ETV Bharat / state

Kolkata Rickshaw: বাম জমানায় বাতিল হাতে টানা রিকশা, 17 বছর পরেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত - কলকাতায় হাতে টানা রিকশা বন্ধ

রাজ্যে বাম শাসকদল থাকার সময়ে হাতে টানা রিকশা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ তার বদলে পুনর্বাসনের কথা দেওয়া হয়েছিল ৷ আজও সে সব নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি কেউ (Kolkata Rickshaw) ৷

Kolkata Rickshaw conveyance
কলকাতায় এখনও ভরসা হাতে টানা রিকশা
author img

By

Published : Jul 21, 2022, 2:03 PM IST

কলকাতা, 21 জুলাই: 'মানুষ মানুষের জন্য', ভূপেন হাজারিকার এই গান সকলেরই জানা । কিন্তু রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের 'মানুষ মানুষকে কেন টানবে ?' এই প্রশ্ন হয়তো অনেকেই ভুলে গিয়েছেন । 2005 সালে এই প্রশ্ন তুলে কলকাতায় হাতে টানা রিকশা বন্ধের কথা ঘোষণা করেন তিনি । পাশাপাশি সে সময় তৎকালীন বাম মুখ্যমন্ত্রী হাতে টানা রিকশাচালকদের পুনর্বাসনের কথাও জানিয়েছিলেন । 17 বছর কেটে গিয়েছে ৷ বাম জমানার পতন হয়েছে ৷ এখন তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার মসনদে ৷

এদিকে সংখ্যার দিক থেকে কার্যত অর্ধেক হয়ে গিয়েছে কলকাতার হাতে টানা রিকশা । রিকশাচালকদের একাংশের পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আসতে নারাজ । সব মিলিয়ে কলকাতার একশো বছরের পুরনো ঐতিহ্যের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে (Old tradition of Kolkata Rickshaw existence is in uncertainty) ।

উনিশ শতকের শুরুতে কলকাতায় হাতে টানা রিকশার প্রচলন হয় । প্রথম দিকটায় উচ্চবিত্তরাই যাতায়ন করতেন রিকশায় ৷ পরে শহরের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের কাছে ভরসার যান হয়ে ওঠে রিকশা। বাজারে যাওয়া, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো, কিংবা রাত দুপুরে কারও শরীর খারাপ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই রিকশার শরণ নিত বাঙালি ।

কলকাতা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে হাতে টানা রিকশা ? ভবিষ্যৎ সংকটে

তার অস্তিত্বই আজ সংকটে । সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, কেউ এ নিয়ে মাথা ঘামায় না । এই পেশার সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশই ভিন রাজ্যের । বিশেষত বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ।

আরও পড়ুন: বন্ধ রুটগুলিতে অবিলম্বে ট্রাম চালুর দাবিতে মিছিল

কলকাতায় যবে থেকে সাইকেল, বাস, অটো, বাইকের দাপট বাড়তে শুরু করল, তখন থেকে হাতে টানা রিকশার ভবিষ্যতও অনিশ্চিততার দিকে এগিয়ে গেল । শেষে 2005-06 নাগাদ এই রিকশা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । আর এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষের পুনর্বাসন ঘোষণা করা হয় । তারপর 17 বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করা হয়নি ।

তবে, অল বেঙ্গল রিকশা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোক্তার আলির বক্তব্য, "2014-15 সাল নাগাদ হাতে টানা রিকশা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয় । পরিবহণ দফতর, কলকাতা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একটা ড্রাফট রেজোলিউশন জমা দেওয়া হয় । যেখানে এই রিকশার বদলে দু-সিটের চার চাকার টোটো দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । কলকাতাকে চারটি জোনে ভাগ করে চারটি রঙের এই টোটো প্রস্তুতির কথা ভাবা হয়েছে । অটো রুট যেখানে শেষ হবে, সেখান থেকেই এই টোটো চালানো হবে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । যাতে অটো-টোটোর মধ্যে কোনও সংঘাত না ঘটে ।"

এই রেগুলেশন জমার পরও অনেকগুলো বছর কেটে গিয়েছে । এ প্রসঙ্গে মোক্তার বলেন, "আমরা আশাবাদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টা খুব শীঘ্রই গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন । তাছাড়া, এখন রিকশা চললেও সংখ্যাটা কমে গিয়েছে । বিশেষ অসুবিধেও নেই । সরকার নিশ্চই ব্যবস্থা নেবেন ।"

তাহলে কি পুরোপুরি শহর কলকাতার হাতে টানা রিকশা উঠে যাচ্ছে ? মোক্তারের দাবি, কলকাতার ঐতিহ্য বজায় রাখতে ভিক্টোরিয়া সামনে সরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি রিকশা চালানো হবে । কলকাতার এই হেরিটেজকে বাঁচিয়ে রাখতে আলাদাভাবে সল্টলেকে, অন্য মিউজিয়ামগুলিতে সুন্দরভাবে রিকশা সাজিয়ে রাখা থাকবে ।

আরও পড়ুন: শহিদ দিবসের স্মৃতি নিয়ে বর্ণাঢ্য ট্রাম ঘুরবে শহরের পথে পথে

কলকাতা, 21 জুলাই: 'মানুষ মানুষের জন্য', ভূপেন হাজারিকার এই গান সকলেরই জানা । কিন্তু রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের 'মানুষ মানুষকে কেন টানবে ?' এই প্রশ্ন হয়তো অনেকেই ভুলে গিয়েছেন । 2005 সালে এই প্রশ্ন তুলে কলকাতায় হাতে টানা রিকশা বন্ধের কথা ঘোষণা করেন তিনি । পাশাপাশি সে সময় তৎকালীন বাম মুখ্যমন্ত্রী হাতে টানা রিকশাচালকদের পুনর্বাসনের কথাও জানিয়েছিলেন । 17 বছর কেটে গিয়েছে ৷ বাম জমানার পতন হয়েছে ৷ এখন তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার মসনদে ৷

এদিকে সংখ্যার দিক থেকে কার্যত অর্ধেক হয়ে গিয়েছে কলকাতার হাতে টানা রিকশা । রিকশাচালকদের একাংশের পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আসতে নারাজ । সব মিলিয়ে কলকাতার একশো বছরের পুরনো ঐতিহ্যের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে (Old tradition of Kolkata Rickshaw existence is in uncertainty) ।

উনিশ শতকের শুরুতে কলকাতায় হাতে টানা রিকশার প্রচলন হয় । প্রথম দিকটায় উচ্চবিত্তরাই যাতায়ন করতেন রিকশায় ৷ পরে শহরের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের কাছে ভরসার যান হয়ে ওঠে রিকশা। বাজারে যাওয়া, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো, কিংবা রাত দুপুরে কারও শরীর খারাপ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই রিকশার শরণ নিত বাঙালি ।

কলকাতা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে হাতে টানা রিকশা ? ভবিষ্যৎ সংকটে

তার অস্তিত্বই আজ সংকটে । সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, কেউ এ নিয়ে মাথা ঘামায় না । এই পেশার সঙ্গে যুক্ত অধিকাংশই ভিন রাজ্যের । বিশেষত বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ।

আরও পড়ুন: বন্ধ রুটগুলিতে অবিলম্বে ট্রাম চালুর দাবিতে মিছিল

কলকাতায় যবে থেকে সাইকেল, বাস, অটো, বাইকের দাপট বাড়তে শুরু করল, তখন থেকে হাতে টানা রিকশার ভবিষ্যতও অনিশ্চিততার দিকে এগিয়ে গেল । শেষে 2005-06 নাগাদ এই রিকশা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । আর এই পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষের পুনর্বাসন ঘোষণা করা হয় । তারপর 17 বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করা হয়নি ।

তবে, অল বেঙ্গল রিকশা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোক্তার আলির বক্তব্য, "2014-15 সাল নাগাদ হাতে টানা রিকশা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা হয় । পরিবহণ দফতর, কলকাতা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে একটা ড্রাফট রেজোলিউশন জমা দেওয়া হয় । যেখানে এই রিকশার বদলে দু-সিটের চার চাকার টোটো দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । কলকাতাকে চারটি জোনে ভাগ করে চারটি রঙের এই টোটো প্রস্তুতির কথা ভাবা হয়েছে । অটো রুট যেখানে শেষ হবে, সেখান থেকেই এই টোটো চালানো হবে, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । যাতে অটো-টোটোর মধ্যে কোনও সংঘাত না ঘটে ।"

এই রেগুলেশন জমার পরও অনেকগুলো বছর কেটে গিয়েছে । এ প্রসঙ্গে মোক্তার বলেন, "আমরা আশাবাদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টা খুব শীঘ্রই গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন । তাছাড়া, এখন রিকশা চললেও সংখ্যাটা কমে গিয়েছে । বিশেষ অসুবিধেও নেই । সরকার নিশ্চই ব্যবস্থা নেবেন ।"

তাহলে কি পুরোপুরি শহর কলকাতার হাতে টানা রিকশা উঠে যাচ্ছে ? মোক্তারের দাবি, কলকাতার ঐতিহ্য বজায় রাখতে ভিক্টোরিয়া সামনে সরকারি উদ্যোগে বেশ কয়েকটি রিকশা চালানো হবে । কলকাতার এই হেরিটেজকে বাঁচিয়ে রাখতে আলাদাভাবে সল্টলেকে, অন্য মিউজিয়ামগুলিতে সুন্দরভাবে রিকশা সাজিয়ে রাখা থাকবে ।

আরও পড়ুন: শহিদ দিবসের স্মৃতি নিয়ে বর্ণাঢ্য ট্রাম ঘুরবে শহরের পথে পথে

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.