কলকাতা, 15 অক্টোবর: হিন্দু, মুসলিম সবাই মিলেমিশেই বসবাস করেন নাদিয়াল এলাকায় বদরতলায়। এলাকা সেজে উঠেছে আলোর মালায়। একাধিক বারোয়ারি পুজোর মণ্ডপে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা। তবে সেই আলোর রোশনাই পৌঁছায়নি এলাকার বহু প্রান্তিক হিন্দু পরিবারের ঘরে। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় এমন পরিবারের অনেকেই কিনে দিতে পারেনি ছোট ছোট ছেলে মেয়ের নতুন জামা-কাপড়। কেউ আবার মা, স্ত্রী'কে নতুন শাড়ি ইচ্ছে থাকলেও দিতে পারেনি। আর সেই সমস্ত গরিব প্রান্তিক হিন্দু পরিবারের মুখে হাসি ফোটাল বদলতলা শান্তি ও সমন্বয় সমিতি।
আজ, রবিবার এই বদরতলা শান্তি ও সমন্বয় সমিতির পক্ষে প্রায় 175 জন মহিলাকে দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে নতুন কাপড় দেওয়া হল। পাশাপশি প্রায় 100 বাচ্চার নতুন জামা-প্যান্টও দেওয়া হয়। এই গোটা কর্মকাণ্ডে করেছেন মহম্মদ ওয়ারিস, নাসিম হাজি, মিঠু মোল্লা, মনসুর আলিরা। এই মুসলিম পরিবারের সদস্যরা এলাকার হিন্দু প্রতিবেশীদের জন্য দুর্গাপুজোয় নতুন জামা-কাপড় দিতে নিজেদের পকেটের টাকা দিয়েই তহবিল করেছেন। সেই টাকা দিয়েই আজ এই সমস্ত নতুন জিনিস পৌঁছে দেওয়া হল।
মহম্মদ ওয়ারিশ জানান, আমরা দীর্ঘকাল ধরে হিন্দু-মুসলমান সকলেই এক সঙ্গে বসবাস করি। ওঠাবসা করি। তবে বেশ কয়েক বছর আগে খানিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। তারপর থেকে দুই সম্প্রদায় মানুষের সম্পর্ক অটুট রাখতে তৈরি হয় এই বদরতলা শান্তি ও সমন্বয় সমিতি। আমরা যারা মুসলমান তারা গণেশ পুজো, দুর্গাপুজো এই সমস্ত উৎসবে আনন্দে গা ভাসাই। তাই এই পুজোয় এলাকার প্রান্তিক হিন্দু পরিবার যারা আনন্দ করার সামর্থ্য নেই তাঁদের হাতে সামান্য উপহার তুলে দিলাম। সেটা পেয়ে তাদের গালভরা হাসিটাই আমাদের প্রাপ্তি।
শুধু দুর্গাপুজো নয়। একইভাবে ঈদের আগে নতুন কাপড় জামা, ইফতার দেওয়ার মতো নানা কর্মকাণ্ড করে থাকেন এই এলাকার হিন্দুরা।
ফলে এ যেন সম্প্রীতির অনন্য নজির। উৎসবের এক অন্য চিত্র।
আরও পড়ুন: অন্ধকার গলিতে হারিয়ে যাওয়া নারীদের যন্ত্রণা-অভিমান তুলে ধরছে কাশী বোস লেন সর্বজনীন