কলকাতা, 12 ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি । যার জেরে এবার পথে নামলেন পৌর স্বাস্থ্যকর্মীরা । চাকরি এবং বেতন সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি পূরণের লক্ষ্যে পৌর স্বাস্থ্যকর্মীরা আন্দোলন করছেন । শুক্রবার তারা মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে স্মারকলিপি প্রদান করার পাশাপাশি মিছিলও করেন । দাবি পূরণ না হলে "দুয়ারে সরকার" প্রকল্প বয়কটের পাশাপাশি বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন তারা ।
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ পৌর স্বাস্থ্যকর্মী ইউনিয়নের তরফে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা চরম বঞ্চনার শিকার হয়ে চলেছেন । মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন । তবে ওই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি । এই সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী সুচেতা কুণ্ডু বলেন, "পৌর স্বাস্থ্যকর্মীদের অবসরের বয়সসীমা 65 বছর করা হবে । 2018 সালের 21 অগাস্ট কালীঘাটের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ।" ইতিমধ্যেই গ্রামীণ আশা ও আইসিডিএস কর্মীদের অবসরের বয়সসীমা 65 বছর করা হয়েছে । অবসরকালীন ভাতা, গ্রাচুয়িটির তিন লাখ টাকা ঘোষিত হয়েছে । এক হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি হয়েছে । গত অক্টোবর মাস থেকে সেই নির্দেশনামা চালু হয়ে গিয়েছে । অথচ পৌর স্বাস্থ্যকর্মীরা কোরোনার সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অক্লান্তভাবে কাজ করে চলেছেন । বর্তমানে চলছে "দুয়ারে সরকার" প্রকল্পের কাজ । তাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকর্মীরা কোরোনায় আক্রান্ত হলেও সরকার ঘোষিত অনুদান এখনও পর্যন্ত পাননি । সামনেই বিধানসভা নির্বাচন । এবং পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার বিষয়টি হাইকোর্টে বিচারাধীন আছে । নির্বাচনের সময় এই স্বাস্থ্যকর্মীদেরকেই প্রয়োজন হয় সরকারের ।
পশ্চিমবঙ্গ পৌর স্বাস্থ্যকর্মী ইউনিয়নের তরফে পৌর স্বাস্থ্যকর্মীদের স্থায়ী কর্মীর স্বীকৃতি, অবসরের বয়সসীমা 65 বছর, বেতন বৃদ্ধি, অবসরকালীন ভাতা প্রদান এবং ন্যূনতম তিন লাখ টাকা গ্রাচুয়িটি প্রদানের দাবিতে শুক্রবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে স্মারকলিপি দিয়ে নির্দেশনামা জারির দাবি জানানোর জন্য মিছিল শুরু করেন তারা । যদিও তাদের আটকে দেয় পুলিশ । ফলে সেখানেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনরত এই পৌর স্বাস্থ্যকর্মীরা । স্লোগান ওঠে, "হয় দাবি মানো, না হয় স্বেচ্ছামৃত্যু করতে দাও ।"
পশ্চিমবঙ্গ পৌর স্বাস্থ্যকর্মী ইউনিয়নের তরফে জানানো হয়েছে, স্মারকলিপি মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছে দেয় পুলিশ । আগামী 20 ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই সংগঠনের প্রতিনিধিদের সাক্ষাতের কথা বলা হয় । এরপর তারা অবস্থান থেকে সরে আসেন ।