কলকাতা, 2 মার্চ: অ্যাডিনো ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই আবারও একাধিক শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটল ৷ তথ্য বলছে, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত শুধুমাত্র কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও বিসি রায় হাসপাতালেই মৃত্যু হয়েছে অন্তত পাঁচটি শিশুর ৷ তার মধ্যে অন্তত একটি শিশু আক্রান্ত ছিল অ্য়াডিনো ভাইরাসে (Child Death by Adenovirus) ৷ তার নাম শ্রেয়া পাল ৷ 1 বছর 3 মাস বয়সি শ্রেয়া ছিল হুগলির বাসিন্দা ৷ এছাড়াও ভাঙড়ের বাসিন্দা তিনমাসের কাশ্মীরা খাতুন এবং দমদম বিমানবন্দর লাগোয়া নারায়ণতলার বাসিন্দা 3 বছর 2 মাসের দিশা সর্দারেরও মৃত্যু হয়েছে ৷ এই দু'টি শিশু আক্রান্ত ছিল জ্বর, সর্দি ও কাশিতে ৷ যদিও এতকিছুর পরও রাজ্য প্রশাসন বলছে, দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই ! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে !
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাঙড়ের বাসিন্দা কাশ্মীরার শ্বাসকষ্টেরও সমস্যা ছিল ৷ তাকে বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল ৷ একই হাসপাতালে ভর্তি ছিল দিশা ৷ দু'টি শিশুরই মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবার দুপুরে ৷ এদিন এই হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা ৷ সূত্রের খবর, একসঙ্গে এত শিশু নিউমোনিয়া এবং জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মীরা ৷ জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালগুলির শিশু বিভাগে এবং শিশু হাসপাতালগুলিতে শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ যদিও ইতিমধ্য়েই অধিকাংশ হাসপাতালে একটি শয্যায় একাধিক শিশুকে ভর্তি করতে বাধ্য় হচ্ছে কর্তৃপক্ষ ৷ আর এই পরিস্থিতিতে বাড়ছে আতঙ্ক ৷
এদিকে, শ্রেয়া পাল নামে হুগলির যে শিশুটি এদিন প্রাণ হারায়, সে গত 16 ফেব্রুয়ারি থেকে জ্বরে ভুগছিল ৷ প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে শ্রেয়াকে চুঁচুড়ার ইমামবড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ কিন্তু, অবস্থার অবনতি হওয়ায় শ্রেয়াকে কলকাতা মেডিক্য়াল কলেজে রেফার করে দেওয়া হয় ৷ আইসিইউতে ভর্তি করা হয় শ্রেয়াকে ৷ স্বাস্থ্যপরীক্ষায় জানা যায়, তার শরীরে বাসা বেঁধেছে ভয়ঙ্কর অ্য়াডিনো ভাইরাস ৷ অবশেষে বৃহস্পতিবার ভোররাতে (2 মার্চ রাত 2টো 30 মিনিট নাগাদ) মৃত্যু হয় শ্রেয়ার ৷
আরও পড়ুন: পোলবায় অ্যাডিনো ভাইরাসের বলি 9 মাসের সুস্মিতা ? হাসপাতালের দাবি, নিউমোনিয়া
এই ঘটনায় হুগলি জেলায় আতঙ্ক বাড়ছে ৷ কারণ, দিনকয়েক আগেই চন্দননগরের বাসিন্দা 9 মাসের একটি শিশু এবং দাদপুরের বাসিন্দা 7 মাসের একটি শিশু গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার মেজিক্য়াল কলেজে ভরতি হয় ৷ কিন্তু তাদেরও বাঁচানো যায়নি ৷ প্রসঙ্গত, অ্য়াডিনো আতঙ্ক শুরু হওয়ার পর থেকে হুগলি জেলায় বুধবার পর্যন্ত মোট 369টি শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৷ তাদের মধ্যে 81টি শিশুর এখনও জ্বর কমেনি ৷ ইমামবড়া জেলা হাসপাতালে 43টি শয্য়ায় ভরতি রয়েছে 95টি শিশু ! এর বাইরে 12টি শয্য়ার একটি বিশেষ ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা রয়েছে ৷ সিসিইউতেও দু'টি শয্য়া শিশুদের জন্য সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে ৷