কলকাতা, 19 মে : লকডাউনের কারণে বন্ধ গণপরিবহন । বন্ধ স্কুল ও কলেজ । চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন পুলকার মালিক ও চালকরা । তাই এবার সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হবে বলে জানাল পুলকার সংগঠনগুলি ।
কোরোনা সংক্রমণ রুখতে চলছে চতুর্থ পর্যায়ের লকডাউন । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে, কনটেনমেন্ট জ়োনের বাইরে ধাপে ধাপে খোলা হবে ছোটো-বড় দোকানপাট ও বাজার । চালু হয়েছে সরকারি বাস ও ট্যাক্সি পরিষেবাও । তবে স্কুলগুলি কবে খুলবে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা নেই । স্কুলের উপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার পুলকার ও তার কর্মীরা । তাই চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা । পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সুদীপ দত্ত বলেন, "পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার পর মার্চ মাসের গোড়া থেকেই স্কুলগুলি বন্ধ হয়ে যায় । তারপর লকডাউনের ঘোষণা করা হয় । তাই বর্তমানে আমাদের গাড়িগুলি চলছে না বলে জ্বালানি খরচও লাগছে না । তাই অভিভাবকদের উপর যাতে বাড়তি চাপ না পড়ে তাই আমরা পুলকারের মাইনের উপর 25 শতাংশ ছাড় দিয়েছিলাম । তবে সেক্ষেত্রে দেখা যায়, বহু অভিভাবক ছাড় তো দূরের কথা মাইনেটাও দেননি ।"
তিনি আরও বলেন, "এই ব্যবসার সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ ও তাঁদের পরিবার যুক্ত । লকডাউনের ফলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে রয়েছে । আজ দীর্ঘ 2 মাস আমাদের আয় একেবারে বন্ধ । লকডাউন উঠে পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না । অন্যদিকে, কর্মীদের মাইনে ও গাড়ির EMI-তে একটা বিরাট অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়ে যাচ্ছে । অফিস বা দোকানপাট খুলে গেলেও বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে স্কুলগুলি আবার কবে খুলবে জানি না । আমরা চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছি ।"
তৃণা ঘোষ দাশগুপ্তের দুই সন্তানই পুলকারে যাতায়াত করে । তিনি বলেন, "আমরা কয়েকজন অভিভাবক পুলকারের মাইনে নিয়মিতভাবে দিলেও এমন বহু অভিভাবক রয়েছেন যাঁরা টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন । তবে মানবিকতার খাতিরে আমার মনে হয়েছে যে আমাদের এই টাকার উপর অনেকগুলো মানুষ নির্ভর করে রয়েছেন, তাই এই দুঃসময়ে আমরা যদি এই টাকাটা দেওয়া বন্ধ করে দিই তাহলে অনেকগুলো মানুষ চূড়ান্ত অসুবিধায় পড়ে যাবেন । আমার দুই সন্তান সারা বছর পুলকারে যাতায়াত করে । পুলকার মালিকরা লকডাউনের সময় বেশ কিছু টাকা ছাড় দিয়ে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন । তখন আমরাই বা কেন দেব না ।"
অন্যদিকে, বেঙ্গল কার পুল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, "এপ্রিল মাসে আমরা অভিভাবকদের ছাড় দেওয়া সত্ত্বেও এপ্রিল ও মে মাসে মোটে 10 থেকে 15 শতাংশ অভিভাবক টাকা দিয়েছে । আমাদের হাতে টাকা না থাকলেও চালক ও অন্যান্য কর্মীদের বেতন দিতে হচ্ছে । তাই সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের সমস্ত অসুবিধার কথা জানিয়ে দ্বারস্থ হব আমরা । স্কুলগুলি কবে খুলবে সেই বিষয়ে এখনই কিছু পরিষ্কার জানা যাচ্ছে না । তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের আর্জি যে জরুরি পরিষেবার জন্য পুলকার সংগঠনগুলি থেকে গাড়ি নেওয়া হলে সে ক্ষেত্রে কিছু সংখ্যক কর্মীদের কিছুটা হলেও আর্থিক সুরাহা হবে ।"