, তাহলে কী কোনও গোপন রহস্যে রাজ্য পুলিশের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিককে সেফ কাস্টডিতে রাখতে চাইছে সিবিআইয়ের বিশেষ দল ? এখন এই প্রশ্নই রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবনের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।