কলকাতা, 16 এপ্রিল: এই মুহূর্তে জেলে রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল । অনুব্রতহীন বীরভূমে এই মুহূর্তে তৃণমূলের লড়াই মাটি ধরে রাখার। পক্ষান্তরে বিরোধীদের লড়াই শাসকের থেকে জমি ছিনিয়ে নেওয়ার। সম্প্রতি বীরভূমে এসে সভা করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । সেখান থেকে কেষ্টর বিরুদ্ধে হুংকার ছেড়েছেন তিনি । রবিবার ছিল তৃণমূলের জবাবি সভা। সেখান থেকে পালটা দিলেন ফিরহাদ হাকিম। আর এই সভাকে কেন্দ্র করে আবার সরগরম রাজ্য-রাজনীতি ।
প্রসঙ্গত বাংলা বছরের শেষ দিনে বীরভূমের সভা থেকে অমিত শাহ গরুপাচার নিয়ে বলতে গিয়ে বীরভূম তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিশানা করেছিলেন ৷ তিনি বলেছিলেন, "গরু পাচারের জন্যই এখানকার এক নেতা জেলে রয়েছে।" রবিবার বীরভূমের জবাবে সভায় সেই গরু পাচার নিয়েই অমিত শাহের দফতরকেই নিশানা করল তৃণমূল কংগ্রেস ।
এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, "গরু পাচারের কেসে আমাদের নেতাকে ধরে রাখা হয়েছে। গরু আসে কোথা থেকে ? গরু আসে উত্তরপ্রদেশ থেকে । উত্তরপ্রদেশে গরুতে দেখভালের দায়িত্ব কার ? ওখানকার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। গরু পাচারের টাকা যদি সত্যি সত্যি কেউ নিয়ে থাকে সেটা উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার। আর বিএসএফকে যারা রক্ষা করে সেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তারা গরু পাচারের টাকা নেয় । তৃণমূল কংগ্রেস নেয় না ।"
প্রসঙ্গত, ফিরহাদ হাকিমের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "যারা পাচার করে তাদের সঙ্গে হয়তো ওনার সম্পর্ক রয়েছে । কারণ বিভিন্ন সময়ে এক মঞ্চে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে তাদের সঙ্গে ফিরহাদ হাকিমকেও দেখা গিয়েছিল । আর সেই কারণেই উনি আমাদের থেকে অনেক বেশি খবর রাখতে পারেন । গরু যখন আসে তখন সেটা পাচার বা অন্য কোনও কারণে যে আসছে সেটা বোঝার কোনও উপায় থাকে না । হাট থেকে সেটা সরাসরি সীমান্তে যায় । এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই যে, এই চোরা চালানোর সঙ্গে বিএসএফের একাংশের যোগাযোগ ছিল । সেজন্যই বিএসএফের কয়েকজন কর্তা এই মুহূর্তে জেলে বন্দি । কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের সহযোগিতা ছাড়া রাজ্যে কোনওভাবেই গরু পাচার সম্ভব ছিল না । অতএব ফিরহাদ হাকিমের এই বক্তব্যের জবাব দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই । তদন্ত চলছে তদন্তেই সবটা প্রকাশ পাবে ।"
এদিকে ফিরহাদের এই বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী । তিনি বলেন, "সিপিএম এবং বিজেপির মধ্যে যা চলছে সবটাই ছায়াযুদ্ধ । এদের দুজনের মধ্যে বোঝাপড়ার জন্যই এত দুর্নীতিগ্রস্ত সরকার । এই জন্যেই একটার পর একটা তদন্ত ধামাচাপা পড়ছে । কাজেই এই ছায়াযুদ্ধের মাধ্যমে নিজেদের ভাসিয়ে রেখে বিজেপি তৃণমূল নিজেরা বেঁচে থাকতে চাইছে । কিন্তু মানুষের কাছে এই চালাকি ধরা পড়ে গিয়েছে । নির্বাচনে মানুষ এদের ঠিক জবাব দেবে ।"
আরও পড়ুন : বোলপুরের টোটোয় অনুব্রতর বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গাত্মক ব্যানার চালক সুকেশের