কলকাতা, 12 জুন : আমফানে তছনছ কলকাতার একাধিক জায়গা । ভেঙে পড়েছে কয়েক হাজার গাছ । ভেঙেছে ল্যাম্প পোস্ট, ট্র্যাফিক সিগন্যাল পোস্ট ও বাতিস্তম্ভ । যা পুনরায় বসানোর কাজ এখনও পর্যন্ত শেষ হয়নি । রাজ্যে সেনা নামায় গাছ কেটে রাস্তা সচল করা হলেও কাটা অংশগুলি অনেক জায়গায়ই এখনও পড়ে রয়েছে । যার ফলে সেগুলি পচে বা সেইসব জায়গায় জল জমে অন্য রোগও হতে পারে । এছাড়াও আজ থেকে বর্ষা ঢুকছে বাংলায় ফলে রাস্তায় জল জমলে ইলেক্ট্রিকের তার পড়ে থাকায় বা গাছের কাটা অংশ রাস্তায় পড়ে থাকায় সমস্যা হতে পারে । যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাই দ্রুত কাজ করে কলকাতাকে স্বাভাবিক করতে হবে বলে নির্দেশ দিলেন কলকাতা পৌরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম । গতকাল কলকাতা পৌরনিগমের সদর দপ্তর থেকে ভিজিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সমস্ত পৌর এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি । দ্রুত কাজ না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান । যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার একটি তালিকা করে দ্রুত পৌরনিগমের আধিকারিকের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন । এবং রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু করার কথাও বলেন তিনি ।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে শহরের যে বাতিস্তম্ভগুলি ভেঙে পড়েছে তা দ্রুত মেরামত করতে হবে । এবিষয়ে গতকাল ফিরহাদ হাকিম এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রদের বলেন, ভাঙা বাতিস্তম্ভ অর্থাৎ ল্যাম্প পোস্টগুলিকে দ্রুত বদলে ফেলতে হবে । যেগুলি মেরামত করা যাবে সেগুলিকে মেরামত করতে হবে । যেগুলি বদলাতে হবে সেগুলিকে দ্রুত বদলে ফেলতে হবে । এই কাজে ইঞ্জিনিয়রদের সাহায্য করবে কলকাতা পৌরনিগমের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগও । কলকাতার কোনও রাস্তা যাতে অন্ধকার না থাকে, সমস্ত রাস্তায় যাতে পর্যাপ্ত আলো থাকে সেই বিষয়েও তিনি ব্যবস্থা নিতে বলেন । পাশাপাশি কলকাতার রাস্তায় যেসব রেলিং ভেঙে পড়ে রয়েছে । কাটা গাছ । যা যতদিন যাচ্ছে আবর্জনায় পরিণত হচ্ছে । এমন সব পরিষ্কার করে ফেলতে হবে বলে নির্দেশ দেন প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান ।
আমফান পরবর্তী পর্যায়ে উদ্ধারকাজ, নিকাশি ব্যবস্থা ও পরিষ্কারের বিষয়ে কলকাতা পৌরনিগম আগাম ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছিল সাধারণ মানুষ । আমফানের পরও কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় পরিষেবা স্বাভাবিক করতে সময় লেগেছিল প্রায় সাত দিন । তারপরও এখনও সবকিছু পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন কলকাতার একাধিক এলাকার বাসিন্দারা । কলকাতা পৌরনিগমের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও । তারপরও চিত্রটা সেভাবে পালটায়নি । এবার রাজ্যে ঢুকছে বর্ষা । তার আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অন্য সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন বিশেষজ্ঞরা । এরপরই গতকাল পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভিডিয়ো কনফারেন্সে ইঞ্জিনিয়র ও পৌরকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি ।
গাছপালা পরিষ্কারের পাশাপাশি পার্কগুলিতেও পুনরায় সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি । আগামী সাত দিনের পর ফের পার্কগুলি খুলে দেওয়া হবে বলেও জানান ফিরহাদ হাকিম । সমস্ত কাজ ও রিপোর্ট সময়মতো না জমা দিলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি ।