ETV Bharat / state

ML Jubliee School in Kolkata: ক্লাস ঘর থেকে শৌচালয় সবটাই বেদখল, ধুঁকছে 125 বছর পুরোনো এমএল জুবলি স্কুল

বেআইনি দখলদারদের হাতে চলে যাচ্ছে 125 বছর পুরোনো এমএল জুবলি স্কুল ৷ বেহাল দশা চারতলা স্কুল ভবনটির ৷ স্কুলকে রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ৷ অন্যদিকে, বিদ্যালয়টি ওয়াক অফ বোর্ডের সম্পত্তি হলেও তারাও এ বিষয়ে উদাসীন বলে অভিযোগ ৷

ML Jubliee School
এমএল জুবলি স্কুল
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 5, 2023, 7:55 PM IST

ক্লাস ঘর থেকে শৌচালয় সবটাই বেদখল এমএল জুবলি স্কুলের

কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর: কলেজ স্ট্রিট চত্ত্বরে অবস্থিত 125 বছর পুরোনো এমএল জুবলি ইনস্টিটিউশন ৷ স্বাধীনতার আগের আমলে তৈরি এই স্কুলের চারতলা ভবন। তবে তার নীচতলা থেকে ছাদ সব ক্লাস রুমই এখন বেআইনি দখলদারদের কবলে । বর্তমানে স্কুলে রয়েছে 300-এর বেশি ছাত্র । তবে তাদের জন্য বরাদ্দ কেবল এক চিলতে শৌচালয় এবং ভবনের কিছু অংশের ক্লাস রুম ৷ কিন্তু সেগুলিরও বেহাল দশা ৷ বর্ষায় ভেসে যাচ্ছে ক্লাস রুমগুলি । শিক্ষক দিবসে খাস কলকাতার এই সরকারপোষিত স্কুলের এমনই করুণ ছবি প্রশ্ন খাড়া করছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর ।

জানা গিয়েছে, বেশিরভাগ সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলেরাই এই স্কুলে পড়তে আসে। তবে মেধাবী পড়ুয়া হিসাবে তারা এমএল জুবলি ইনস্টিটিউশন থেকে বের হন ৷ তাঁদের মধ্যে অনেক ছাত্রই এখন সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন ৷ বড় কোনও পদে চাকরিও করছেন ৷ সম্প্রতি এই স্কুলের এক ছাত্র আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন । তাঁকে সংবর্ধনা জানোনোর অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ সেসময় স্কুলের শিক্ষকরা তাঁর কাছে আবেদন করেছিলেন ছাত্রদের জন্য শৌচালয়ের । খাস কলকাতার এত বছরের স্কুল আর তাতে শৌচালয় নেই ! খবর জানাজানি হতেই পড়েছিল শোরগোল । তবে সেখানে গিয়ে দেখা গেল বাস্তব ছবি বলছে অন্য কথা । এই স্কুল বাড়িতে শোচালয় না থাকার প্রধান কারণ ভবনটি পুরোই চলে যেতে বসেছে বেআইনি দখলদারদের হাতে ।

এখানে যারা থাকেন তাদের মধ্যে কেউ আদালতের আইনজীবী, কেউ আবার কলকাতা পৌরনিগমের প্রাক্তন কর্মী । কেউ দখল করে অন্যদের ভাড়ার বিনিময় থাকতে দিয়েছে । তাই শৌচালয় থেকে জলের কল সবটা তাদের দখলেই । একইভাবে ছাদে একের পর এক ঘর দখলদারদের কবলে চলে গিয়েছে । স্কুল থেকে একের পর এক মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং কৃতি ছাত্র বের হয়, সেই মেধা তৈরির কারখানা ছোট হতে হতে মাত্র দুটো তলায় এসে ঠেকেছে। শুধু তাই নয়, কেনা রয়েছে প্রাকটিক্যাল ল্যাবের সব নতুন জিনিসপত্র ৷ তবে ঘরের অভাবে করা যায়নি ল্যাবও । এমনকী স্কুল বাড়ি সংস্কারের জন্য সংসদ তহবিলের টাকাও আটকে রয়েছে। কারণ কলকাতা পৌরনিগম জানিয়েছে, সংস্কার কাজ করতে হলে দখলদার মুক্ত করতে হবে স্কুল বাড়ি ।

এই বিষয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার আলি খান বলেন, "আমরা খুব চেষ্টা করেছি ছাত্রদের ক্লাসে ফেরাতে । তবে স্কুলটি দখল হয়ে যাচ্ছে ৷ এখানে দখলদার প্রায় 53 জন ৷ তারা কেউ কোনওভাবে স্কুলের সঙ্গে জড়িত নন । যেহেতু ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি ভবনটি তাই বিষয়টি তাদের জানিয়েছি । দখল মুক্ত করতে তারা নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে । কিন্তু পুলিশ সংক্রিয় নয় । তারা চোখ বুজে আছে । অন্যদিকে, আর ওয়াক অফ বোর্ড কেবল নির্দেশ দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে । তাই এই শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্কুল ক্রমশ ছোট্ট হচ্ছে । পরিকাঠামো ভেঙে পড়ছে । এটা সকলকে এগিয়ে এসে রক্ষা করতে হবে । ওয়াক অফ বোর্ড ও পুলিশ উপযুক্ত ভূমিকা নিলে তবেই দখল মুক্ত হবে স্কুল ৷ ক্লাস ঘরে ফের ফিরবে ছাত্ররা ।"

আরও পড়ুন: অনাদরে নারকেলবেড়িয়ার বাঁশের কেল্লা নড়বড়ে স্কুল, স্বাধীনতা দিবসে স্মরণে তিতুমীর

তবে এই বিষয়ে ওয়াক অফ বোর্ডের সিইও আহেসান আলির বক্তব্য, "আমার এই বিষয় কোনও কিছু বলার এক্তিয়ার নেই । আপনি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করুন ।" অন্যদিকে চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক আবদুল গনিকে এই বিষয় জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন করা হয় ৷ তবে তিনি একবারও ফোন তোলেননি ।

ক্লাস ঘর থেকে শৌচালয় সবটাই বেদখল এমএল জুবলি স্কুলের

কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর: কলেজ স্ট্রিট চত্ত্বরে অবস্থিত 125 বছর পুরোনো এমএল জুবলি ইনস্টিটিউশন ৷ স্বাধীনতার আগের আমলে তৈরি এই স্কুলের চারতলা ভবন। তবে তার নীচতলা থেকে ছাদ সব ক্লাস রুমই এখন বেআইনি দখলদারদের কবলে । বর্তমানে স্কুলে রয়েছে 300-এর বেশি ছাত্র । তবে তাদের জন্য বরাদ্দ কেবল এক চিলতে শৌচালয় এবং ভবনের কিছু অংশের ক্লাস রুম ৷ কিন্তু সেগুলিরও বেহাল দশা ৷ বর্ষায় ভেসে যাচ্ছে ক্লাস রুমগুলি । শিক্ষক দিবসে খাস কলকাতার এই সরকারপোষিত স্কুলের এমনই করুণ ছবি প্রশ্ন খাড়া করছে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার উপর ।

জানা গিয়েছে, বেশিরভাগ সংখ্যালঘু পরিবারের ছেলেরাই এই স্কুলে পড়তে আসে। তবে মেধাবী পড়ুয়া হিসাবে তারা এমএল জুবলি ইনস্টিটিউশন থেকে বের হন ৷ তাঁদের মধ্যে অনেক ছাত্রই এখন সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন ৷ বড় কোনও পদে চাকরিও করছেন ৷ সম্প্রতি এই স্কুলের এক ছাত্র আইএএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন । তাঁকে সংবর্ধনা জানোনোর অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ সেসময় স্কুলের শিক্ষকরা তাঁর কাছে আবেদন করেছিলেন ছাত্রদের জন্য শৌচালয়ের । খাস কলকাতার এত বছরের স্কুল আর তাতে শৌচালয় নেই ! খবর জানাজানি হতেই পড়েছিল শোরগোল । তবে সেখানে গিয়ে দেখা গেল বাস্তব ছবি বলছে অন্য কথা । এই স্কুল বাড়িতে শোচালয় না থাকার প্রধান কারণ ভবনটি পুরোই চলে যেতে বসেছে বেআইনি দখলদারদের হাতে ।

এখানে যারা থাকেন তাদের মধ্যে কেউ আদালতের আইনজীবী, কেউ আবার কলকাতা পৌরনিগমের প্রাক্তন কর্মী । কেউ দখল করে অন্যদের ভাড়ার বিনিময় থাকতে দিয়েছে । তাই শৌচালয় থেকে জলের কল সবটা তাদের দখলেই । একইভাবে ছাদে একের পর এক ঘর দখলদারদের কবলে চলে গিয়েছে । স্কুল থেকে একের পর এক মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং কৃতি ছাত্র বের হয়, সেই মেধা তৈরির কারখানা ছোট হতে হতে মাত্র দুটো তলায় এসে ঠেকেছে। শুধু তাই নয়, কেনা রয়েছে প্রাকটিক্যাল ল্যাবের সব নতুন জিনিসপত্র ৷ তবে ঘরের অভাবে করা যায়নি ল্যাবও । এমনকী স্কুল বাড়ি সংস্কারের জন্য সংসদ তহবিলের টাকাও আটকে রয়েছে। কারণ কলকাতা পৌরনিগম জানিয়েছে, সংস্কার কাজ করতে হলে দখলদার মুক্ত করতে হবে স্কুল বাড়ি ।

এই বিষয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার আলি খান বলেন, "আমরা খুব চেষ্টা করেছি ছাত্রদের ক্লাসে ফেরাতে । তবে স্কুলটি দখল হয়ে যাচ্ছে ৷ এখানে দখলদার প্রায় 53 জন ৷ তারা কেউ কোনওভাবে স্কুলের সঙ্গে জড়িত নন । যেহেতু ওয়াকফ বোর্ডের সম্পত্তি ভবনটি তাই বিষয়টি তাদের জানিয়েছি । দখল মুক্ত করতে তারা নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে । কিন্তু পুলিশ সংক্রিয় নয় । তারা চোখ বুজে আছে । অন্যদিকে, আর ওয়াক অফ বোর্ড কেবল নির্দেশ দিয়ে হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে । তাই এই শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্কুল ক্রমশ ছোট্ট হচ্ছে । পরিকাঠামো ভেঙে পড়ছে । এটা সকলকে এগিয়ে এসে রক্ষা করতে হবে । ওয়াক অফ বোর্ড ও পুলিশ উপযুক্ত ভূমিকা নিলে তবেই দখল মুক্ত হবে স্কুল ৷ ক্লাস ঘরে ফের ফিরবে ছাত্ররা ।"

আরও পড়ুন: অনাদরে নারকেলবেড়িয়ার বাঁশের কেল্লা নড়বড়ে স্কুল, স্বাধীনতা দিবসে স্মরণে তিতুমীর

তবে এই বিষয়ে ওয়াক অফ বোর্ডের সিইও আহেসান আলির বক্তব্য, "আমার এই বিষয় কোনও কিছু বলার এক্তিয়ার নেই । আপনি চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসা করুন ।" অন্যদিকে চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক আবদুল গনিকে এই বিষয় জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন করা হয় ৷ তবে তিনি একবারও ফোন তোলেননি ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.