কলকাতা, 10 জুন : কোরোনা এক্সপ্রেস মন্তব্য নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিত শাহর মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর জারি । এরই মধ্যে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, তিনি কোনওদিন কোরোনা এক্সপ্রেস বলেননি ।
গতকাল ভার্চুয়াল সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোরোনা এক্সপ্রেস ইশুতে কটাক্ষ করেছিলেন অমিত শাহ । বলেছিলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই কোরোনা এক্সপ্রেসের মন্তব্য়ই আপনার ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করবে । আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে তার জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী । বলেন, "আমি কোনওদিনই কোরোনা এক্সপ্রেস বলিনি । একথা মানুষ বলেছে ।"
তাঁর আরও সংযোজন, "সাধারণ মানুষ কোরোনা এক্সপ্রেস বলেছে । আর আমি সেই কথাটাই বলার চেষ্টা করেছিলাম । প্রয়োজনে আপনারা আমার সেদিনের বিবৃতি দেখে নিতে পারেন ।"
এরপর লকডাউনের মাঝেই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালু হয় । ভিনরাজ্য থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরতে শুরু করেন শ্রমিকরা । এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি রেলমন্ত্রকের ভূমিকাকে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 29 মে নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন, "শ্রমিকদের বঞ্চনা করা হচ্ছে । তাঁদের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না রেলমন্ত্রক । ট্রেনের মধ্যে গাদাগাদি করে বসিয়ে রাজ্যে ফেরানো হচ্ছে । রাজ্যে যত পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন, তাঁদের মধ্যে 25 শতাংশ কোরোনা আক্রান্ত ৷ প্রথম দু’-তিন মাস আমরা কোরোনার সংক্রমণ আটকাতে পেরেছিলাম ৷ কিন্তু, ভিনরাজ্য থেকে শ্রমিকরা আসতে শুরু করায় কোরোনার সংক্রমণ বাড়ছে ৷" অভিযোগ, সেদিনের বৈঠকেই মমতা বলেন, এই ট্রেনগুলি শ্রমিক স্পেশাল নয়, কোরোনা স্পেশাল ।
মমতার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকালের ভার্চুয়াল সভায় সরব হন অমিত শাহ । তিনি বলেন, "আপনি পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনকে কোরোনা স্পেশাল এক্সপ্রেস বলে কটাক্ষ করেছেন । আপনার এই মন্তব্যই রাজ্যের ক্ষমতা থেকে আপনার যাওয়ার পথ প্রশস্ত করবে। আপনি পরিয়ায়ী শ্রমিকদের ক্ষততে নুন ছড়িয়েছেন। তারা কোনওদিনও একথা ভুলবে না।" আজ তারই পালটা জবাব দেন মমতা । তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তা স্পষ্ট করে দেন । জানিয়ে দেন, এটা তাঁর কথা নয় । সাধারণ মানুষ কোরোনা এক্সপ্রেস বলেছেন ।
পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফেরার ইশুতে আজকের বৈঠকে মমতা আরও বলেন, " রেল মন্ত্রকের তরফে শ্রমিকদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়নি । সামাজিক দূরত্বের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি । যদি শ্রমিক স্পেশাল চালাতে হত, তাহলে লকডাউন ঘোষণার সাতদিন আগেই এই ট্রেনগুলি চালু করা যেত এবং শ্রমিকদের নিজেদের বাড়ি ফেরানো যেত । ইচ্ছে করে গাদা গাদা লোক পাঠানো হচ্ছে ৷ 1200 লোক আসার কথা যে ট্রেনে, সেখানে 2500 লোক পাঠানো হচ্ছে । এতে কোরোনা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে । তাই মানুষ কোরোনা এক্সপ্রেস বলছে ।"
মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত 255টি ট্রেনে 11 লাখ পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন ৷ শ্রমিকদের নিয়ে আরও 22টি ট্রেন আসবে । তাতে 30 হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরবেন ৷