কলকাতা, 14 অগাস্ট : সরিয়ে দেওয়া হল টালিগঞ্জ থানার OC অনুপ ঘোষকে ৷ তাঁকে গোয়েন্দা বিভাগে বদলি করা হয়েছে ৷ দায়িত্বে এলেন সরোজ প্রহরাজ ৷
এর আগে, টালিগঞ্জ থানায় পুলিশকে নিগ্রহের ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় চারজনকে । খোঁজ চলছে আরও কয়েকজনের । নানা জায়গায় চালানো হয় চিরুনি তল্লাশি । পুলিশের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশের পর মাঠে নেমেছে গুণ্ডা-দমন শাখাও । যার ফল মিলেছে হাতেনাতে । লালবাজার সূত্রে আগেই খবর মিলেছিল, ঘটনায় অনুপ ঘোষের বিরুদ্ধে রিপোর্ট জমা পড়েছে । অভিযোগ, তিনি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) মানেননি ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেপ্তার করা হয়েছে পুতুল হালদার এবং পূর্ণিমা দাসকে । সেই সঙ্গে আরও দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে । যদিও তাদের নাম এখনও সামনে আনেনি পুলিশ । ঘটনার CCTV ফুটেজে পরিষ্কার দেখা গেছে পুতুল হালদারকে । চেতলার মাটালিবাগানে প্রথমবার অভিযান চালিয়ে পুতুলের প্রতাপ টের পেয়েছিল পুলিশ । ওই বস্তিতে পুতুল খুবই প্রভাবশালী । রাজনৈতিক নেতাদের হাত রয়েছে তার মাথার উপর । এর আগেও নাকি গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে । সেটাও ঝামেলার কারণেই । আর এই পুতুল দাসের ভাইপো রণজয় হালদার, যাকে মত্ত অবস্থায় বাইক চালানোর অভিযোগে 11 অগাস্ট রাতে আটক করেছিল টালিগঞ্জ থানার পুলিশ ।
রণজয়কে আটকের খবর পেয়ে থানায় আসে তার পরিবারের লোকজন এবং প্রতিবেশীরা । পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে তাদের । দু'পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয় । এক পুলিশকর্মীর উর্দি ধরে টানা হয় । রাত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত থানার সামনে চলে ঝামেলা । পরে আটক যুবককে ছেড়ে দেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয় । যুবকের পরিবারের অভিযোগ ছিল, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা নেশা করে ছিলেন । সেই কারণেই রণজয়কে মারধর করা হয় । প্রতিবাদ জানাতে গেলে মহিলাদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ । এ নিয়ে তারা টালিগঞ্জ থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে । অন্যদিকে এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ ।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে DC সাউথের রিপোর্ট চান পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা । পাশাপাশি যুগ্ম-কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মাকে ঘটনা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন তিনি । মুরলীধর শর্মা নিজে টালিগঞ্জ থানায় যান । উপস্থিত সমস্ত পুলিশকর্মীদের কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন । খতিয়ে দেখেন CCTV ফুটেজ । সেই ফুটেজ থেকেই আকাশ এবং গুল্লু নামে দুই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ । গতকাল সন্ধ্যায় চেতলা রোডে ওই দু'জনের বাড়ির সামনে হানা দেয় পুলিশ । সেখানেও বাধার মুখে পড়তে হয় । পুতুল বাহিনী রীতিমতো ঘিরে ফেলে পুলিশকে । তবে শেষরক্ষা হয়নি । পুতুল এবং তার শাগরেদ পূর্ণিমা ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে । বাকি দু'জন আকাশ এবং গুল্লু কি না, তা অবশ্য এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি । তবে লালবাজার জানাচ্ছে, ওই দিন যারা ঝামেলা পাকিয়ে ছিল তাদের কাউকে ছাড়া হবে না ।