কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি: বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়ালকে রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Paresh Rawal Relief) ৷ সম্প্রতি গুজরাতের একটি মঞ্চ থেকে বাঙালিদের মাছ খাওয়া নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন অভিনেতা ৷ যার জেরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় পরেশকে ৷ সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই রুজু করা একটি মামলায় পরেশ রাওয়ালকে বৃহস্পতিবার রক্ষাকবচ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ তাঁর নির্দেশ, আপাতত এই ঘটনায় পরেশের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না ৷
উল্লেখ্য, গুজরাতের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনের আগে সে রাজ্যে যান পরেশ রাওয়াল ৷ সেই সময়েই তিনি মন্তব্য করেন, "মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবে মানুষ ৷ কিন্তু পাশের বাড়িতে যদি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু অথবা বাংলাদেশিরা এসে ওঠে, তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের জন্য মাছ ভাজবেন?" পরেশের এই মন্তব্যে ফুঁসে ওঠেন বাঙালিরা ৷ ক্ষোভের আঁচ অনুমান করে তড়িঘড়ি ক্ষমাও চেয়ে নেন অভিনেতা ৷ কিন্তু, তারপরও বিতর্ক থামেনি ৷
আরও পড়ুন: হাজিরার জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে সময় চাইলেন পরেশ রাওয়াল
পরেশের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলার সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম তালতলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ৷ এরপর তালতলা থানা থেকে নোটিশ পাঠানো হয় পরেশ রাওয়ালকে ৷ তাতে বলা হয়, আগামী 4 ফেব্রুয়ারি পরেশকে থানায় হাজিরা দিতে হবে ৷ এর বিরোধিতায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পরেশ ৷ বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি মান্থার এজলাসে ৷ সেখানে পরেশের আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী বলেন, "তিনি (পরেশ) কারও মনে আঘাত দেওয়ার জন্য ওই মন্তব্য করেননি ৷ তাছাড়া, পরবর্তীকালে এর জন্য তিনি টুইটের মাধ্যমে ক্ষমাও চেয়েছেন ৷" পরেশের আইনজীবীর প্রশ্ন ছিল, এরপরও কেন তাঁর মক্কেলকে এভাবে আইনি জটে জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ?
এরপর বিচারপতি মান্থা সেলিমের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, "পরেশ রাওয়াল তো ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন ৷ আপনারা কি আর এই মামলা চালিয়ে নিয়ে যেতে চান ?" এর জবাবে সেলিমের আইনজীবী শমিম আহমেদ আদালতের কাছ থেকে নিজেদের অবস্থান জানানোর জন্য কিছু সময় চেয়ে নেন ৷ তিনি আদালতকে জানান, আগামী সোমবার এই বিষয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানাবেন তাঁরা ৷ এরপরই বিচারপতি নির্দেশ দেন, আপাতত পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না ৷ তবে, ভার্চুয়াল মাধ্যমে পরেশ রাওয়ালের সঙ্গে তদন্তকারী আধিকারিক কথা বলতে পারবেন ৷ এই বিষয়ে আদালত কোনও স্থগিতাদেশ জারি করছে না ৷ আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷